বসিয়া ছিলেন এক ভিখু দেখি একটি গাছের তলে,
সহসা যে তার বুক ফেটে যায় শুধু পিপাসার জলে।
তখন সকল মুরিদেরা ছিলো তার হতে বেশ দূরে,
তারা সকলে যে বাজালো বাঁশরি আপনার সুরে সুরে।
অথচ এদিকে ভিখুর পিপাসা চলছে যে বেগে বেড়ে,
আবার ধ্যানের কর্ম আজকে পারেনা যে যেতে ছেড়ে।
সহসা তিনি যে উঠিলেন আজ ধ্যান হতে নিজ তানে,
ক্রোধ আসে মনে মুরিদের প্রতি কোথা আছে কেবা জানে।
ধীরে ধীরে তিনি যান নদী ঘাটে সেখানে ময়লা জলে,
দুই করপুটে জল তুলে তিনি দেখেন সকলি ছলে।
পান করা যাবে! এই জল আর দূষণে মেখেছে পানি,
কি করবেন যে ভেবে নাই পান মনে আসে শুধু গ্লানি।
তখন মুরিদে আসলো নিকটে ক্ষমা চেয়ে বলে ত্বরা,
দয়া করে ভিখু দিক তারে আজ মার্জনা চোখে ভরা।
তখন ভিখুটি ক্রোধে বলে উঠে কোথায় রয়েছে জল,
পিপাসায় তার বুক ফেটে যায় রাখেনা যে খোঁজ তল।
শুনে মুরিদেরা সকলে কাঁপিছে ভিখুর রাগ যে দেখে,
তাই তারা ছুটে দিতে ভালো জল ঘটি লয় তটে চেখে।
অথচ সেখানে বিশুদ্ধতার আভাস ছিলনা জেনে,
এক মুরিদের মাথায় বুদ্ধি এসেছে আজকে হেনে।
তাই মেলে দিলো নিজের আঁচল গায়ের ভূষাটি মেখে,
তারপর ঢালে সেই জল ঘটি উঠেছে সলিল চেখে।
ধীরে ধীরে দেখে সকলেই আজ সলিল শুদ্ধ আসে,
এরকম করে জল ভরে লয়ে মুরিদেরা সবে হাসে।
ছুটে যায় তারা ভিখুটির কাছে স্বচ্ছ জলের দ্বারা,
ভিখু দেখে বলে কোথা হতে জল পেয়েছে আজ তাহারা।
শুনে মুরিদেরা চুপ থাকে দেখে ভিখুটি আবার বলে,
রেগে যায় যেন মূক মুখ দেখে আবার নিজের ছলে।
তার রাগ দেখে সেই মুরিদের ঠোঁটে আসে নিজ কথা,
বলে উঠে তাই ছাঁকনির দ্বারা জলে আসে ব্যাকুলতা।
শুনে ভিখু বলে তারে ডেকে কাছে সবাই করবে ধ্যান,
তবে জানি আমি পাবে জীবনের তরে বিশুদ্ধ জ্ঞান।
কাজে লেগে যাবে ছাঁকনির মত তোমাদের ধ্যান করা,
ধ্যান হলো সেই বিশুদ্ধতার ছাঁকনি জেনো যে ভরা।
ভিখু বলে উঠে মানুষের বেলা ধ্যান করে দেয় সাঁচি,
তাই সব পেতে পৃথিবীর বুকে ধ্যান করে চলো বাঁচি।
জানেনা কেউতো পৃথ্বীর স্বর্গ কোথায় পেয়েছে লোকে,
ভিখু বলে তাই পৃথিবীর ধ্যানে এঁকেছে স্বর্গ চোখে।