অনেক দিন তাঁদেরকে দেখি না, যাঁদেরকে চোখের কোণে লুকিয়ে রেখেছি
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে;
অশ্রুকোণে তারা লুকিয়ে থাকে গভীর স্মৃতির অন্তরালে;
আমার নিরর্থক দিনগুলি বেড়ে উ’ঠে দুঃস্বপ্নে,
অতীত স্মৃতি খেলা ক’রে ভাবনার শরীরে
নিঃশব্দে, জলের উপর দীর্ঘ ঢেউ ফেলে-ফেলে
তারাও হারিয়ে যায় আমার শূন্য বুক থেকে;
টলোমলো চোখের ভিতর নেমে আসে কোনো
এক বিষাদের চিহ্ন কয়েক মুহূর্তে দীর্ঘ হ’য়ে
শুভ্র জ্যোৎস্নার সৌন্দর্যও যেন হারিয়ে যায় নীল বুক
থেকে মাঘের কোমল বাতাসে তীব্রভাবে
আবেগের সমস্ত কিছু যেন ধুয়ে-মুছে গেছে হৃদয়ের
সজীব কোণ থেকে মায়াবী শূন্যলোকে
প্রোজ্জ্বলিত দিনের শেষে নেমে আসে গাঢ় রাত্রি নিভৃত বু’কে,
শাশ্বত ভাবনার মহাবিশ্বে
একাকী চাঁদও ভুলে যায় আলো-আঁধারের
সমস্ত স্মৃতির কথা বিবর্ণ ধারায় নিঃশব্দে;
সমস্ত দুঃস্বপ্ন যেন জড়ো হয় আমার চতুর্দিকে,
হারানো স্মৃতির ফেলে আসা উজ্জ্বল নক্ষত্রে,
ফিরে তাকাই সৌন্দর্যময় সেই দিনগুলির দিকে,
আশ্চর্য ঠোঁটে কেঁপে উ’ঠে শূন্যতার
ব্যবচ্ছেদ স্মৃতিকাতর আমার হারানো সুর,
তাৎপর্যময় হ’য়ে উঠেনি কোন কিছুই সুনিপুণ আঙুলের ছোঁয়ায়
শব্দহীন নিরিবিলি জীবনে সেই স্মৃতি
ফিরে আসে আশ্বিনের ভোরের মসৃণ কোমল
আলোয়; স্মৃতির স্পর্শ রেখে যাই বিস্ময়ে প্রাগৈতিহাসিক সমতলে,
ঐশ্বর্য ছড়ানো জ্যোতির্ময়ের দিগন্তে আমি ছুঁয়ে যাই তাঁদের মৃদু স্পর্শ স্ব
রহীন বিচিত্র স্নিগ্ধময় করতলে, ইন্দ্রিয়ের পূর্ণময় নির্মলে কালের
ধূসর সন্ধ্যায় তাঁদের হারিয়ে ফেলি বিধ্বস্ত নীলিমায়,
বাহুর বন্ধন ভেঙে দীর্ঘশ্বাসে,
রাত্রি নামে গাঢ় হ’য়ে আমার রক্তিম আভাসে,
নিবিড় টানে আর ফিরে আসি না
আপন গৃহে শূন্যতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকি মৌলিক চিত্তে,
নিসর্গের ব’য়ে যাওয়া সবুজ শিশিরের প’ড়ে;
আবেগের সমস্ত কিছু শিলার স্তূপে মিশে যায় হৃদয়ের
কোণ থেকে শুভ্রতার ছায়া মেখে
ঐন্দ্রজালিক কণ্ঠ আর পূর্ণিমার আলো ছড়ায় না
আমার নষ্ট সৌন্দর্যময় চোখ থেকে।