তুমি আর আমার চোখের পাতায় বিশ্বাসের অরুণ রৌদ্র নিয়ে দাঁড়াবে না,
আকাশের মনোরম নীল স্রোতের ভেতর যে সোনালি ঘুঙুর বাজতো,
তার আওয়াজ আজ থেমে গেছে—মেঘেরা কেমন যেন বিষন্ন, রক্তশূন্য,
পথের ধারে শুয়ে আছে বিবর্ণ শেষপাতাগুলো, মৃতপ্রায় দীর্ণ কাব্যকথা।

সন্ধ্যার আকাশে অলস ঈগলের ডানা উঠে গেছে ক্লান্তির ছায়ায়,
চারিদিকের ধূসর গাছের পাতায় আছড়ে পড়ছে নিস্তব্ধতা—
আমার মন আজ শূন্যতার করুণ সঙ্গীত বাজায়
তুমি জানো না, সে সুর আর কোনও মানুষের কণ্ঠে জাগে না।

হয়ত একদিন তোমার চোখ আমায় ভুলবে, ছায়া যাবে মুছে
আমার ঠোঁটে গুমরে উঠবে নীরব কথারা—স্বপ্নের মৃত স্মৃতিদেহ
আমি তবু তোমাকে ভালোবাসব, চিরকাল— এই ভাঙা বিশ্বাসের ভিতে
মাটি ভিজে গেছে অকারণে, ধুলোমাখা নক্ষত্র ঝরে পড়েছে সন্ধ্যার কবরে।

জীবন আজ ফিকে হয়ে গেছে, তবু যুগ যুগ ধরে বয়ে যাওয়া নদীর মতো
এই মনের প্রতিটি ভাঁজে জমে আছে তোমার ব্যথার ফেলে আসা রেশ
আমি জানি, তোমার পাশে বসে থাকব ক্ষয়িষ্ণু ভোরের অপেক্ষায়,
যেন খয়েরি পাতাদের মৃত্যুর মধ্যে জীবন খুঁজছি— কার্নিশের গা বেয়ে ঝরে পড়া
সমস্ত বিশ্বাসহীনতার মাঝেই রয়ে যাবে একান্ত ভালোবাসা।

তুমি হয়ত আর কখনো আমার দিকে ফিরে দেখবে না,
তবু আমি পথে চলব, কাঁটাপথে কিংবা রক্তাক্ত শিকড়ে—
একদিন হয়ত জানবে, এই ম্লান পৃথিবীর সমস্ত শূন্যতার অন্তরে
কেউ একজন নিঃশব্দে ভালোবেসে গেছে,
ভালোবেসেছে চোখের জল শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত— অন্ধকারের শেষ ছোঁয়াও যেদিন থাকবে না।