হাঁটতে শুরু করেছি অনেক দূর থেকে, যেন অনেকগুলো কোমল ছায়া দেখেই
আমি হাঁটতে শুরু করেছিলাম; চেনা পথে পা রাখলাম আশ্চর্য কল্পনার শরীরে;
খুব আস্তে আস্তে, ধীর আর শান্তভাবে; সবুজ বন পেড়িয়ে নিস্তব্ধতার অরণ্যেয়
এগিয়ে গেলাম অনেকদূর, অতীতের হিমগর্ভে ফাল্গুনের বাতাসে, সন্ধ্যার হিমে,
গভীর সৌন্দর্যময় চেনা মুখগুলোও খুব বেশী অচেনা হ’য়ে উ’ঠে অমল নক্ষত্রে;
পাশের অচেনা মানুষটি, যে পবিত্র শ্লোক উচ্চারণ ক’রে চেয়ে নিল রঙিন মুদ্রা,
আমার স্বপ্নিল বাহুতে তাঁর ছোঁয়া, গভীর অন্ধকারে নক্ষত্রের আলোতে ভেসে
আসে নিরর্থক প্রার্থনা; তাঁর অলৌকিক বাণী আমাকেও দীর্ঘজীবী ক’রে তোলে;
ছায়াগুলো বহুদুর এগিয়ে গেল স্বপ্নের নিবিড়তায়, নির্জনতার হারানো শিশিরে;
কোন ছায়া নেই নিজস্ব পথে, আমাকে নিঃসঙ্গ ফেলে, শূন্যলোকে আলো-স্বপ্ন
আঁধারে শরীর ছুঁয়ে যায় সমুজ্জ্বল গাঢ় কুয়াশার নির্জনে, ভাবনার সিঁড়িতে
রেখে যাই তরঙ্গের নীল আলো; সকল প্রেমিকারা চ’লে গেল সুঘ্রাণ ছড়িয়ে,
আমার ইন্দ্রিয়ে তাঁদের অলৌকিক সৌন্দর্য গেঁথে থাকে স্নিগ্ধ স্ফীত আভাসে;
ব্যর্থ আর কোমল ধ্বনি আমার মনে; শতাব্দীর দীর্ঘ পথে হেঁটেছি বিস্তীর্ণ দিকে,
একাকী রুপালি জ্যোৎস্নায়, নক্ষত্রের নীল মেঘে, রাতের আঁধারের নিবিড়তায়,
অন্ধকারে শরীরের আবেদন তীব্র হ’য়ে উঠে শাদা হিমে; আশ্চর্য গাঢ় বিস্তীর্ণ
ভেসে আসা আমার পৃথিবীর কোমল ধ্বনি উচ্চারিত হৃদয়ের ব্যর্থ প্রলাপ;
নিবিড় হ’য়ে উ’ঠে সকল বাহু তার কঠিন স্পর্শে; স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা মিশে যায়
বিলুপ্ত হৃদয়ে ছায়াময় সবুজ পল্লবে, মায়াময় ভেসে উঠা আকাঙ্ক্ষার শরীরে;
কয়েক শতাব্দী ধ’রে আমি কোন ছায়া দেখি না আমার অভ্যন্তরে, নিঃশব্দে
হৃদয়ের গভীরে সমুদ্রের জল আমাকেও পুণ্যময় ক’রে তোলে গভীর গহ্বরে-
ছায়াগুলো মিশে গেছে রূপসীর শরীরের শেফালীর বনে আশ্চর্য কুয়াশায়;
হৃদয়ের নীল সমুদ্রে তাঁরা উড়িয়ে দিল প্রান্তরের দুর্দান্ত উচ্ছ্বাস শব্দহীন
জ্যোৎস্নার গলিত হিমে; শতাব্দীর নীল অন্ধকারে রেখে গেল অমলধারা;
কোন ছায়া নেই আমার চতুর্দিকে অন্ধকার পৃথিবীর রাতের গাঢ় আঁধারে।