আমি তো তোমাকেই ডাকছি আমার মতো ক’রে;
অনেকদিন ধ’রে এরকম ভাবে কাউকে ডাকিনি সকাল ও সন্ধ্যায়
ডাকলেই যে সাড়া পাওয়া যাবে সেটাও হয়তো ভুলে গেছি মন থেকে;
আজকাল খুব বেশী শূন্যতাবোধ করি মনে-মনে, চারদশক একাই তো চলে
এলাম এই পর্যন্ত, জ্যোৎস্না আর নিসর্গ নদীকে পিছে ফেলে,
আলো ও আঁধারের সকল চিহ্ন আজও স্পষ্ট আমার শরীরে
স্বপ্নের সিঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আজও দেখি সেই প্রিয় মুখগুলো,
চাঁদ আর ফাল্গুনের স্নিগ্ধ সৌন্দর্য মেখে যাঁদের আমি বর্ণনা করেছি পঙক্তির পর
পঙক্তি জুড়ে, নিশীথের বাতাসে যে শোভা খেলা ক’রে আমার কোমল ইন্দ্রিয়ে,
তাঁদের আমি ভুলিনি, স্মৃতির পাতায় আজও যাঁদের অম্লান ক’রে রাখি,
স্পর্শের প্রোজ্জ্বলে ছোঁয়া মিশে থাকে আমার বিবর্ণময় টুকরো-টুকরো স্মৃতিতে;
বেশী কিছু বলার নেই ভাবনার জগত থেকে, মুছে গেছে সময়ের ব্যবধানে
জীবনের সমস্ত উৎসব বিবর্ণ বিষণ্ণতায়, নিজেকে হাজার বার জিজ্ঞাসা করেছি
ভুলে কী থাকতে পারবো তাঁদের ছাড়া, শূন্যতার স্বপ্নজলে
যারা আমাকে নিয়ে গেছে রুপালী নিঃসঙ্গ নিবিড় সন্ধ্যায় !
উজ্জ্বল অপরূপ সৌন্দর্যময় যে আঙুলগুলো কেঁপে উ’ঠে তীব্র ভালোবাসায়;
মেঘ আর বৃষ্টির ফোঁটায় যা মিশেছিল আমার পরম হৃদয়ে আঁখিতারা জু’ড়ে
আমার স্বপ্নের গভীরে যাঁদের রূপান্তর ঘটেছিল চন্দ্রালোকের ঢেউ তু’লে-তুলে
পরিত্যক্ত আমি, মৌলিক ভাবনায়, শূন্যতার গভীরে, অস্তিত্বের শেষ সীমায়
সবাইকে তো ডাকিনি আমি, রৌদ্রমাখা দুঃখের ছায়ায়, বু’কের গভীর থেকে,
তোমাকেই তো ডেকেছি গলার স্বরতন্ত্রি ছিঁড়ে, কণ্ঠনিসৃত তরঙ্গমালায়।