বোয়াল ইলিশ দেহিনি চোহে
মরি গেছে সব নদী
খাল বিল ও শুকি গ্যাছে
চায়া চায়া শুধু কাঁদি।

ছোট বেলায় কলার ভেলায়
এপাড়া ওপাড়া ঘুরে
ডিঙি নাওয়ে বৈটি টান্যি
গিছি অনেক দুরে

ভাদুর মাসে বর্ষা আসলে
ভরি যায় নদী খাল
ভরা জলে নাও ভাসাইয়া
উড়াইছি ছালার পাল

বন্ধু স্বজন সাথে নিয়ে
কাটতে গেছি ঘাস
বাটিল হলে বরশি নিয়ে
ধরছি সবাই মাছ।

দ্যুয়ার চারো ট্যুবি বাসন
পাতছি স্রোতের কোনে
সাঁতার দিয়ে পাড় হইছি
ধরতি ইঁচে মাছ বনে।

বাঁশের বানায় ঘিরি দিছি
আমনের খ্যাত জুড়ে
বোয়াল গজার শোল ধরতি
ছুটে গিছি ম্যালা দুরে।

জুতের আটি হাতে নিয়ি
পানির বিদিন থাহি খাড়া
ঝপাৎ করে কোপ ম্যারি দেই
শলাকাতে দিলে নাড়া।

সারা রাত্রি মাছ ধরি সবাই
বাড়িত আসি ছুটে
খুশিতে সবাই মন ভরি যায়
ভাগ করে মাছ কুট্যি

মাছের নেশায় সবাই মজে
কেউ যায়না বাদ
সাংলি বাউলি ছুবনি রাগ্যিনে
মাছ ধরে সারা রাত

ভাদ্র গেলে শুকায় পানি
জল কাঁদা করে খেলা
খ্যাতা মইঝাল কচালের বারি
বাদাই ব্যার টানে ঠেলা।

কোলের মাথায় খরা পাতি
রাত দিন থাহে বসি
কিনারে কিনারে ঘালি ব্যর দিয়ে
মাজায় বাদি টানি রশি।

টেংরা পুটি খলশে চাঁদা
বাইন আর তিনকাটা
ছোট মাছটা বাড়িতে আনলে
পিঠে পরতো ঝাটা।

শোল টাহি আর ভোলের ঝুরি
আহা কিযে স্বাদ
সহাল রাতে খাতি বসলি
শ্যাষ হয়ে যাতি ভাত।

পুবের দিকে ফর্সা হলে
বাবা ডাকতো বাজান
ইচে ধরতে যাবি নাকি
মজিদে দিলে আযান।

বাবা ছ্যাওয়াল মাছ ধরিয়ে
পাতিল খানা ভরে
হাসি মুখে দুই বাপ বেটা
ফিরে আসতাম ঘরে।

গাঙ্গের পানি গাঙ্গেতে গেছে
শুকিয়ে গেছে খাল
কুবলা ছেচে মাছের আশায়
কেউ ফেলে খ্যাও ঝাল।

পলো অ্যাকড়ি ট্যাটা নিয়ে
বাউত নামছে খালে
দোঁর জাল নিয়ে দল বাঁধি সব
ঝাপিয়ে পরে বিলে।

কুড়া ব্যালি পিয়িলি গ্যারি
বাঘাড় রায়েক চ্যালা
বাশপাবতা আর বাচা কাচকি
হারা গেছে খসশালা।

টাটকিনি আর কাক-লির ঝোল
জিবিতে আনে পানি
ফলি চিতিল নুনাস করে
খাওয়াতো আমার নানী।

সময়ের সাথে বুড়ো হইচি
নদী হয়ছে আজ চর
রাক্ষসী পদ্মা কাড়ি নিছে
ভিটা মাটি আমার ঘর।

যদি কোনদিন ফিরে পাতাম
আমার ঐ গিরামের মাটি
সব কিছু তহন ফেলা থুয়ি
ওহানে করতাম ঘাটি।

সব চাওয়ার বড় চাওয়া
ফিরে দাও সে নদী
পদ্মা মেঘনা যমুনার কাঁদে
সাথে আমরাও কাঁদি।