সব কিছুই যেন এক বিচ্ছুতি ঘটাবে তার জীবন প্রণালীতে। সব কিছু ছেড়ে যে বেছে নেয় একাকী এক লাফ দেওয়ার ইচ্ছায়। কবিতার মধ্যে যেমন আবার বেছে নেন ‘লাল রক্ত’, ‘স্লিপিং টেবলেট’, ‘রেল লাইন’, ‘ছুটি’, ‘সবুজ’, ‘মাংস’, ‘ঘাস’, ‘রাত্রি’, ‘পলিমাটি’, ‘নীল’, ‘বৃষ্টিপাত’, ‘মনুমেন্ট’, ‘মসজিদ’, ‘গোলাপি রিবন’, ‘নীল কাটা’, ‘জল্লাদ’, ‘সুপার মার্কেট’, ‘পুলিশ’, ‘ব্যাটসম্যান’, ‘সেঞ্চুরি’, ‘সঙ্গম’, ‘গর্ভবতী’, ‘পদ্মার ইলিশ’, ‘মৌমাছি’, ‘মৌচাক’ ইত্যাদি শব্দ। যে শব্দগুলো জড়িয়ে রয়েছে সম্পূর্ণ কবিতা জুড়ে। এ যেন শব্দের এক বিচিত্র ব্যবহার। তু’লে নেই এখান থেকে কবিতাটির একটি পঙক্তি। ‘লাফ দেবো পৃথিবীর উচ্চতম ছাদগুলো থেকে’। একজন একই সাথে কিভাবে বেছে নিবেন সেই সব উচ্চতম ছাদগুলো ? যা সম্ভাব হ’য়ে উঠে না। তার থেকে তিনি বেছে নেন ‘উচ্চতম ছাদটি’। যার থেকে অনায়াসে তিনি সম্পূর্ণ করতে পারেন নিজের লুকিয়ে থাকা চরম ইচ্ছাটি। ‘ষ্টেজ’ কবিতাটিতে শব্দগুলো ব্যবহার হয়েছে বিচিত্র ভাবে। সর্বদা যেন সজাগ রাখছে আমাদেরকে। যার থেকে চোখ ফিরিয়ে নেওয়া আমাদের পক্ষে বেশ কষ্টকর হ’য়ে দেখা দেয়। হুমায়ুন আজাদের কিছু কবিতায় আমরা যেমন দেখেছি ব্যবহার হয়নি কোনো ‘দাঁড়ি’ বা ‘কমা’। সেই একই ভাবে বলতে হচ্ছে অতিরিক্ত ‘কমা’র ব্যবহার রয়েছে কবিতাটিতে। শব্দের ঝংকার বা দ্রুতি খেলা করেছে কবিতাটির পঙক্তিতে পঙক্তিতে। নর্তকীর নাচ যেন মেঘ থেকে বৃষ্টি ঘটিয়ে সব কিছুকে একাকার ক’রে দিবে। যে আসবে হৃদয়ে; তার থেকেও আরও অনেক গভীরে। একদা যে নেচে যাবে তার আপন মনে, সব কিছুকে কাঁপিয়ে, সৌন্দর্যকে ছাড়িয়ে। শব্দের কম্পন যেমন প্রকাশ পায় নিচের পঙক্তিতেঃ

‘চূর্ণ করো এই বক্ষও, জীর্ণ করো হৃদপিণ্ডও, পাঁজর,
চিৎকার ক্রন্দন ক’রে অস্থিপুঞ্জ, রক্তমাংস, সর্বাঙ্গ বাজুক; তোমার ঘূর্ণিতে ভাঙে চিরকাল গ’ড়ে যাওয়া ঘর,বেদনা রিক্ততা মেখে বেহিশেবি রক্তরা সাজুক।’

এ কবিতাটি পড়া মাত্র মনে পড়লো শামসুর রাহমানের ‘বিধ্বস্ত নীলিমা’ (১৯৬৭) কাব্যের ‘ষ্টেজে’ কবিতাটি। শামসুর রাহমানের কবিতার শুরুটা এ রকমঃ ‘আর কী  রয়েছে বাকি? সবি তৈরি, গোটা মঞ্চটাই/ সুসজ্জিত নানা ছাঁদে। ইতিমধ্যে মাইক লাগানো/ হয়ে গেছে আর সামনে শ্রোতাদের চেয়ার সাজানো/ সারি সারি, বস্তুত কোথাও নেই তিলমাত্র ঠাই।/ মঞ্চে বক্তা দু-চার কদম হেঁটে দিচ্ছেন মহড়া/ নির্ধারিত বক্তৃতার, বাছা বাছা বাক্যের শায়ক/অস্থির স্মৃতির তূণে, কিন্তু তবু সভার নায়ক,/পাদপ্রদীপের আলো, মনে হয় সবই মনগড়া’ !      

                       ‘শ্রেণীসংগ্রাম’ তার পরের আর একটি কবিতা। কবিতাটিতে প্রকাশ পেয়েছে সমাজের বৈষম্য এক করুন চিত্র। পদ্য লিখে তাদের আহ্বান করেছি; যারা আমার নয়। সুন্দরীরা আজ করুন হ’য়ে ধরা দিক আমার এই বুকে। যারা আজ অন্যদের উপপত্নী হয়েছে। আমার হৃদপিণ্ড তাদের জন্য আজ হা-হা কার ক’রে। অন্যান্য কবিতার তুলনায় খুব স্বাভাবিক হ’য়ে রচিত হয় কবিতাটি। তাদের আমি ডেকেছি অন্য নামে; যা পূর্বে ডাকা হয়নি কখনও। ‘আত্মহত্যার অস্ত্রাবলি’তে প্রকাশ পেয়েছে নতুন কিছু শব্দ যা আমরা হুমায়ুন আজাদের কবিতায় এর পূর্বে পাইনি। ‘ধারালো ছোরা’, ‘স্লিপিং টেবলেট’, ‘কালো রিভলবার’, ‘উজ্জ্বল তরবারি’, ‘আত্মহত্যা’ ইত্যাদি। ‘ছাদ থেকে লাফ দেওয়া’ এ রকম পঙক্তি আমরা এর পূর্বেও পেয়েছি। এ যেন আত্মহত্যার জন্য বেঁছে নেওয়া নতুন কোনো সূত্র। যা থেকে কবি বেঁছে নিতে পারেন এক সহজ সমাধান। চমৎকার একটি প্রেমের কবিতা ‘যদি তুমি আসো’। যাতে প্রকাশ পেয়েছে সুনিপুণ ভাষার এক সৌন্দর্যবোধ। অনেক বার সকাল, বিকাল আর সন্ধ্যায় আমি পড়েছি কবিতাটি। আমার শহরের সব কিছু যেন হারিয়ে যাচ্ছে তার অভাবে। একটি শহরকে ধন্য করার জন্য সে যেন এক বিশাল আকুতি। তিনি যেন বার বার কণ্ঠে তু’লে নিচ্ছেন তাঁর আসার জন্য; যে ধন্য করবে এ পূর্ণময় শহরকে। তাই কবিতাতে প্রকাশ পায়ঃ

’তোমার অভাব বড়ো বোধ করে এ শহর
তোমার অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে
পুরানো শহরের সমস্ত স্থাপত্যকর্ম ভেঙে যাচ্ছে
সমস্ত নতুন প্ল্যান সুনিবিড় শিল্পের আকুতি
ময়লা জমছে বালবে পার্কে ট্রাফিক পুলিশের চোখে
আমার বক্ষে তোমার অভাবে।’

এ যেন পথহারা কোনো এক পথিকের করুন আর্তনাদ যে ফিরে আসবে আপন শহরে। এই শহরের সব কিছুকে মুহূর্তে সুস্থ ক’রে তুলবেন কোনো এক যাদুর ছোঁয়ায়। সেই শহর যেন ফিরে পাবে আপন শিল্পকলা।

এ কবিতাটি পড়া মাত্র আমার আবার মনে হয়েছে শামসুর রাহমানের ‘নিজবাসভূমে’ (১৯৭০) কাব্যের ‘এ শহর’ শিরোনামের কবিতাটি। যে কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ পায় ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ প্রকাশিত হওয়ার তিন বছর পূর্বে। ‘এ শহর’ শিরোনামের কবিতাটির কয়েকটি পঙক্তি এরকমঃ

‘এ শহর টুরিস্টের কাছে পাতে শীর্ণ হাত যখন তখন,
এ শহর তালিমারা জামা পরে নগ্ন হাঁটে, খোঁড়ায় ভীষণ। এ শহর রেস খেলে, তাড়ি গেলে হাঁড়ি হাঁড়ি, ছায়ার গহ্বরে পা মেলে রগড় করে আত্মার উকুন বাছে, ঝাড়ে ছাড়পোকা।’

‘অলৌকিক ইস্টিমার’ কাব্যের পরের আর একটি কবিতা ‘বাহু’। কবিতাটির নাম আমাদের কাছে আর নতুন মনে হয় না। রবীন্দ্রনাথের ‘কড়ি ও কোমল’- এ রয়েছে ‘বাহু’ নামে একটি কবিতা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতাটিতে প্রকাশ করেনঃ

‘কাহারে জড়াতে চাহে দুটি বাহুলতা
কাহারে কাঁদিয়া বলে, ‘যেয়ো না, যেয়ো না!’
কেমনে প্রকাশ করে ব্যাকুল বাসনা,
কে শুনেছে বাহুর নীরব আকুলতা!
কোথা হতে নিয়ে আসে হৃদয়ের কথা,
গায়ে লিখে দিয়ে যায় পুলক অক্ষরে।’

আর, হুমায়ুন আজাদের কবিতায় প্রকাশ পায় এভাবেঃ

‘আমার দু বাহু শীর্ণ তবু কারো কারো কাছে সোনালী সুন্দর তারা আসে আসবেই তারা গলে গলবেই
ছড়িয়ে দিয়েছি দুই শীর্ণ জীর্ণ লাল বাহু
রাজপথ কানাগলি ভাঙ্গাচোরা রাস্তায়
ধরা দাও ধরা দাও যাদের বুকের মধ্যে
গাঢ় লাল পতাকা উড়ছে।’

দুটি বাহুর আকুলতা সমান ভাবে এসেছে দু’টি কবিতাটিতে। এ যেন বাহু বন্ধনের এক সৌন্দর্যময় নিবিড় বিন্যাস। যেখানে আলতো ভাবে গেঁথে থাকে সমস্ত সত্তায় এক কঠিন সম্পর্কও। ‘থরে-থরে’, ‘শীর্ণ’, ‘গাঁথা’, ‘মাংসল’, ‘বাহু’ ‘আলিঙ্গন’ ইত্যাদি শব্দগুলো গেঁথে রয়েছে কবিতাটির শরীর জুড়ে। কবিতাটিতে ‘দাঁড়ি’ বা ‘কমা’র ব্যবহার রয়েছে খুব-ই কম। খুব স্নিগ্ধ একটি কবিতা ‘তার করতল’। এ রকম ছন্দময় কবিতা পূর্বে লক্ষ্য করিনি আমরা। এবং একই সাথে আমরা দেখতে পাই সম্পূর্ণ কবিতাটিতে একটিও ‘দাঁড়ি’ ব্যবহার হয়নি। যদিও  হুমায়ুন আজাদের এ রকম দাঁড়ি বা কমা ব্যবহার ছাড়া কবিতার সাথে আমরা পরিচিত হয়েছি বহু পূর্বে। খুব স্নিগ্ধ একটি কবিতা। সহজে প্রবেশ ক’রে মনের গভীর থেকে আরও অনেক গভীরে। সরল সুন্দর হ’য়ে উপস্থিত হয় কবিতাটি। অন্যান্য কবিতার মতো শব্দকে  টেনে আনেননি তার অবয়বে; যেখানে জুড়ে ছিল তার গভীর তির্যক সৌন্দর্য। তিথিতে বেড়িয়ে আসা তার সকল সৌন্দর্য যেন প্রকাশ পায় বিচিত্র ভাবে কবিতার সকল পঙক্তি জুড়ে। আধার ও আধেয়’র এক অভূতপূর্ব মিশ্রণ খেলা ক’রে যায় কবিতাটির শরীর জুড়ে। যেখানে সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়েছে রাশি রাশি জ্যোৎস্নার সমন্বয়ে। কবিতাটির সকল সৌন্দর্য তার চার পাশে জমে থাকা অন্ধকারকে যেন নিয়ে যায় পরিষ্কার একটি অনুভূতির দিকে। যেখানে আমাদের মন ও হৃদয় গেঁথে থাকে একই সূত্রে। দশ পঙক্তির এ কবিতাটি যেন হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা কোনো এক অমল পাপড়ির বিচ্ছুরণ। ছোটো এ কবিতাটি একটু পড়া যাকঃ

‘তার করতলে প্লেন ওরে বয়ে যায় সবুজ বাতাস
মাঘের বৃষ্টির পর চাষী আসে বীজ নিয়ে ক’রে যায় চাষ
সবুজ চোখের মতো জন্মে গাছ পাখিরা তাকায়
মাঝির নৌকো দেখে করতল নদী হ’য়ে যায়
অঝোর বৃষ্টির দিনে ব্যালকনি জলে থৈ
করতল হয় তার বৈষ্ণব পদাবলি কবিতার বই
দুর্ভর তিমির রাত্রে করতল দীপ হয়ে জ্বলে
সুপ্ত সিন্ধু দশ দিগন্ত যেনো তার মুঠোর দখলে
যখন উদ্বাস্তু আমি ঘর কাঁথা শয্যা কিছু নাই
করতল শয্যা হয় অলস গেঁয়োর মতো বিভোরে ঘুমাই’
      
তার পরের আর একটি কবিতা ‘সব সাংবাদিক জানেন’। জানার অনেক মানুষ থাকার পরও তিনি বেছে নেন সাংবাদিককে। কবিতাটির প্রথম পঙক্তিতেই প্রকাশ করেন এক তীব্র বাণী; যা শুধু এই কবিতার জন্য নয়, বরং তা হ’য়ে উ’ঠে সমস্ত রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি তীব্র ক্ষোভ। ‘এদেশ নিউজ প্রিন্টের মতো ক্রমশ ধূসর হয়ে যাবে’। যা আজ আমরা বলতে পারি তার সেই উক্তির বাস্তবতা আজ কতোটুকু সত্য ! কবিতাটির পঙক্তির অভ্যন্তরে রয়েছে চমৎকার একটি পঙক্তি। কবিতার পঙক্তিকে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য এ রকম শব্দ চয়ন হ’তে পার; কিন্তু তার নির্দিষ্ট অর্থ নাও থাকতে পারে। সে রকম একটি পঙক্তি হ’লো ‘মিষ্টি মাছ জমিদের সবুজ সীমানা’। তিনি বেছে নিয়েছেন চমৎকার কিছু শব্দ; যা আমাদের অনেক ভালো লাগে। কিন্তু এর অর্থ নিরূপণ করা কি আমাদের পক্ষে সম্ভব ? পাঁচটি শব্দ বসেছে পর পর; সেটা আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। তিনি কেন বেছে নেন এ রকম শব্দ ? যা আমাদের পক্ষে আদৌ এর কোনো অর্থ নির্ধারণ করা সম্ভবপর হ’য়ে উ’ঠে না। কঠিন আর তীব্রভাবে উচ্চারিত হয়েছে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’–এর মতো শব্দ। যা আমাদেরকে চিন্তিত ক’রে তোলে। ‘বরফ আগুন চায় পার্শ্ববর্তী বরফের কাছে’ যা আজোও বুঝে উঠতে পারি নি ? নিশ্চুপ থাকি, ভাবি আর চিন্তা করি, কি তার অর্থ, কি তার মানে ? এই একই কাব্য গ্রন্থে রয়েছে ‘অন্ধ ও বধির  স্যান্ডল’ নামে  একটি কবিতা। যা রয়েছে সৌন্দর্যে ভরপুর হ’য়ে। এখানে এসেও আমরা আবার পাই নতুন কিছু শব্দ। ‘স্বপ্নদল’, ‘কুড়িয়ে’, ‘খররৌদ্র’, ‘ভিখিরি’, ‘খোঁপা’, ‘চুল’, ‘ভেঙে’ ইত্যাদি শব্দ। ‘বিবস্ত্র চাঁদ’ অনেক প্রিয় একটি কবিতা আমার। প্রচলিত শব্দ থেকে বেড়িয়ে এসে কবিতাটিতে সংযুক্ত করেন আরও অনেক নতুন শব্দ; যা কবিতাটিকে ধারণ ক’রে বহুমাত্রিক সৌন্দর্যময়তা। নারী সৌন্দর্যের সকল বস্তুগুলো যখন বিচ্ছিন্ন হ’য়ে প’ড়ে আর সেই জিনিসগুলোই হ’য়ে উ’ঠে কুড়িয়ে নেওয়া করপুটের অমল সৌন্দর্য। কবিতাটি শেষ হয় চমৎকার একটি পঙক্তি দিয়ে ‘নিয়ে এলাম ওই সতী বিবস্ত্র চাঁদকে’। তাহ’লে তিনিও কি খুঁজেছেন চাঁদের মধ্যে সতী আর অসতী ব্যাপারটি ? তিনটি কবিতা ধারণ ক’রে আছে ‘শ্রাবণ মাসের কবিতা’ শিরোনামের কবিতাটি। এখানে আমরা পাই ‘যাচ্ছি’, ‘যদি মরে যাই’ এবং ‘দুদিন ধরে দেখা নেই’ নামের কবিতাগুলো। কোনো এক যাওয়ার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায় কবিতাটি। এ যাওয়া যেনো নিরন্তন; যার থেকে কোনো নিস্তার নেই। এ কবিতাটিতে ব্যবহিত শব্দ আমাদের কাছে আর নতুন মনে হয় না। এ রকম শব্দের মুখোমুখি আমরা অনেক বার হয়েছি। ‘ব্যালকনি’, ‘গৃহ’, ‘যানবাহন’, ‘নিসর্গ’, ‘মাতাল’, ‘গেঁথে’, ‘ঠোঁট’, ‘চুমো’, ‘ইস্টিমার’, ‘ডানা’, ‘বিষণ্ণ’, ‘ঘাতক’  ইত্যাদি। কবিতাটির একটি পঙক্তি আমার কাছে বেশ চমৎকার লাগে। কবিতাটিতে শব্দের পর শব্দ জুড়ে দেওয়া হয়েছে; নির্দিষ্ট কোনো অর্থ ধারণ করতে পারেনি পঙক্তিটি। পঙক্তিটি এ রকমঃ ’যাচ্ছি ঠোঁটের ভেতর যাই চুমো হই বুকের ভেতর যাই ব্যথা বই’। একটি শব্দ থেকে অপর শব্দটির গাম্ভীর্য কোনো অংশে কম নয়; কিন্তু তার একক কোনো অর্থ দাড় করানো সম্ভাব হ’য়ে উঠে না। বিচ্ছিন্ন শব্দের অর্থ হ’তে পারে; কিন্তু কবিতার পঙক্তির একক কোনো অর্থ নেই পঙক্তির মধ্যে। ‘যদি মরে যাই’ আমার অনেক প্রিয় একটি কবিতা। কবিতাটা একটু পড়িঃ ......চলবে