একটি নীলিমা এখন দু’চোখের মাঝে জমে—
তুমি সীমান্তহীন সৌরভ, আমি মৃত্তিকার স্তব্ধ প্রতিধ্বনি।
তবুও প্রতিটি অক্ষরপাতায় জেগে ওঠে অদৃশ্য লিপিকর,
যে লেখে অগ্নিশ্বাসে প্রেমের অমোঘ ব্যাকরণ।
দিনগুলি ঝরে পড়ে শিউলি-শাখার মতন নিশ্চুপ,
প্রতিটি মুহূর্তে তোমার নামের মিশ্রণ—
যেন অন্ধকারে জোনাকির জটিল আলকেমি,
যে আলোয় জ্বলে ওঠে দিগন্তের অসমাপ্ত গান।
এই দূরত্ব কি শুধুই চৈত্রের খড়ের আগুন,
নাকি প্রাচীন পাণ্ডুলিপির বিস্মৃত প্রান্তর?
তবুও তোমার ছায়া নামে আমার রাতের ক্যানভাসে,
যেভাবে নিশীথের শিশির জমে ধান্যের শীষে— নিঃশব্দ, অনিবার্য।
কখনো ভেবেছি, এই ফাঁক
সময় নয়, শুধুই এক ধরনের অপেক্ষা—
যেমন নদী অপেক্ষা করে সাগরের গর্ভে মিশে যাওয়ার,
আমিও তেমনই অপেক্ষায় রবো, যতক্ষণ না
তোমার পদধ্বনি ছুঁয়ে যায় এই নিসর্গের রূঢ় সমীকরণ।
সেদিন আকাশ হবে নীল শঙ্খের খোলস,
আমাদের কথাগুলো ফুটবে শালুকের মতন নির্মেদ—
এই দূরত্বের গর্ভে জন্মানো সমস্ত ব্যথা, সমস্ত ঊর্ধ্বমুখী যন্ত্রণা
পরিণত হবে এক মহীরুহে, যার ছায়ায় লুকিয়ে থাকবে
অনন্তের প্রথম চুম্বনের উষ্ণতা।
তখন এই নদী, এই বালি, এই রাতের অনালোক
মিলে যাবে তোমার চোখের অক্ষয় নীলিমায়—
যেখানে প্রেম শুধু শব্দ নয়,
একটি মহাজাগতিক অনুরণন,
যে অনুরণনে ধুয়ে যাবে সকল ফাঁক, সকল ছিদ্র—
আর আমরা হবো দু’টি তারা, একই নক্ষত্রপুঞ্জের অদম্য দীপ্তি।