নিরস্ত্র পদাবলী

নিরস্ত্র পদাবলী
কবি
প্রকাশনী অপেরা পাবলিকেশন
সম্পাদক (প্রকাশক) এ আর এম তারিক সালাহউদ্দিন
প্রচ্ছদ শিল্পী নওয়াজ মারজান
স্বত্ব হেলাল মুহাম্মদ খান
প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সর্বশেষ সংস্করণ ১ম
বিক্রয় মূল্য ২০০ টাকা
বইটি কিনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

পুরো শিরোনাম: 'নিরস্ত্র পদাবলী: পঁচিশে ফেব্রুয়ারির কাব্য কথন'

লেখক-সাংবাদিক মোস্তফা মামুন সুপাঠ্য একটা মুখবন্ধ লিখেছেন, যেটা মূল বইয়ে আছে। বাংলা-কবিতা ডট কম পাঠকদের জন্যে আমি নিচে আমার, অর্থাৎ কবির লিখা 'শুরুর কথা'টা তুলে দিলাম।

ভূমিকা

পদ্যে কি ইতিহাস লিখা চলে?

হয়তোবা, তবে কাজটা বড়ো কঠিন। ইলিয়ড অথবা ওডিসির মতো মহাকাব্যিক ইতিহাস লিখতে গেলে কবিকে হোমারের মতোই বিচক্ষণ, সত্যদর্শী, ও স্বাপ্নিক হতে হবে। মিশ্রণটা সহজ নয় মোটেই।

ঘরের কাছের উদাহরণ খুঁজতে গেলে বিপ্রদাস পিপলাই-এর মনসামঙ্গল কাব্যের কথাও বলা যায়। পঞ্চদশ শতকে চাঁদ সওদাগরের সেই বাণিজ্যপথের বিবরণ আর সপ্তগ্রাম থেকে হুগলি-সরস্বতী নদীর দখিন অববাহিকার বেশ একটা বাস্তব ছবি তুলে ধরতে হয়েছিল বিপ্রদাসকে তার লেখায়। সে সময়কার সংস্কৃতি আর লোকজ ইতিহাস তো বটেই, সেই সাথে ভূগোল আর বাণিজ্য দুটোতেই অগাধ দখল নিতে হয়েছিল কবিকে।

আমি ভৌগোলিক নই, বাণিজ্য জানি না মোটেই, যদিও ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ অনেক। এইটুকু সম্বল নিয়ে আর যাই হোক, কাব্যে ইতিহাস লিখা চলে না।

তা সত্ত্বেও, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারটা আলাদা। ২০০৯ এর ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারির সেই নারকীয় অন্তর্ঘাত, শাসনিক ব্যর্থতা, আর অপরাজনীতির স্বরূপ যাদের সামনে দৃশ্যমান হয়েছিল, তাদের অনেকের কাছেই হয়তো জীবনের পরিষ্কার দুইটি বিভাজন: পিলখানার আগে ও পরে। খুব কাছ থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের বেশ কিছুটা দেখা ও বোঝার সুযোগ আমার হয়েছিল, যার কিছুটা পর্যালোচনা এই কাব্যপ্রচেষ্টার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে।

২০১০ আর ২০১১ সালের বিভিন্ন সময়ে লিখা আমার এই পদ্যগুলো পিলখানায় আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতারই একটা ‘সৈনিক প্রতিক্রিয়া’ও বলা চলে। সাহিত্যের বিচারে এদের কোনোটিকে শোকের অণুকাব্য বলা যাবে, আর কোনোটি হয়তো স্রেফ ক্ষোভ আর অন্তর্দহনের শাব্দিক প্রকাশ।

এটাও হয়তো সত্যি যে, ঠিক পদ্যে নয়, সুকান্তের মতো কোমল-কঠোর গদ্যেই হানতে হবে সেই রক্তাক্ত ইতিহাস। তা সত্ত্বেও এই যাত্রায় কাব্যিক প্রচেষ্টাটা জারি থাকুক। পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে অনেকেই লিখছেন এবং আশা করি লিখে যাবেন। সেটাই কাম্য।

এই পদ্যগুচ্ছের পাঁচটি কবিতা ২০১২ এর বইমেলায় প্রকাশিত আমার প্রথম কবিতার বই, 'হৃদয়ের রাজপথে'-এ স্থান পেয়েছিলো। সময়টা এমন, যখন 'ডাকিনী' তার থাবা কেবল মেলে ধরছে দেশময় চাপিয়ে দেয়া মিথ্যাচার, হত্যাচার, আর দ্রোহিক নীরবতার পূর্ণ সুযোগ নিয়ে। কবি আর কবিতারা তখনও জেগে নিশ্চয়ই––লোকান্তরিত নয়, তবে আমার মতো অনেকেই হয়তো নানান বিধানে ‘দ্বীপান্তরিত'।

এই এতো বছর পরে সে সময়কার লেখাগুলো ছুঁয়ে দেখতে গিয়ে আমার মনে হলো যে এদেরকে একসাথে গুছিয়ে নিয়ে আসাটা দরকার, কিছুটা হয়তোবা ইতিহাসের প্রয়োজনেই। অপেরা পাবলিকেশনের প্রকাশক তারিক সালাহউদ্দিন-এর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দক্ষতায় এই কাজটা এতো চমৎকার দ্রুততায় সম্পন্ন হলো। পুরো টিমকে ধন্যবাদ, এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।

এই সুযোগে আমি ২০১২ সালে পাঠসূত্র প্রকাশনী, বিশেষ করে রাজীব নূর এর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও স্মরণ করতে চাই। আমার তৎকালীন ক্ষুদ্র প্রয়াসের গ্রন্থবদ্ধ সম্পাদনায় তার অবদান ছিল অসামান্য, সেজন্যে তার প্রতি বুকভরা শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা। এখনকার পরিমার্জিত/পুনঃসম্পাদিত কবিতাগুলোর ভুল-ত্রুটি তাহলে আর তার থাকলো না, পুরোটাই আমার।

সবশেষে একটা প্রশ্ন হয়তো থেকেই যাবে। এই সব ‘নিরস্ত্র পদাবলী’র কোনোটাই কি পিলখানার নির্মম হত্যাযজ্ঞ অথবা তার অবসানে নিদারুন রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার বিচারের গণদাবিকে জোরেসোরে তুলে ধরতে পারবে? বাংলাদেশ এবং তার সেনাবাহিনী কি তাদের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবার জন্যে প্রকৃত উদ্যোগী হবে?

হয়তোবা না, আর সেটাই ভয়। সে যাই হোক, কবি অথবা সৈনিক কাউকেই ক্লান্ত হলে চলে না। শব্দযজ্ঞ অটুট থাকুক। কবিতা যখন দুরন্ত ঘোড়া, কবি তখন তুখোড় তীরন্দাজ!

আমাদের কলমেরা দুৰ্ভেদী সেনা হয়ে হয়ে উঠুক, স্বৈরাচার নিপাত যাক বিশ্বময়।


হেলাল মুহাম্মদ খান
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎসর্গ

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ এবং তৎপরবর্তী সময়ে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ সামরিক, আধাসামরিক এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের পরিবার পরিজন এবং শুভানুধ্যায়ীদেরকে।

কবিতা

এখানে নিরস্ত্র পদাবলী বইয়ের ১৫টি কবিতা পাবেন।

   
শিরোনাম মন্তব্য
অনেক সয়েছি রৌদ্র
আশি ফুট ঘরে
উদভ্রান্ত যুবকেরা শোনো
একটি অর্থহীন কবিতা
একটি নিস্পৃহ জনপদের অমোঘ পরিণতি
একটি পুরস্কারযোগ্য সফলতার গল্প
এপিটাফ
কবিতা তোমাকে চাই
কারাগারের বেড়ালটা
চারিদিকে বর্তমানের দেয়াল
তোমাদের প্রস্থান
ধৈর্য বন্দনা
শোক দিবস চাই না
ষড়ঋতুর পদ্য
সহযাত্রী