আমি যে তোমার কেউ আর নই  
এই ব্যাপারটা  ভুলে যাই প্রায়ই।
এখনো অভ্যাস মতো প্রতি ভোর বেলায়
তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকি বারান্দায়।
চায়ের কাপটা নিয়ে
এসে  বুকের  পাশে
দাঁড়াবে তুমি হালকা পায়ে।
হঠাৎ কোনো সময়ে
ঠিকই তুমি আসো।
দূর কোনায় একলাই এসে বসো।
অনাসন্ন শূন্যতায় দৃষ্টি তোমার,
আমাকে অনায়াসে ভান না দেখার।
আমার ছায়া নিয়ে আনমনে নাড়াচাড়া করো।
তোমায় কি ভীষণ ছুঁতে ইচ্ছে করেনা আমারও?
যে রুমাল দিয়ে থামাতে চেয়েছিলে বুকের ক্ষতের রক্ত,
আজো আঁকড়ে আছি  হাতের মুঠোয় ;হোকনা পরিত্যক্ত।
আমার মৃত্যু হয়েছিল মানবের  পৈশাচিক আঘাতে।
তার উল্লাস আর তোমার আর্তনাদের সংঘাতে !
ওই রুমালে  ছিল  তোমার গায়ের গন্ধ অবশিষ্ট।
বাঁচতে  চেয়ে ছিলাম প্রচন্ড, কিন্তু  হায় অদৃষ্ট।
অতীতের দাবীতে আমার জন্য একবার নাহয়
নিভৃতে করলেই একটু তোমার অশ্রুর অপচয়।
তাই বারান্দায় বসে থাকি তোমার প্রতীক্ষায় ,
আমার অস্তিত্ব তোমার উপলব্ধির আশায়।
সিঁদুর আঁকা প্রতিমার মতো তোমার মুখ।
নববঁধুর ঠোঁটের কোনে অপ্রত্যাশিত সুখ।
বাতাসে কেঁপে উঠে  গাছের  পাতা আমার দীর্ঘশ্বাসে।  
তোমার  আঙুলের ছাপ উছলে পড়া চায়ের কাপে অবশেষে।
আমার অদৃশ্য  ছায়া তাই ছুঁয়ে খোঁজে চেনা উত্তাপ।
তোমার অশ্রু অঝোরে ধুয়ে দেয় হৃদয়ে জমা সব অনুতাপ।  
আঁচল দিয়ে চোখ মুছে ধীর পায়ে তুমি ফিরে যাও।
আবার আমি সেই নিবিড় মুহূর্তের প্রত্যাশায়,
বাতাসের কাছে আমার অস্তিত্বের কথা যদি জানতে চাও।