যোগাসনে বসে কবি
        আঁকছে যেন ধাতার ছবি
খুঁজে না আর পায়
                কেমন করে খুঁজবে তাঁরে পায়না চোখের সায়।
কবি বসেন নিজের ধ্যানে,
        আঁকেন ছবি নিজের জ্ঞানে
বাস্তবতা মেখে চলেন তিনি;
                আঁকেন তিনি সকল ছবি তাঁর কাছেতে ঋণী।

অপার মহিম গান
        ভাবেন কবি জানেন কবি সব বিধাতার দান।
আল্পনা তার ছিলো যেটুক সুখে
                        বলেন কবি তার মনেরি মুখে,
তাই নিয়ে তার লিখা
                আঁকেন তিনি জীবন আসন শিখা।
অবশেষে যোগাসনে বসে
        দেখতে তাঁরে বসেন কবি কষে,
যদি তাঁহার ইচ্ছা জাগে
                        সেই বাসনা কবি মাগে
জীবন গানের তরে
        কবি চলেন ভেবে ভেবে আপন অবসরে।

দৈবলোকের আবির্ভূত জ্ঞান যে তাঁহার নাই
                                তবু রচেন অমর কাব্য তাই;
কোথায় পরম সত্ত্বা বাজে
কোথায় আছেন তিনি সাজে
                সেই তো কবির কবিত্ব হায়
ভাবনা শুধু ধায়।
শুনে তিনি বুঝতে পারেন তার কবিতার চল
        প্রশংসা যে আনে কবির মনের তরে বল।
তাই দিয়ে সে রচে শুধু কবিতা সম্ভার
আছে যে গুণ তার।
                        লিখেন তিনি এক বিধাতা
ভরে গেছে আপন পাতা
এখন কেবল ধুঁকে
        লিখা যে তার আসেনা আর আগের আপন সুখে।

তাই সে এমন ধ্যান
                ভরা কলসি ভরবে কি আর নিজ সলিলে জ্ঞান;
ভরা কলসি করতে খালি
        কবি ঢালেন নিজের ডালি
আসেন যোগাসনে
                আসে জানি প্রশান্তি আজ তার নিজেরি মনে।
হয়না দেখা তাঁরে
        যিনি থাকেন চোখ অগোচর আলো কি আঁধারে।

ফিরে কবি নিজের কাজে
                যোগাসনে কাব্য বাজে
লিখেন তিনি নব
        এক বিধাতা আঁকেন তিনি আঁকেন ক্ষণিক ভব।
তখন তিনি ছন্দ দিলেন এঁকে উপমা
                                 আর আঁকিলেন এক বিধাতা জানি যে নাই কমা।
মধুর কথা লিখতে গিয়ে
        লিখেন তিনি আসন নিয়ে
আবার বসেন যোগাসনে
               আন্দোলিত কথা আসে তাহার নিজের মনে।

এবার ফিরেন কাব্য শেষে
                কবি আসেন মানুষ বেশে
কবির ভূষা ছেড়ে
                        তার পাঠকে দিলো সাড়া নিলো হৃদয় কেড়ে;
কে না ভালোবাসে
        কবির পেশা ধাতার মতন বাণী শুধু আসে।
অবশেষে বোঝেন তিনি আজ
কেন ধাতা আঁকেন কারুকাজ
                                 কেন ধাতা দিলেন না আর দেখা
মানুষ তাঁরে চিনে গেলে হবে কি রূপ শেখা।
                ভাববে লোকে নিছক সকল গান;
ভয় কেটে সব করবে অনুদান।

কবির দিকে চেয়ে লোকে ভাবে এসব তথা
                        এ আর নিছক এমন কি বা কথা;
সকল দেখে কবি বোঝেন তাহার ধাতা আজি
        ধরেন কবি বাজি।
সূর্যালোকে স্নান করে হায় ছোটেন লিখার কাজে
                রাখেন তাঁরে মনের ভাঁজে।

জীবন থেকে বোঝেন তিনি
                কবি আছেন তাতে ঋণী;
পেলেন পরিচয়
        আবার বলেন কবি নিজে আর দেখাটি নয়।

যোগাসনে বসে কবি পেলেন নিজের দীক্ষা
                দিলেন সবে শিক্ষা
ধাতার সাক্ষর রাখে কবি
        আঁকেন নিজের ধাতার ছবি
চোখের দেখা নয়;
জানেন কবি ধাতার পরিচয়;
                        পেলেন সকল নিজ মননে যোগাসনে বসে;
মনের ভেতর মনন ভেদে শুধুই ভাবনা কষে।
অযথা তাই তাঁরে দেখতে চাওয়া
                ধাতা হলেন মেদুর রূপক ধুলোবিহীন হাওয়া।