আমায় জাগিয়ে কোথা চলে যাও
তুমি যেন শুধু নিজ গীতি গাও;
দেখিতে না আর পারি
বিবশের সুখে নিজের বেদনা সইতে আমি যে নারি।
রাগিণীর সেই আন্দোলনের ভাষা
জাগিয়েছি মনে আপনার নিজ আশা;
পাখির সুরতে তোমার রাগিণী
আমার কণ্ঠে কেন বা জাগেনি
কোথা তুমি আছো আজ
শুনিনা তোমার কণ্ঠের কারুকাজ।
রূপক জগতে করি আমি বাস
মন যেন আজ করে হাঁসফাঁস
ভোরের স্নিগ্ধ সেতারার সুরে
তানপুরা বাজে নিজ গান পূরে
হারমোনিয়াম তুলেছি যে হাতে আমি
বাঁশরির সুর নামালো অধুনা আমার হৃদয়ে যামী।
সকল মানব গান
করেছ তুমি হে দান;
তোমার রাগিণী জাগায় আমায় রোজ
করে চলি আমি তোমার রাগিণী খোঁজ।
আগমনী বায়ু সকালের তরে আসে
সে বাতাস যেন গানের আবহে ভাসে;
তার কিছু সুর মেখে নেই গানে
আর কিছু সুর মাখি নিজ প্রাণে;
তাই দিয়ে আজ চলা
নিজের কথাটি বলা
সেই গানে আমি বিভোল হয়েছি
সকাল, দুপুর, বিকেল বয়েছি;
জীবনের বাঁকে বাঁকে
সাঁঝের আঁধার আজকে আমাকে ডাকে।
অন্ধকারের জ্যোতি বলি আমি তারে
যে গান আমারে চিনালো অন্ধকারে।
ঘুমের আবেশে তোমার আভাসে
সে গান আমার স্বপনেতে ভাসে
জেগে উঠি পুনঃ আমি ফিরে ফিরে
আমাকে সে গান রোজ এসে ঘিরে;
ভেবেছি তোমার গান
তাই ভেবে রোজ লিখে গেছি আমি করেছি কবিতা দান।
আজ বোধোদয় আসে
আমায় সে গান ভাবি আমি ভালোবাসে;
অথচ অসীম দূরে
যেখানে অধুনা ছায়াপথ আর নীহারিকা থাকে পূরে;
যেখানে আকাশ নিজের গ্যাসের কণা
জাগিয়ে তুলেছে নেচে তুলে নিজ ফণা;
প্রতিফলনের বেশে
সে রাগিণী আজ উঠেছে বিশ্বে হেসে;
আমাকে শোনাও গান
রুদ্ধ করোনা আমার এই দু'কান।
রূপকের ছলে তোমাকে স্মরণ করি
তোমাকে নিয়ে যে লড়ি;
বাসনার রঙ মিশেছে আকাশ নীলে;
যেন আছি এক নীল আকাশের বুকে ক্ষুধার্ত চিলে।
চিৎকার করে চেয়েছি আহার আমি
নীল মিলিয়েছে নেমেছে আঁধার যামী।
সেখানেও সেই গান
আঁধারের বুকে দিয়েছে আলোক দান।
তাই ভুলিনা তোমারে
ওহে ধাতা আজ রেখেছি মনের দ্বারে;
নিজেকে আমার লাগেনা যে অসহায়
আকাশের দিকে চেয়ে ভাবি আমি তায়;
আবার নেমেছে প্রাতে
আবার দেখেছি সাথে
তোমার রূপক গীতি
পাখিদের গানে বেজে উঠে মনো প্রীতি।
এই করে যাবে জানি প্রাণ চলে আমার নিরুদ্দেশে
হয়তো ছুটবে মরণের পর হে ধাতা তোমার দেশে।