রাত গভীর হলে-
হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা, বেলীরা যেমন
অন্ধকারের বুক চিরে সুবাস ছড়ায় গোপনে
তেমনি শহরের দেয়ালগুলো কথা বলে।
নিস্তব্ধতার পাথরে খোদাই করা
একেকটি গোপন শপথের মতো।

আলো-আঁধারের ফাঁকে
ওরা ফিসফিসিয়ে বলে যায়-
অধরা স্বাধীনতার গল্প,
যা ভোরের প্রথম রোদের মতো
দেয়ালের গায়ে লেগে থাকে,
ইতিহাসের বিমুগ্ধ প্রান্তরে।

কেউ একজন এসে-
কংক্রিটের শুষ্ক বুকে ছড়িয়ে দেয় বিক্ষোভের শব্দ।
লাল কালির প্রতিটি আঁচড়ে
ছিঁড়ে যায় কিছু অদৃশ্য শিকল।
কে এঁকে যায় এই প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি ?
আঙুলে লেগে থাকা কালি কি শুধুই রং?
নাকি তা এক বিপ্লবী হৃদয়ের ছিটকে পড়া রক্তবিন্দু?

বাতাসে এখনো গন্ধ লেগে আছে-
সেই অক্ষরগুলোর,
যা চুনকামের নিচে সদ্য চাপা পড়েছে।
রাতের ছায়ায় লেখাগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে,
তারা মিশে যায় ফাঁকা রাস্তায়,
ক্লান্ত পথচারীর বিষন্ন চোখে,
টং দোকানের নিভে আসা বিবর্ণ আলোয়,
দেয়ালের প্রতিটি ভাঁজে।
যেখানে দমবন্ধ শ্লোগান অপেক্ষায় থাকে
পুনর্জন্মের জন্য।

তুমি কি শুনতে পাও?
এই নৈঃশব্দ্যের শব্দ আছে,
বিপ্লবের আঙুল ছুঁয়ে লেখা ভাষা আছে।
যা মুছে গেলেও,
ঢেউয়ের মত ফিরে আসে।
এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে,
এক সংগ্রাম থেকে আরেক বিদ্রোহে।