কিছুই ভাবিনি তোমাকে নিয়ে, অন্যরা যেভাবে ভেবে থাকে রক্তের গভীরে
আমি তাঁদের মতো ক’রে ভাবিনি স্বপ্ন ও বাস্তবতায়;
আমার ভাবনার জগতে তোমাকে আমি গেঁথে রাখি গভীর ক’রে-
আপন আর পরম সম্পর্কে, উষ্ণ ভালোবাসা জমা থাক তাঁদের জন্য যারা আমার
রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে বিচ্ছেদের করুণ সুর, স্পর্শময় আঙুলে গেঁথে থাকে
নীলবীথি গভীর শূন্যলোকে নিসর্গের বিষাক্ত ছোঁয়ায় তীব্রভাবে;
আমার সবুজ বু’কে ব’য়ে চলে পালতোলা নৌকা তার আপন গন্তব্যেয়-
কালমেঘ আর শিশিরের স্তব অনেক গেয়েছি আমার সমস্ত কবিতায়,
গলিত চাঁদের সৌন্দর্য খ’সে গেছে অনেকবার তোমাকে ভালোবেসে
কবিতার পঙক্তি থেকে, গাঢ় মেঘমালার মায়াবী সেই জ্যোতির্ময় আঁখিতাঁরায়
তোমাকেই তো নিসর্গমালা বিছিয়ে দিলাম দু’চোখের ভিতর, চন্দনের সুবাতাস
ব’য়ে গেল পলিমাটি ভেদ ক’রে গভীর রাত্রিতে নক্ষত্রপুঞ্জের দিগন্তে;
রোদনরূপসী তুমি আমার হৃদয়স্পন্দনে, উজ্জ্বল রৌদ্রে ঝ’রে প’ড়ে সবুজ পাতা
স্মৃতির ঐশ্বর্যে লুকিয়ে থাকে বিস্ময় আমার উজ্জ্বল সমতলে;
বিস্ময় জাগায় ভাবনার চিত্তে, উজ্জ্বল আঙুলে মিশে থাকে গাঢ় বৃষ্টি অন্ধকার রাত্রে
অন্তহীন স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নায় আমার করতলে প’ড়ে রয় নরম শরীর অলৌকিক নদীতে;
পবিত্র শিশিরে ধু’য়ে যায় আমার সকল ক্ষতের দাগ মুহূর্তে-
লাল রক্তে ব’য়ে চলে আদিম উৎসব নিসর্গের চোখে প্রাত্যহিক সম্পর্কে,
নিদ্রাহীন আমি সারারাত, কেঁপে-কেঁপে ভেঙে প’ড়ে সমস্ত শিল্পকলা চোখের
নিমিষে গাঢ় মেঘমালায়, উত্তাল ঢেউ খেলা ক’রে আমার চতুর্দিকে
ভুলে গেছি সাতারের সমস্ত কলাকৌশল এই বাঙলার নদনদীতে; সুনিপুন রুপালী
আঁকা-বাকা দৃষ্টি ফিরে আসে জীবনের বিবর্ণ শব্দহীন ছায়াচ্ছন্ন অন্ধকারে,
কোমল রৌদ্রের আভা মিশে থাকে ভোরের শিশিরের জলে ফাল্গুনীর আকাশে-
জ্যোৎস্নায় ভেজা ঠোঁটে রেখে যাব নিঃসঙ্গ স্তব্ধতা অলৌকিক অতীন্দ্রেয়,
শোভাময় নীলবীথিতে নিবিড়-নিঃসঙ্গ সন্ধ্যা তোমার অম্লান কেঁপে উঠা আঙুলে।