হ্যাঁ—
আমি মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তোমার শহরে কেউ-ই আর ভালো নেই,
আলো নিভে গেছে অলিগলির মুখে,
মানচিত্রজুড়ে ছায়া ফেলে রেখেছে—
মেঘছায়ার জমাটবদ্ধ অন্ধকার।

জনপদে জনপদে—
মৃত্যুর মিছিল,
শবযাত্রার খই ফোটে আহাজারিতে,
বুকে জমে ওঠে বেদনার বরফ;
আজিমপুরে থেমে গেছে পান দোকানির গল্প,
ধানমন্ডির লেকে আর ফিরে আসে না
রংতুলি হাতে প্রতিচ্ছবি আঁকিয়ে।
ভাগাড়ের দুর্গন্ধে—
আমার শ্বাস আটকে আসে।

উচ্চবিলাস এখন ব্যাধির নাম!
হাতিরঝিলের দাঁড়কাকেরা ওঁৎ পেতে—
চুষে নিচ্ছে হ্রদের স্তন ও যোনির চেতনা,
ছুড়ে ফেলছে আবর্জনার ডাস্টবিনে—
এ এক লজ্জার ক্রান্তিকাল!
মনলোভ লালসার কাছে পরাজিত সভ্যতা,
থুবড়ে পড়া নৈতিকতা,
আর ফেসবুকের টাইমলাইনে ঘুরে বেড়ায়—
মুখোশের মিছিল আর নগ্নতার স্কেচ।

ক্রান্তিকালে আমি গৃহবন্দী।
একপাশে মহামারী, অন্যপাশে বিলাসিতা—
স্বপ্নেরা গলে পড়ে,
আর মনুষ্যতার পচন ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে।
কেউ আত্মবিসর্জনে,
কেউ পৈশাচিক উন্মাদনায় বিকারগ্রস্ত।

বুনোহাঁস ভুলে গেছে ঢেউয়ের গান,
পাতিহাঁস, রাজহাঁস দিশেহারা!
শহুরে লোভে ঘোলা হয়ে ওঠে হ্রদ,
পানকৌড়ির ঠোঁটে লেগে থাকে বিষাক্ত ফেনা।
রোদে পোড়ে খড়কুটো,
শহরের শরীরে সূর্যও এখন
দাহজ স্মার্টবম্ব!

তাই বলি—
আমি আর ভালো নেই,
ভালো নেই এই বিপন্ন নগরের কেউ।
আমাদের ছায়ার নিচে
ঝরে পড়ছে সভ্যতার ছিন্নপ্রায় পাতা...
এই শহর—
এখন কেবলই এক বর্জ্যজন্মা জ্যোৎস্নায়
মুখোশের অন্ধকার।