শহীদ কাদরী, তিনি বেঁচে ছিলেন, তিনি বেঁচে আছেন, বেঁচে আছেন আমাদের সময়ে। দীর্ঘদিন যাবত তিনি যাপন করছেন কবিতাহীন জীবন। বিশেষ ক’রে বাঙলা কবিতা থেকে যদিও ওই কবিতার রূপ-সৌন্দর্যে একদা কেঁপে উঠেছিলেন তিনি, যে সৌন্দর্য আজোও গেঁথে রয়েছে তাঁর অন্তনির্হিত হৃদয়ে। শহীদ কাদরী, তিনি, বাঙলা কবিতার পলিমাটিতে রোপন করেছিলেন তিনটি শুভ্র নির্মল লাল গোলাপ; যা আজোও সুরভি ছঁড়ায় বাঙলার ভু-ভাগে। বাঙলা কবিতা, তাঁর অবয়বে আজোও তিনি প্রবেশ করাতে চান, চাননি এমনটি হ’য়ে ওঠেনি কখনো। সম্ভবত আর কখনো হবে ও না।
শহীদ কাদরী, কাব্য সংখ্যার দিক দিয়ে এগোননি খুব বেশি। চার দশকেরও বেশী সময় অতিক্রম হওয়ার পর তাঁর পাওয়া যাবে তিনটি কাব্যগ্রন্থ। ক. ‘উত্তরাধিকার’ (১৯৬৬); খ. ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’ (১৯৭৪) এবং গ. ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই (১৯৭৮)। যে তিনটি কাব্যগ্রন্থ আজো উজ্জ্বল হ’য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতায়। বাঙলায় কারো কারো শ্রেষ্ঠ কবিতায় পাওয়া যায় কয়েকশত কবিতা। যেখানে শহীদ কাদরীর মোট কাব্য সংখ্যার কবিতাও অতো পৌঁছবে না। কিন্তু ওই কবিতা ইন্দ্রিয়ের অপর সৌন্দর্য হয়ে দেখা দেয়। তাঁর দেশ বিচ্ছিন্নতায় বাঙলা কবিতা কিছু কাব্য হাঁরায়। যদিও ওই কাব্য সমূহগুলো দেখা দিতে পারতো সেই সুদূর প্রবাসী থেকেও। যেহেতু তাঁর ইন্দ্রিয়ে আজো বাঙলা কবিতার স্বচ্ছ আগমন রয়েছে। শুধু বাদ ছিলো কিছু বৃষ্টি ঝরানো। বৃষ্টি ঝরিয়ে তিনি বাঙলা কবিতায় সংযুক্ত করতে পারতেন আরো কিছু উজ্জ্বল নক্ষত্র। যদিও, মনে করি সেই সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। শুধু সৃষ্টি হয়েছে সময়ের এক ব্যাপক ব্যবধান। তিনি দেশ এবং কবিতা দুটোর জন্যেই কাতরাবোধ করেন সমান ভাবে। এবং নির্মম ভাবে হলেও বিচ্ছিন্নতা দেখা দেয় দুটো থেকেই।
শহীদ কাদরীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘উত্তরাধিকার’। যাতে স্থান পায় চল্লিশটি কবিতা এবং কবিতার সংখ্যা দিক দিয়ে প্রথম কাব্য গ্রন্থটি বড়ো হয়ে থাকে। যদিও অন্য কাব্যগুলো, কবিতা সংখ্যার দিক দিয়ে, সামান্য পিছিয়ে রয়েছে, প্রথম কাব্য থেকে। শহীদ কাদরীর প্রথম গ্রন্থের নামটি যেন জানিয়ে দিয়ে যায় কোনো পূর্ব সম্পর্কের প্রাপ্যধিকারের। তাই প্রথম থেকেই তিনি জানিয়ে দেন তাঁর অধিকারের কথা। যার জন্য তিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন বর্তমান সময়ে। “উত্তরাধিকার” কাব্যের ‘উত্তরাধিকার’ কবিতাটি পড়া যাক:
‘জন্মেই কুঁকড়ে গেছি মাতৃজরায়ন থেকে নেমে-
সোনালি পিচ্ছিল পেট আমাকে উগরে দিলো যেন
দীপহীন ল্যাম্পপোষ্টের নীচে, সস্ত্রস্ত শহরে
নিমজ্জিত সবকিছু রুদ্ধচক্ষু সেই ব্ল্যাক আউটে আঁধারে।
কাঁটা তারে ঘেরা পার্ক, তাঁবু, কুচকাওয়াজ সারিবদ্ধ
সৈনিকের। হিরম্বয় রৌদ্রে শুধু জ্বলজ্বলে সম্ভীর কামান,
ভোরবেলা সচিকিত পদশব্দে ঝোড়ো বিউগুলো
গাছ-পালা, ঘরবাড়ি হঠাৎ বদলে গেছে রাঙা রনাঙ্গনে।
শৃঙ্খলিত, বিদেশীর পতাকার নীচে আমরা শীতে জড়োসড়
নিঃশব্দে দেখেছি প্রেমিকের দীপ্ত মুখ থেকে জ্যোতি ঝরে গেছে
ম্লানমুখো ফিরেছে বালক সমকামী নাবিকের
মরিয়া উল্লাস ধ্বনি আর অশ্লীল গানের কলি
নীর পালকের মত কানে গুঁজে, একা সাঁঝবেলা।
যীশুখৃষ্টের মতন মুখে সৌম্য বুড়ো সয়ে গেছে
ল্যান্টনের ম্লান রাত্রে সৈনিকের সিগারেট, রুটি, উপহার
এবং সঙ্গম-পিষ্ট-সপ্তদর্শী অসর্তক-চিৎকার কন্যার।
রক্তপাতে, আর্তনাদে, হঠাৎ হত্যায় চঞ্চল কৈশোর কাল
শেখালে মরণ-মন্ত্র, আমার প্রথম পাঠ কি করে যে ভুলি
গোলাপ বাগান জুঁড়ে রক্তে-মাংসে পচেঁছিলো একটি রাঙা বৌ
ক’খানা ছকের ঘুটি মানুষের কথামতো মেতেছিলো বলে।
ছদ্মবেশী সবমুখ উৎসবে লেগেছে ফের, ফেলিন উৎসবে,
কী শান্ত নরম গলা, সন্ধ্যার হাওয়ায় বসে আছে
দুদিন আগের মুখ, ভালোবাসা স্তব্ধ-করা আততায়ী মুখ
সন্তর্পণে নিয়েছে গুটিয়ে যেন আস্তিনের সাথে,
যেন কেউ কামমত্ত ভালুকের মতো করে নাই ধাওয়া কোন
মহিলারে পাতালে নামানো ঠান্ডা কূপের গহ্বরে,
সূর্যাস্ত নির্ভর মনে যেন শোনেনি বোমারু শিস্
হঠাৎ কৃষক, দূরে দাউদাউ অন্তিম আগুন তার পড়শির গ্রামে,
লুটিয়ে পড়েনি কেউ স্বদেশী পার্কের ছবি হাতে
বিদেশীর গমক্ষেতে বাসিমুখে কফির বাটিতে মুখ রাখে!
বালকের মুঠো থেকে খসে গেছে হালকা সূক্ষ্ম সুতো বেলুনের
অচেনা দুর্বোধ্য ত্রাসে, আমার চোখের নিচে, এ ভেন্যুর ধারে,
নির্বোধের আলস্য কেবল ম্লান হাস্য জানিয়েছি
মনোরোম অস্তরাগে শুধু আমার গোধূলি ভাষ্য
মূল্যবোধের আর যা কিছু সত্য তাই হতাশার
পরম, বিশ্বস্ত অনুগামী, প্ররোচক বুঝি স্বেচ্ছামরণের,
এইমতো জীবনের সাথে চলে কানামাছি খেলা
এবং আমাকে নিষ্কপর্দক, নিস্ক্রিয় নঞর্থক
করে রাখে; পৃথিবীতে নিঃশব্দে ঘনায় কালবেলা।
আর আমি শুধু আঁধার নিঃসঙ্গ ফ্ল্যাটে রক্তাক্ত জবার মতো
বিপদ-সংকেত জ্বেলে একজোড়া মূল্যহীন চোখে
পড়ে আছি মাঝরাতে কম্পমান কম্পাসের মতো অনিন্দ্রায়।’
‘উত্তরাধিকার’ এর সাত বছর পর একত্রিশটি কবিতা নিয়ে দেখা দেয় দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’। এই কাব্য প্রকাশের পূর্বেই বাঙলার বুকে ঘটে গেছে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১। তাই কাব্যটির শুরুতেই দেখা দেয় রাষ্ট্রর পালনীয় কর্তব্যকর্মনির্ভর কবিতা: ‘রাষ্ট্র মানেই লেফট্ রাইট লেফ্ট।’ বজ্র-শিলাসহ বৃষ্টি, বৃষ্টি : শ্রুতিকে বধির করে/গর্জে ওঠে যেন অবিরল করাতকলের চাকা’- এর মতো কবিতা দেখা না দিয়ে দেখা দেয়, ‘রাষ্ট্র বললেই মনে পড়ে স্বাধীনতার দিবসের সাঁজোয়া বাহিনী/রাষ্ট্র বললেই মনে পড়ে রেসকোর্সের কাঁটাতার,/কারফিউ, ১৪৪-ধারা।’ কাব্যটির শুরুতেই আমাদের বুঝিয়ে দেয়া হয় রাষ্ট্রের অর্থ কী কী। এবং রাষ্ট্র কিভাবে লেফট্ রাইট করে তার সারাদেশ যখন লেফট্ রাইট, লেফ্ট রাইট করে, কবি তখন মগ্ন তাঁর কাব্য রচনায়। এ কাব্যের শেষের কবিতাটিতে পাওয়া যাবে ‘সেনাবাহিনী’, ‘মার্চ পোস্ট’, ‘ব্যারিকেড’, ‘বি-৫২’, ‘মিগ-২১’, ‘রণতরী’, ‘পদাতিক বাহিনী’-ইত্যাদি শব্দগুলো, যেগুলো যুদ্ধ ছাড়া অন্য কিছু মনে করে দিতে পারে না।
‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’-এর ভিতরে প্রবেশ করলে পাওয়া যাবে ‘স্কিৎসোফ্রেনিয়া’ নামক একটি কবিতা। যার অংশ বিশেষ এই রকম ঃ ‘পেটের ভেতরে যেন গর্জে উঠছে গ্রেনেড/কার্বাইনের নলের মতো হলুদ গন্ধক বাস গিরা, / গুনাগার হৃদয়ের মধ্য ছদ্মবেশী গেরিলারা / খনন করছে গর্ত, ফাঁদ / দীর্ঘ কাঁটা বেড়া।/জানু বেয়ে উঠছে একরোখা ট্যাঙ্কের কাতার,/রক্তের ভেতরে সাঁরে বেঁধে পার হলো/বিধ্বস্ত গোলান্দজেরা,/প্রতারক ক’টা রঙহীন সব-মেরিনের সারি/মগজের মধ্যে ডুবে আছে,/ সংবাদ পত্রের শেষ পৃষ্ঠা থেকে বেরিয়ে এসেছে/এক দীর্ঘ সাঁজোয়া বাহিনী/এবং হেডলাইনগুলো অনবরত বাজিয়ে চলেছে সাইরেন।’
শহীদ কাদরীর প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘উত্তরাধিকার’-এ রয়েছে ‘সঙ্গতি’ নামক একটি কবিতা। যে নামটি আমাদের মনে করিয়ে দিতে পারে ‘অমিয় চক্রবর্তী’র অভিজ্ঞান বসন্তের ‘সঙ্গতির’ কথা। যার শুরুটা এই রকম ঃ ‘মেলাবেন তিনি ঝোড়ে হাওয়া আর/পোড়ো বাড়িটার/ঐ ভাঙা দরজাটা/মেলাবেন। শহীদ কাদরীর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’- এই একই নামে পাওয়া যাবে আরো একটি কবিতা। যদিও এখানে ‘অমিয় চক্রবর্তীর’ নামটি এসেছে স্পষ্টভাবে। এই ‘সঙ্গতির’ শুরুটা এই রকমঃ ‘বন্য শূকর খুঁজে পাবে প্রিয় কাদা/মাছরাঙা পাবে অন্বেষণের মাছ,/কালো রাতগুলো বৃষ্টিতে হবে শাদা/ঘন জঙ্গলে ময়ূর দেখাবে নাচ...।’ প্রথম কাব্য গ্রন্থে রয়েছে ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’ নামক একটি কবিতা যে কবিতাটি আমাদের মনে করে দিতে পারে রবীন্দ্রনাথের ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’র কথা ঃ ‘আর কত দূরে নিয়ে যাবে মোরে হে সুন্দরী?/ বলো কোন পাড়ে ভিড়িবে তোমার সোনার তরী।’ আর এখানে শুরুটা হয় এই রকম ঃ ‘অলৌকিক অদ্ভূত দ্রব্যাদি সব খেয়ে দেয়ে বাঁচি/সুহৃদের তিরস্কার বাতাসের সাথে সাথে এসে/লুটোয় টেবিলে, উল্টে দেয় সাধের গোলাস আর/নীল বাক্সো ম্যাচিসের ময়ূরের বর্ণালী পালক-’।
‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’-তে রয়েছে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে একটি কবিতা। শামসুর রাহমান যখন বলেন : ‘লোকে বলে বাংলাদেশে কবিতার আকাল এখন/বিশেষত তোমার মৃত্যুর পরে কাব্যের প্রতিমা/ ললিতলাবণ্যচ্ছটা হারিয়ে ফেলেছে পরিবর্তে রুক্ষতার/কাঠিন্য লেগেছে শুধু আর চারদিকে পোড়াজমি,/করোটিতে জোৎস্না দেখে ক্ষুধার্ত ইঁদুর কী আশ্বাসে/চম্কে ওঠে কিছুতে বোঝে না ফণীমনসার ফুল।’ আর এখানে: ‘আমাদের চৈতন্য প্রবাহে তুমি ট্রাফিক আইল্যান্ড/হে রবীন্দ্রনাথ!/দাঁড়িয়ে আছো যেন/সোনালি, অক্ষম পুলিশ এক,/সর্বদা জ্বলছে তোমার লাল, নীল, সবুজ/ সিগন্যাল/বাংলাদেশ নামে এক ফোঁটা অচেনা ষ্টেশনে/পৌঁছুতে হ’লে/নিজের সমস্ত বিষয় আশয় বেঁচে দিয়ে/ তোমার কাছ থেকে কিনে নিতে হবে নাকি/আমার টিকিট? যুদ্ধের সরঞ্জাম নিয়ে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থে রয়েছে আরো একটি কবিতা ‘যুদ্ধোত্তর রবিবার।’ যার ভিতরে পাওয়া যাবে ‘কুচকাওয়াজ’, ‘মহড়া’, ‘স্কোয়াড্রন’, ‘মিগ-১৭’, ‘মেশিনগান’, ‘ট্যাংক’, ‘এয়ারগান’, ‘বন্ধুক’, ‘নীল নাবিক’, ‘দস্যুজাহাজ’ ‘কার্তুজ’, ‘পিস্তল’, ‘কামান’, ‘দুর্গ’, বেয়োনেট, ‘রাডার’, ‘সাইরেন’ মতো ইত্যাদি শব্দগুলো। যে শব্দগুলো যুদ্ধ ছাড়া অন্য কিছু মনে করে দিতে পারে না।
শহীদ কাদরীর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ প্রকাশ পায়; দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থের চার বছর পর। অর্থাৎ ১৯৭৮-এ।
যুদ্ধোত্তর ওই শব্দগুলো সীমাবদ্ধ থাকেনি দ্বিতীয় কাব্যে পর্যন্ত, বরং তা তৃতীয়তে ও দেখা দেয়। ‘বিচ্ছিন্ন দৃশ্যাবলিতে পাওয়া যাবে আবার সে রকম কিছু শব্দ। সমস্ত কবিতাটি জুঁড়ে ওরকম শব্দ বিন্যাস না থাকলেও কবিতাটির শুরুতেই পাওয়া যাবে কামান, ভারিগোলা ইত্যাদি শব্দগুলো। ‘তুমি গান গাইলে’ চমৎকার কবিতাটিতেও পাওয়া যাবে ওরকম কিছু শব্দ, তুমি গান গাইলে,/ব্যারাকে-ব্যারাকে বিউগল্ বেজে ওঠলো,/ সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ থামলো না / তুমি গান গাইলে,/ জাতিসংঘের ব্যারাকে প্রস্তাব লঙ্ঘন ক’রে সারি সারি ট্যাঙ্ক/জলপাই পল্লবের ফাঁকে ফাঁকে/খুব ভয়াবহভাবে যুদ্ধ বিরতির সীমারেখা পার হ’লো। পূর্বের মতো ‘প্রত্যেহের কালো রণাঙ্গনে’- কবিতাটিতেও পাওয়া যাবে যুদ্ধনির্ভর শব্দগুলো। যে শব্দগুলো ব্যাপক ভাবে ব্যবহার হয় মুক্তিযুদ্ধের পরের দু’টি কাব্য গ্রন্থে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ, ‘উত্তরাধিকার’ যুদ্ধের আগে রচিত হওয়ায় ও রকম শব্দগুলো মুক্ত থাকে কাব্যটি।
প্রথম কাব্যটি মুক্ত থাকলেও পর পর দু’টি কাব্যের শব্দগুলো ব্যবহার হয়েছে স্বাধীনভাবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ওই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার হয় কবিতার অভ্যন্তরে এবং শিরোনামে। ‘কবিতা, অক্ষম অস্ত্র আমার’ কবিতাটির শিরোনামে-ই ভেসে উঠে ‘অস্ত্র’। কবিতাটির প্রথম পঙ্ক্তি ঃ ‘স্টেনগান গর্জনের শব্দে পাখিরা ঝাঁকে-ঝাঁকে উড়ে যায় বা কুচকাওয়াজ ভরা সন্ত্রাসে কেঁপে উঠলো এ তল্লাট/সার্চ লাইটের আলোয় বা স্বাধীনতার সৈনিক যেমন উরুতে স্টেনগান বেঁধে নেয়,/কিম্বা সন্তপর্ণে গ্রেনেড নিয়ে হাটে বা কয়েকটা বিদেশী ভারি বুট তোমাকে বা তুমি কিন্তু মাইন-এর মতো প্রতিরোধে/বিষ্ফোরণ করোনি।’ কবিতা লিখব না এরকম প্রতিজ্ঞা নয় বরং, তিনি লিখুন আমরা এটাই আশা করি। এতো দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর যদি আবার মার্চপোষ্ট করতে করতে ফিরে আসে নতুন কবিতা তাহ’লে সমৃদ্ধ হবে বাঙলা সাহিত্যে, সমৃদ্ধ হবে বাঙলা কবিতা। যে কবিতা আজোও অপেক্ষা করে আছে কবির দিকে দৃষ্টি রেখে।