বিস্তৃত স্বপ্নলোকে সবুজ উদ্যান, অরণ্য আর জেগে উঠা একফালি চাঁদ-
যার সৌন্দর্যে কবির বু’কে রচিত হ’লো শতাব্দীর অমরকাব্য;
বিষাদ আর প্রেমময় সেই কবিতায় বলা হ’লো তোমারই কিংবদন্তীর কথা,
দীপ্তিমান, আশ্চর্য আর উজ্জ্বল সেই প্রেমময় শ্লোক, স্বপ্নবেগে নির্ঝরের বু’কে,
যেখানে তোমার বন্দনাই গাওয়া হ’লো অনেক বেশী অশ্রুভেজা চোখে-
নিরিবিলি জলের প্রবাহিত ধারায় নিজেকে উৎসর্গ করলাম নিঃশব্দে
রূপসীর অমল বাহুতে, লাবণ্য ছুঁয়ে গেল শ্রাবণ জলের ঢেউয়ে,
আমার নষ্ট শরীরে গেঁথে নিলাম শিশিরের শুভ্রতা, ভরা পূর্ণিমায়
হারিয়ে গেল আমার মধ্যেযৌবন, আশ্চর্যজনক রূপান্তরিত শিল্পের অস্তিত্বে;
প্রাজ্ঞ উপলব্ধি ধারণ করলাম নিবিড় বু’কে, তীব্র প্রেমের স্মৃতিতে-
কেঁপে উঠি ধীরে-ধীরে, ঘাসের শিশিরে স্তব্ধ চোখের নীলাকাশে,
গভীর অন্ধকারে ডুবে ছিলাম জ্যোতির্ময় শরীরে, পাখির ডাক, রোদের ঝিলিক,
স্বরহীন কণ্ঠ, জলের গভীর শব্দ, স্নিগ্ধ শিশির, শ্রাবণের বৃষ্টির ফোঁটা-
কিছুই চেনা ছিল না আমার অস্পষ্ট স্বপ্নাতীত পবিত্র পৃথিবীতে
নিশীথের কোমল বাতাসে কেটে গেল একটি বসন্তের রাত ব্যর্থ প্রলাপে,
আবার তার সাথে মিশে যাই দ্রুতিময় সম্পর্কে, নদীর বু’কে ঝ’রে বৃষ্টির
ফোঁটা বিরামহীন হারানো দিনের শেষে বিচ্ছেদের নিবিড় আলিঙ্গনে;
অচেনা কণ্ঠও আমাকে ব্যাকুল ক’রে নিটোল উজ্জ্বল প্রেমময় গাঢ় সন্ধ্যায়
সেই ছুঁয়ে যাওয়া টলোমলো সুখে, সমতল ভূমিতে আমি নেমে পড়ি,
মায়াময় সরোবরের কথা ভুলে, শতাব্দীর নীল হাওয়া খেলা ক’রে
কালো মেঘের বিস্ময়কর অবিন্যস্ত সৌন্দর্যে, শূন্যেয় মিশিয়ে দিলাম
রক্তঝরা আমার বিবর্ণতা, বিতৃষ্ণা অলৌকিক বিশ্বাসে, উজ্জ্বল আর বিকশিত
ধারায় এ-বুকে জন্ম নেয় অজস্র জলধারা, বাতাসে প্রতিধ্বনি, আমার নিবিড়
পল্লবে গুঞ্জন ছড়ায় সংগীতের শূন্য সুর, মায়াময় দ্বীপপুঞ্জ ভ’রে উ’ঠে
আদিম উল্লাসে, রূপান্তরের চিহ্ন মিশে থাক শুভ্র নিঃসঙ্গতায়, পবিত্র শরীরে।