আমি মৃত্তিকা গলিত লাভার আদি রূপে
                        রয়ে আছি আজো আমি নিশ্চুপে।
শুকাতে শুকাতে আজ
        করেছি নিজের কারুকাজ
হয়েছি যে আমি উত্তাপ ছেড়ে মাটি;
হয়েছি আজকে খাঁটি,
আমার চলন থেমে রয় শুধু জীবনের আয়োজনে;
রেখেছি আমার ধন অধুনা গোপনে।

আদি যুগ হতে আমার ধরন একি
                মেখেছি কেবল তাপ হারিয়েছি সেকি;
আমার বুকের আকর্ষণের টানে
        পৃথিবীর বুকে রয়ে আছি আমি তানে।
আমার বুকেতে চাষাবাদ করে চাষি;
                        আমি মৃত্তিকা মানুষকে ভালোবাসি।
আমার ধরনে কতনা রূপের খেলা;
বিধাতা পাণিতে গড়ে দিয়েছেন মানুষ নামের ভেলা;
            আসে আর যায় বেগে;
আমার বুকেতে লেগে
সমাধির বুকে আমাকেই খুঁড়ে চিরনিদ্রায় ছুটে;
                                আমি মৃত্তিকা আমার বুকেতে মানুষের সব জুটে।

পৃথিবীর সেই রোমাঞ্চিতের গীতি
                        আমার বুকেতে এঁকে চলে লোকে নিতি;
আমার বুকের শ্বাস ছাড়া জানি সবে
        মাতে যেন আজ নিগূঢ় এ কলরবে।
                        মানুষের লাগি সব আয়োজন করে;
আমি মৃত্তিকা আছি শুধু জানে লড়ে।
আমার বিনাশ নাই;
                আমাকে করেছে বিধাতা নিজের বান্দা আজকে তাই।

প্রাণহীন আমি এই কথাখানি ঠিক;
                তবু জানি আমি করে আলোকিত ঋক্ষ;
সেই আলো মেখে আমার ফসিল ধনে
আমার বুকের তলে রাখে যে গোপনে।
আকরের ধন বাহিরে আসিতে নাহি চায়;
                        আমি মৃত্তিকা করে চলি শুধু হায় হায়।

আমার বুকেতে মানুষের বাস বেঁচে থাকার আশ্রয়;
        আবার আমার বুকের উপর তাদের সকল হয় ক্ষয়।
                        আমার এমন দ্বৈতনীতির ফলে;
আমার বুকেতে ভালোবাসা আসে আবার আগুন জ্বলে।
সকল সৃজন এঁকেছেন ধাতা আমার বুকের পরে;
                                লোকে ভাবে অবসরে।
আবার যখন মরণ ঘনায় ফিরে আসে লোকে কোলে;
        দেখেছি মাতন দোলে।

এই হলো আজ আমার এ সম্প্রসারণ;
                আমি মৃত্তিকা করেছি সকল সুখ ও ব্যথা ধারণ।