আমি কারে লয়া করুম এ ঘর!
সোনার সংসারখান বুঝি খাড়ায়া
আছে ভাঙা চালের ঠাঁটের উপর।
আমি কারে গিয়া জিগামু কও;
সে ক্যান পুণ্যিমায় চান্দের পানে
চাইয়্যা থাকে চাতকের মতোন।
ক্যান সে তাকায় না বৃক্ষের পানে-
কতকাল ঝিম ধরে আছে এ পরী
উঠানের নিমরঙা চালতার ডালে।
গেরামের বেবাক লোকে কয়;
তুমি রসিক আছিলা একদিন,
তয়,এমন নিরস হইয়্যা- আইজ
ক্যান মুছো চোখ,পরাণের ঘাসে!
তোমারে একলা ফালায়া আমি-
উনানের তাপ সয়,টেকে'না মন,
এই বুঝি আইন্ধার পাড়ি দিয়া তুমি
থুয়া যাইবা আমার নিছক স্বপন।
আমার কইতে শরম নাই আইজ;
ছোট এই দেহ-ঘরে নাই কোন ডর,
উড়াল দিয়া যাও এ সংসার থুয়া
যেই দ্যাশে নাই কোন বাড়ি-ঘর।
কি ছিলো দ্যাখনের,হরিণের তাজ!
সিংহের দু'পাটি চোয়ালের ভিড়ে;
সংযত বিঙ্গ ডাহুকের দাঁত,
মধ্যাহ্নবেলা অসাড় পা মেলে সেই-
তুমি গেয়েছিলে সুন্দরি গীত।
তোমার বুঝি তাও মনে নাই আজ!
পরনের হলুদ-শাড়িখান পরি'না আর;
উঠানের ঘাসে লেগে কচুপাতা রঙ,
আইজ তোমার চিবুক ছুঁয়া দ্যাখি;যেন
আমার সেই সংসার নাই বুঝি আর!
দ্বগ্ধ-ঘরের খুঁটি ধরে খাড়ায়া আছি-
তুমি নিথর ঘুমায়া আছো চিতার উপর!
তোমার আর নাই দিন-তারিখের পাঠ;
এক কোটি দিনে হয় হাজার বছর,
আইজ থিইক্যা তুমি এই পরাণেরি ঘাস
বাইন্ধ্যা রইলো এই শাড়ির আঁচল।