আজ মন ভালো নেই, রবিরারে দিন ক্লান্ত মাখা, মিলিত ভাবনায়-
ফিরে-ফিরে আকাশের দিকে তাকাই; বাসের শব্দ, মানুষের কোলাহল,
আর নিত্য দিনের ফেরিওয়ালার চীৎকার মিশে থাকে দিনের প্রতিমুহূর্তে,
আবার ফিরে আসি লুপ্ত স্মৃতিতে, যেখানে বাসা বাধে বিভিন্ন রঙের স্বপ্ন,
শাদা রঙের অট্টালিকায় দাঁড়িয়ে থাকে কিছু অচেনা তরুণী, আমার মতো
নিঃসঙ্গ ও একাকী, আপন শরীরটা তারা দুলিয়ে দেয় রেলিঙে ভর ক’রে,
আকাশের সেই চিলটা, সারাদিন উ’ড়ে উ’ড়ে ক্লান্ত হ’য়ে ফিরে আসে
দীর্ঘ মাঠের পাশে, একটু উষ্ণতার জন্য সে তাকিয়ে থাকে আমার
দৃষ্টির দিকে, ভাঙা স্বপ্নের মাঝে তাকে মিলিয়ে নিই সবুজ হৃদয়ের সাথে-
রাত্রি গভীর হয়, চাঁদ জেগে উ’ঠে, অচেনা কণ্ঠস্বর ভেসে আসে কানে,
হলুদ মেঘে ভর ক’রে ছায়া মেখে দেয় আমার উত্তরতিরিশ যৌবনে-
ভেঙে প’ড়ে সব স্থাপত্য, নগরীর প্রধান সড়কে জড় হয় কিছু নির্মম চোখ
কয়েক মুহূর্তে, তাদের কী আমি চিনি ? আপনজন-বন্ধু-আত্মার আত্মীয় ?
কিছুই জানা নেই আমার ! তীব্রবেগে পথ ছেড়ে বেড়িয়ে পড়ি নিজস্ব গন্তব্যেয়
ঝরা চাঁপা ফুলের গন্ধ মেখে থাকে আমার স্নিগ্ধ শরীরে, জ্যোতির্ময় আভাসে-
গভীর কথা বলা হয় না সেই অচেনা মানুষটির সাথে, যে পবিত্র আর
নিঃস্বার্থ ভাবে আমাকে, ‘শব্দহীন মানুষ’ বলে সম্বোধন ক’রে মাঝে-মাঝে,
বেঁছে-বেঁছে শব্দ নিয়ে কবিতা লেখা হয় না অনেকদিন, পুরনো পাণ্ডুলিপিতে
হাত পড়ে না কয়েক মাস, শব্দগুলো কী বেঁচে আছে ? না-হলদে রঙে
হারিয়ে গেছে শাদা মসৃণ পাতা থেকে, মায়াবী টেবিল, আমার প্রিয় কবিতার
বই, পেন্সিলের সরল রেখার দাগগুলো মিশে গেছে শাদা মেঘের মত-
সেই প্রিয় পংক্তিগুলো থেকে, অন্ততপক্ষে দু’দশক বয়স হয়েছে যার;
মসৃণ আঙুলের ছোঁয়ায় ব্যস্ত ছিলাম বিষণ্ণ সন্ধ্যায় ! পার্থিব সৌন্দর্যে
আশ্বিনের বাতাসে উ’ড়ে গেছে আমার রচিত সমস্ত সংগীত দীপ্ত পথে;
একবিন্দু সৌন্দর্য মেখে, উষ্ণতার জন্য অপেক্ষা করতাম চৈত্রের পূর্ণিমায়-
সন্ধ্যার বিবর্ণ ছায়ায় হারিয়ে যায়, মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অনেক কিছু ইঙ্গিতে,
কিছু স্মৃতি, সম্পর্ক, হাওয়ার রাত, বৃষ্টির শব্দ, জলের গভীর ছায়া মিশে
থাকে ভাবনার বু’কে, জ্যোৎস্না আর শিশিরে বিস্ময় জাগায় সমুজ্জ্বল
কথামালার বিস্ময়কর সীমাহীন মর্মে, নিস্তব্ধতায় হারিয়ে ফেলি নিজেকে,
মৌলিক ভাবনার চিত্তে; চন্দ্রমল্লিকার বনে অলৌকিক নীল সমুদ্রের ঢেউয়ে