একটু ছোঁয়া দাও, আমার নষ্ট-আবর্জনাময় শরীরে, যে বড় প্রত্যাশী,
অনেকদিন আমি উপলব্ধি করিনি, কী তার স্বাদ, আরক্ত শিশিরে,
ঠোঁটের কোণে, কিভাবে ঢেউ খেলে যায় শরীর থেকে শরীরে, ধীরে-ধীরে
আলিঙ্গনের পর কতক্ষণ কাঁপতে থাকে আমাদের অভ্যন্তরে ভেজা রক্তপদ্মে;
অমল জ্যোৎস্নায় ছুঁয়ে দেখছ তা-কখনও, কেঁপে-কেঁপে স্বপ্নের গভীরে
সব ভুলে গেছি রূপান্তরের স্বপ্নলোকে; আঙুলের কোমল ছোঁয়ায়-গ্রীবায়,
তোমার অপার্থিব হীরকখচিত স্বর্ণের শরীর, ঢেউ খেলানো মসৃণ চুল আর
ঝর্ণাস্রোতে ব’য়ে যাওয়া গোলাপী আভা, যেন ছিটিয়ে-ছিটিয়ে দেখানো পথে
স্বর্ণ ছড়াচ্ছ ইস্পাতমিশ্রিত কঠিন শরীরে-পদ্ম আর জ্যোতির্ময় চোখের কোণে;
আমি হেঁটে যাচ্ছি মধুমতী, শৈলদাহ, বারাসিয়া আর ঘাঘর নদীর পাড় ধ’রে;
চাঁদ আর জ্যোৎস্নার সাথে কথা বলে-বলে নিসর্গপ্রদীপে, আশ্বিনের বাতাসে
মুহূর্তে ছুঁয়ে যাও, ঠোঁটের কোমল স্পর্শে, কেঁপে উঠা আঙুলের শ্রাবণ জলে,
তোমার সাম্রাজ্যেয় তুমি সম্রাজ্ঞী, মাতাল আমি বিবর্ণ মধ্যেদিনে-বিস্তৃত ভূমিতে
যদি চোখ রাখি তোমার নীল ঢেউয়ে, চাঁদ আর নরম ঘাস ফুলের সন্ধ্যাতারায়,
কোমল শিশিরে আমাকে ছুঁয়ে যাও, ঘন বৃষ্টির সন্ধ্যার আকাশে, শব্দহীন বু’কে
গাঢ় রাত্রি এসে মিশে যায় অপূর্ব দুই ঠোঁটের কোণে-ভালোবাসার মসৃণ গল্পে,
দৃষ্টি দাও, উজ্জ্বল রঙে, শব্দমালার গভীরে, প্রোজ্জ্বল রৌদ্রলোকে, গভীর মননে
আমার কঠিন আঙুলে, বিষণ্ণ ভাবনায় তারা খেলা ক’রে যায় নির্মল সৌরভে;
উড়ন্ত দিনের রেখে যাওয়া ভাবনার গভীরে, নিঃশব্দে হারানো কণ্ঠস্বরে বাতাসে,
ছুঁয়ে যাও মায়ানদীর কোমল ঢেউয়ে, ভেঙে পড়া সৌন্দর্যে, ইন্দ্রিয়ের উজ্জ্বল
বিবর্ণ মাখা দিনে, মধ্যে দুপুরে গ’লে প’ড়ে ফাল্গুনের হাওয়ায় আমার মসৃণ
শরীরে-নক্ষত্র পুঞ্জের বিস্ময়ে আঁধারের গভীরে, স্মৃতিরা ফিরে গেছে অতীতে,
ঐশ্বর্যের বিচ্ছেদে রোপণ করি নতুন স্বপ্ন, শ্রাবণের ধারায় মিশে থাকে কোমল
বাহু মুহূর্তের নিশ্বাসে, কষ্ট পাব বু’কের কোণে জমানো গাঢ় দুঃখে-দীপ্ত স্বরে,
তার পরও বলি, আমাকে ছুঁয়ে যাও নির্ঝরের জ্যোতির্ময় আলোয় সুসম্পর্কে।