স্বপ্নেরা কেঁদেছিল আত্মাহুতির পথে
উৎসর্জন: আবু মহসিন খান (আত্মহননকারী জনৈক ব্যবসায়ী)
নিঃসঙ্গতাকে করেছি পর্যবেক্ষণ
সময়ের অসীম শুন্যতায়,
ভালোবাসার দীনতা-ভরা দিনগুলোয়
রাহুগ্রস্ত প্রেম ছিল প্রহসনমাত্র—
আয়ু বাড়ে শুধু দীর্ঘশ্বাসে,
প্রবঞ্চনার এক জীবন ধরে।
তোমরা চলে যাওয়ার পর,
আমি নিঃশব্দে হেঁটেছি সহস্র পথ
লক্ষ্যভ্রষ্ট গন্তব্যে—
জীবনের যবনিকায় অপ্রাপ্তির অশ্রুগুলো
ঝরে পড়ে নির্ঘুম, অপার রাত্রিতে
নিরাশার বরফ হয়ে।
একদিন যে ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি
এঁকেছিলাম কংক্রিটের আরক্ত হৃদয়ে,
সেও হয়ে উঠেছিল অসহায়, বিষণ্ন, প্রেমহীন।
উৎকট একাকীত্ব, বেদনার মতোই
গ্রাস করেছে আমায়—
ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার আবহে
জলাঞ্জলি দিয়েছি ঈষৎ-ত্যাগের রোজনামচা।
স্বপ্নেরা আত্মাহুতির পথেই কেঁদেছিল—
নিরালায়, নিঃশব্দে।
এভাবেই হেরে গেছি বারেবার
অন্ধ-প্রজন্মের কাছে।
জেনেছি—ঘামঝরা শুক্রাণুর মিলন
এই ভবে বেঁচে থাকার
নিখাদ এক অসার প্রয়াস!
অতঃপর ঘনীভূত অন্ধকারে
হতাশারা জড়ো হয়
এন্ড্রয়েড কোলাজের কোণে।
ভাবনার টেবিলে প্রস্ফুটিত হয়
টলটলে হলুদ কিছু নক্ষত্র—
নৈশভোজে আঁতকে ওঠে
অন্তহীন ভাবনার চাঁদ।
অভিধানের অতৃপ্ত উচ্চারণগুলো
মুহূর্তেই কাতর হয়ে পড়ে।
অষ্ফুট ঠোঁটে প্রেম ঝড় তোলে
সঙ্গমতৃষ্ণা হয়ে।
ঢেউয়ে ঢেউয়ের নোনাজলে ভিজে
শীৎকার পোড়া নদী,
ভয়ার্ত চোখ ফিরে তাকায়
ঋণজমে থাকা খেরোখাতায়...
তখনই হঠাৎ—
একটি পিস্তলের গুলিতে পরাজিত হয়
প্রতারিত মরণব্যাধি;
ব্যাধিগ্রস্ত জীবন।
আর আমি তাকিয়ে দেখি
পৃথিবীর করুণ উপত্যকায়
স্বয়ং দীর্ঘশ্বাসের অভিশপ্ত মৃত্যু—
নৃশংস আত্মাহুতির
সরাসরি ভার্চুয়াল সম্প্রচার...।