নিস্তব্ধ নিশীথের সুগভীর নিঃশ্বাসে, যখন চন্দ্রালোকের রূপালি ঝলকানি
মিশে যায় নক্ষত্রবিথীর অতলতম আঁধারের নিবিড় আলিঙ্গনে,
প্রাচীন অট্টালিকার ভগ্ন প্রাচীরের ছায়ায় তক্ষক তার মৃদু আহ্বান তোলে—
তার সেই সুরেলা প্রতিধ্বনিতে থমকে যায় কালচক্রের অনন্ত প্রবাহধারা।
তার করুণ কণ্ঠে লুকানো বিষাদময় একাকিত্বের সুগভীর সুর,
নিঃসঙ্গ নিশার নিস্তব্ধতা ভেঙে উঠে সে নিজস্ব মায়াবী ছন্দে;
অতীতের স্মৃতিচিহ্ন আঁকে ধূসর প্রাচীরের ধূলোমলিন পৃষ্ঠপটে,
তার ধ্বনিতে জাগে হারিয়ে যাওয়া দিনের বিস্মৃত গল্পগাথার অনুরণন।
চন্দ্রালোকে দীর্ঘ ছায়া লুটায় তার ক্ষুদ্র অথচ অপরূপ দেহকাঠামোতে,
সময়ের অমোঘ চিহ্ন এঁকে যায় তার আঁকাবাঁকা গমনপথের প্রতিটি ধাপে;
সে জানে নিশীথের গুপ্ত রহস্য, গহীন আঁধারের অব্যক্ত কাহিনী সব,
তবুও অবিরাম ডেকে যায়, জানায় তার অন্তর্গত সত্তার নীরব ভাষা।
তার সেই সুরেলা আহ্বানে জেগে ওঠে নিঃশব্দ হৃদয়ের সুপ্ত স্পন্দন,
স্মৃতির ধূসর পথে একাকী আত্মা হেঁটে চলে অবিরাম, অশান্ত চিত্তে;
মধ্যরাতের তক্ষক, তুমি কি জানো, তোমার সুরে জাগ্রত হয়
কত অজানা, অব্যক্ত অনুভূতির নিঃশব্দ কাব্যের পরম রহস্য।
সময়ের অক্ষয় প্রহরী, নীরবতার নিরবচ্ছিন্ন সাথী তুমি,
তোমার সুরে বাঁধা থাকে নিশীথের অদৃশ্য সিম্ফনির অপূর্ব মাধুরী;
মধ্যরাতের তক্ষক, তোমার দীর্ঘ ছায়ায় লুকিয়ে থাকে
জীবনের অনন্ত রহস্য, অমৃতের গভীরতম প্রণয়ের স্পর্শ।