ঋতুর পরিক্রমায় আবারও এসেছে পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। নব প্রত্যেয় মোড়ক খুলবে নবদিনের। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত বাঙালি জাতি স্বাগত জানাবে এই বৈশাখকে। চৈতালি হাওয়ার দিন ফুরানোর সাথে সাথেই বৈশাখের আগমনী বার্তা ধ্বনিত হবে প্রকৃতিতে। শুধু প্রকৃতি নয়, মানব মনকেও এক অচিন সুরের নাগর দোলায় দুলিয়ে দিবে। চওড়া লাল পাড়ের সাদা শাড়ি আর শুভ্র পান্জাবীতে জনারণ্যে পরিনত হবে প্রতিটি বৈশাখী মেলা। এই উৎসবের ছোঁয়া লাগে নগর মহানগর থেকে নিভূত পল্লীতেও। সবখানে যেন সাজ সাজ রব। নতুন বছরের প্রথম সূয্যলোকে বাঙালিপনায় জমবে ইলিশ আর পান্তার বেচাকেনা। দিনভর চলবে এই বৈশাখী মেলা।
খাওয়া-দাওয়া আর সাজ সজ্জায় এদিনে আমরা যেন ঠিক বাঙালি সেজে যাই! ছেলেরা পাজামা-পান্জাবী আর মেয়েরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে বিভিন্ন রকমের তাজা ফুলে সুসজ্জিত হয়ে বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে বাঙালি খুঁজে নেয় আপন স্বত্তা, ভালবাসা আর স্বকীয়তার অনুভব। মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে আসে বাংলার পুরো চিত্র। আমরা যে বাঙালি বছরের অন্য সময় সেটা হয়তো বা ভূলেই যাই! বাংলা তারিখটা যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমরা কেউ তা বলতে পারি না।তবুও আমরা বাঙালি। বৈশাখ এলেই ঢাকঢোল পিটিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষকে জানাতে চাই যে আমরা বাঙালি। এরকম কৃত্রিম বাঙালিপনা ভাবটা না দেখিয়ে আমরা কি পারি না সত্যিকারের বাঙালি হিসেবে নিজেকে আত্ন প্রকাশ করতে?
অন্য কোন গোষ্ঠি বা জনপদ থেকে আমরা আসিনি অথবা জোর করে বাঙালি হওয়ার দায়িত্বটা আমাদের কাঁধে কেউ চাপিয়ে দেয়নি। বাঙালির আছে হাজার বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্য, আছে জাতি স্বত্তা, আছে নিজস্ব কৃষ্টি কালচার। সত্যি তো আমরা বাঙালি। তাহলে কেন এই একদিনের জন্য আমরা বাঙালি সাজব? আমরা কি পারি না বছরের প্রত্যেকটা দিন বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতিতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে। আমরা কি পারি না সারা দুনিয়ার মানুয়ের কাছে শির উঁচু করে, বুক ফুলিয়ে স্বগর্বে বলতে "আমরা বাঙালি"।
সেই সাথে "বাংলা কবিতা" ডটকম পরিবার সহ সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।
শুভ নববর্ষ ১৪২৪।