প্রথমেই শুনে নিন, এ ধৈর্যের পদ্য
এই কবিতার শব ঘিরে ধৈর্যের জয়োৎসব
নিকট অতীতেও, এই শহরের সুনিপুণ মঞ্চ দাপিয়ে সেদিন ছিলো
ধৈর্যের আস্ফালন…
ধৈর্যের জবর-দখলে বিপন্ন কিছু প্রাণ,
ধৈর্য ওদের ঘিরে টেলিফোনের মিথ্যে আশ্বাসে, নগরের উদ্বেগে,
ধৈর্য পিলখানার পথ আগলে সুদক্ষ মহড়ায়,
সহকর্মীর উৎকণ্ঠিত প্রতীক্ষায় মিশে ধৈর্য,
সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ধৈর্য ককপিটে বসে!
টিভির স্ক্রল জুড়েও সেদিন ধৈর্যের নাচ,
ধৈর্য কাঁপায় সুযোগসন্ধানী রিপোর্টারের মাইক্রোফোন,
ধৈর্য কাঁদে শাসনের ব্যর্থতায়––এবং ভাষণের দ্ব্যর্থতায়,
ধৈর্য আলোচনার টেবিলে শুয়ে ক্লান্ত;
শেষমেষ ধৈর্য লুকালো মুখ স্থৈর্যের বুকে,
অতঃপর স্পর্ধায় জাগলো শ্বাপদের দল, আর
আকাঙ্খিত খুনের উল্লাসে হাসলো পরিচিত শকুন।
এতো ধৈর্য কোথায় কে দেখেছে কবে?
চারিদিকে থ্যাঁতলানো শরীর ছুঁয়ে ধৈর্য, ছিটকানো মগজ আর
বিস্ফোরিত চোখের দৃষ্টিতে ধৈর্যের অট্টহাসি
ধৈর্যেরা এমনকি সীমান্ত পেরিয়েছে কোন ফাঁকে!
ধৈর্য ব্যস্ত, খুব ব্যস্ত আছে লাল টেলিফোনে,
ধৈর্যের বাতাস ঘিরে কানাকানি, ধৈর্যের ঘর ভরে ফিসফাস
ওই দ্যাখো কামরাঙ্গীর চরে জেগেছে ধৈর্যের লাশ!
যে ধৈর্যেরা অন্তহীন চেয়ে ছিলো দিদৃক্ষায়, একটি দিন
বেঁচে থাকবার আকুলতায়,
এখন প্রশান্ত শুয়ে মৃত্যু-অবসন্নতায়,
অভিমানে––হায়––গভীর গোপন অভিমানে
ভেঙেছে ধৈর্যের বুক!
ধৈর্যের ইউনিফর্ম চিরে এখন নগ্নতা
ধৈর্যের শরীর ব্যঙ্গ করে উপহাস।
পুরো দুইটি বীভৎস দিন, বুভুক্ষু রাত, আর
অনন্ত অপেক্ষার প্রহর ছিন্নভিন্ন হয়েছে ধৈর্যের তান্ডবে
ধৈর্যের কফিন আটকে সাতান্নটি পেরেক––
ধৈর্যে রক্তাক্ত ফেব্রুয়ারি
ধৈর্যে বিপন্ন স্বদেশ!
আমাদের মানচিত্র ঘিরে ধৈর্যের কাঁটাতার,
বিবেকের পতাকা ধৈর্যে ফালা ফালা।