যাচ্ছ তবে আমাকে ছেড়ে, বিন্দু-বিন্দু অশ্রু ঝ’রে প’ড়ে অবিরল নদীর
জলের সাথে, লাবণ্যরূপে তা-বিলীন হয় দিগন্তের হাওয়ায়-
শুধু মনে প’ড়ে কোনো উত্তর দেইনি তোমার কথায়,
মানবিক সব সম্পর্ক তোমার অধীন অলৌকিক প্রতিশ্রুতিতে,
ঐশ্বর্য-স্বপ্ন-সৌন্দর্য আদিম ভাষার মতো মিশে থাকে কঠিন চিত্তে,
মুগ্ধ হ’য়ে তাকিয়ে থাকি সেই ছায়ার দিকে, বৃষ্টির ফোঁটার সাথে মধ্যেদিনে
আমার স্বপ্নলোকে ভেসে উ’ঠে উজ্জ্বল দ্যুতিময় তীব্র শিহরণ মুহূর্তে-
গ’লে প’ড়ে জ্যোতির্ময় চাঁদ সকল সৌন্দর্য ভেদ ক’রে,
নির্নিমেষ সুবর্ণদিনের হারানো সুরে, অন্ধকারের অবিচল পথে,
যাচ্ছ তুমি আমাকে ছেড়ে, সকল স্বপ্নগুলো ভেঙে চুরমার ক’রে,
প্রতিহিংসা ছুঁড়ে- আমার জ্যোতির্ময় শরীরে, ব’য়ে যাওয়া স্রোতের দিকে
বিষাদের চিহ্নে হৃদয় ছুঁয়ে যায় জীবনের হৃদয়স্পন্দনে
বিতৃষ্ণার বিশাল ঠোঁটে, নক্ষত্রের আলিঙ্গনের নিবিড় স্পর্শে-
জমে উ’ঠে নির্বোধ ধ্যানে, পতঙ্গের লাল কীটের বিষাক্তে
বিস্ময় জাগায় আমার প্রাগৈতিহাসিক সমতলে আলো ও আঁধারের বু’কে,
কালো ছায়া দৃষ্টি ছড়ায় নদীর বু’কে, মেঘের আড়ালে খেলা করে
আমার অনিশ্চিত জীবন, তোমার ভাবনার সাথে আমি মিশে থাকি
সকাল-সন্ধ্যায় স্মৃতির পাতায়, ইন্দ্রিয়ে বিষণ্ণ নিঃসরণ চেতনার ধারা,
নিটোল কঠিন রাত্রি কেটে যায় উজ্জ্বল প্রতীক্ষার অবসানে-
হিম ভাবনায় তোমাকে নিয়ে বাঁচি, ভেঙে পড়া সম্পর্কে বিধ্বস্ত নীলিমায়,
অদ্ভুত সেই অব্যক্ত কথা, দৃষ্টির সীমানায় গেঁথে থাকে নীল হাওয়ায়
ভেসে উঠা মৌলিক রূপান্তরে, পুঞ্জ-পুঞ্জ সৌন্দর্য হারিয়ে যায়
আমার গাঢ় বুক থেকে মুহূর্তে হারানো স্বপ্নলোকে,
শব্দহীন ভাবে বেঁচে থাকি নিঃসঙ্গে, জ্যোতির্ময় আলোকে
অলৌকিক আমার সন্ধ্যা, অন্তহীন রাত্রির সুর মর্মে-মর্মে,
সঙ্গীতের সুর আমার অমর কাব্যেয়, ধ্যানের অর্থহীন আয়ুষ্কালে গভীর
শূন্যতা আমার হারানো দিনে; সবকিছু ভেঙে পড়ে জ্যোৎস্নার আলোয় শ্রাবণের
অমল বাতাসে রৌদ্রময় বিবর্ণ দিনে, প্রতীক্ষার সমস্ত অবসান মুছে গেল,
যাচ্ছ তবে, আমাকে ছেড়ে বুকের গভীর থেকে সমস্ত স্মৃতি ভুলে।