ওরা দল বেঁধে আসে, তিন পাঁচ কিংবা সাতের দল।
কিশোরীর মা বারবার ঈশ্বরকে ডাকেন,ঈশ্বর.,হে ঈশ্বর.,
রাত বাড়লেই মন্দিরের পুরোহিতও ঘুমাতে যান ঘরে।
কেউ আসে না বাঁচাতে, না-ঈশ্বর, না-মানুষ।
রাতের বেলা ঘুম পায় না কার, ঈশ্বরও ঘুমান হয়তো,
কিংবা মন্দিরের দরজার চাবি থাকে পুরোহিতের পাহারায়।
কিশোরীর মা'টা আঁচল পেতে ভিক্ষা চান শেষমেষ,
তিন পাঁচ কিংবা সাতের কাছে
"আমার মেয়েটা ভীষণ ছোট,
তোমরা একজন একজন করে যাও বাবারা"
মাকে ভিক্ষা দেয় ওরা, একজন একজন করে..,
একজন, তারপর আরেকজন, এভাবে তিন পাঁচ কিংবা সাতজন।
'ধর্ষণ' এবং 'পালাক্রমে' দুটো শব্দের শিরোনাম হয় পরদিন,
পত্রিকায় রেডিও টিভিতে মানুষের মুখে মুখে হাটে বাজারে।
নতুন আরেকটা সুসজ্জিত দল আসে, তিন পাঁচ কিংবা সাতের।
অন্য একটা মেয়ের বাবাকে তুলে নিয়ে যায় ওরা,
গহীন জঙ্গলে নিয়ে তার বুকে পিঠে খোঁজা হয় অবৈধ অস্ত্র,
তার কন্ঠনালীতে পাওয়া যায় একটা দূরপাল্লার মিসাইল।
হিমালয় থেকে সুন্দবনের মাঝ বরাবর হঠাৎ জেগে ওঠা দ্বীপে,
সেই মিসাইল ছুঁড়ে দিলে এক নিমেষে খুলে যাবে মিথ্যে গালগল্পের কাপড়,
এই বিষন্ন দ্বীপে মাদক আর অস্ত্রের পয়সায় কারা বানাচ্ছে প্রাসাদ.?
নতুন পাড়ায় উঠছে ঘর, অন্দরমহলে নতুন নতুন মেয়েছেলে,
বেহুলার বাসর ঘরে ঢুকে যাওয়া সাপের মতো, কোন ফুটা দিয়ে
গনতন্ত্রের রাজ-প্রাসাদে ঢুকে যাচ্ছে মাদক আর চোরাচালানের বখরা.?
সব জেনে যাবে মানুষ, যারা প্রতিদিন দাঁতে দাঁত চেপে ব্যার্থ হয়।
মেয়েটার ফোন বাজতেই থাকে বাবাটার বুক পকেটে,
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বাবাটা যখনই বলে ওঠে, 'হ্যালো..'
ঠিক তখনই, ঠিক তখনই ওপার থেকে সাঁই সাঁই করে ছুটে আসে বুলেট,
একটা একটা করে বিঁধে যায় বাবাটার বুকে,
গনতন্ত্র, আইন আর আত্মরক্ষার ক্ষিপ্ত উল্লাস শোনা যায় সেখানে।
দিশেহারা মেয়েটা ফোনের ওপার থেকে শব্দ করে বলে উঠে,
' বাবা তুমি কাঁদছো যে..'
বুকের আরশ কেঁপে উঠে সেই শব্দে, জমা হয় কবিতার খাতায়,
দুই চার কিংবা ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন অসহায় শব্দ।