আজকে তোমার রাগিণী শুনেছি
মাদল মাদল হাওয়া,
ঝড়ের প্রকোপ বাড়ছে কেবল
ছুটে চলে আসা যাওয়া।।
মদির তানের রাগিণী সে নয়
হৃদয়ের মাঝে জাগিয়াছে ভয়,
আমার কেবল আজ মনে হয়
বিফল আমার চাওয়া।।
ফিরে আসি তীরে ঝড়ের আঘাতে
খুঁজে চলি আমি ছাউনি,
তোমার আশাতে বিরহের গীতি
গাইছি শুনতে পাউনি!
ফিরব কিরূপ আজ নিজ ঘরে,
ঝড় বয়ে চলে নিজ অন্তরে,
দূরে দেখি আমি তরণীর 'পরে
বাতাস করেছে ধাওয়া।।
তাই ছুটে চলি পারের দিকেতে
ভীষণ বাতাস ছাপিয়া,
বাতাসের তোড়ে হৃদয় আমার
উঠেছে কেবল কাঁপিয়া।
কাছে যেতে যেতে ছিঁড়ে গেছে দড়ি,
অমন তুফান আমি নাই স্মরি,
তরী ছুটে চলে বায়ু স্বীয় করি
শুনছি বাতাস গাওয়া।।
ফিরে আসি আমি ছাউনির তলে
আবার ব্যথিত প্রাণেতে,
নিজের সহায় ছিলো যেই তরী
হারিয়েছি আজ বানেতে।
একটু পলকে দেখি তরী আজ,
খেয়েছে শরীরে ভীষণ এ বাজ,
পুড়ে যায় তরী আজকে বিরাজ
বেঁচে দেখি বলে পাওয়া।।
ফিরে যাবো ভেবে ফিরি নাই তরী
বুকে দেখি জ্বলে আগুন,
অশনির ঘাতে পুড়ে গেছে দেহ
বেঁচে থেকে বুঝি ফাগুন।
ভেবে যে মনেতে এসেছে পুলক,
বুঝেছি আজকে নহে অমূলক,
সব ছিল জানি তোমার নিছক
তাই আছি বেঁচে আজকের তরে
পেয়েছি জগতে ছাওয়া।।
অবশেষে থামে আমাদের বুকে
প্রবল ধারার বৃষ্টি,
তীর থেকে আজ ফিরি নিজ ঘরে
দেখেছি যে অনাসৃষ্টি।
ঘরে গিয়ে দেখি সকলে হাসিছে,
তাদের হৃদয়ে পুলক ভাসিছে,
চেনা ঘর আজ ভালো যে বাসিছে
বেঁচে থাকি পেয়ে দাওয়া।।
নতুন তরীর লাগি আমি আজ
আবার গড়েছি তরণী,
জীবনের গান বুঝেছি আজকে
বুঝেছি আপন ধরণী।
তাই আজ ছুটে যাই সেই তীরে,
আমার নতুন তরী সেথা ভিড়ে,
আবার কাজের চালু হয় ধীরে
চলছে তরণী বাওয়া।।
আমার তরী যে মাঝের সাগরে
চলিছে ভীষণ জোরেতে,
সতেজ থেকেছি আপনার করে
পড়িনি কখনো ঘোরেতে।
হটাৎ নিজের বুকেতে বাজিছে,
চারিদিক দেখি রূপেতে সাজিছে,
পুনঃ শুনি বায়ু রাগিণী ভাজিছে
তরীর চলছে নাওয়া।।