ফাল্গুন থামে চৈত্রদাহ রাজে
আজকে আমার সাঁঝে।
চৈতি সমীর করে চলে আজ নিজের মাখানো সুর
শুনি তাই বহুদূর;
কোথায় যেন সে প্রাদুর্ভাবের কালে;
প্রেম বয়ে আনে উষ্ণ বাতাস আমাদের দোঁহে ভালে।
এমন গরমে আম, কাঁঠালের পাকা
প্রবল রোদের তৃষ্ণা জেগেছে বুকটা করছে খাঁখাঁ;
সুললিত সুরে কাল বোশেখীর হাওয়া
করে চলে আসা যাওয়া
আমাকে দিয়েছে তোমার প্রতি যে টান;
শুরু হলো আজ গান।
কতো দেশ ঘুরে পেয়েছি তোমায় কাছে
বিনিদ্র রাতে পাছে;
ভেবে বসে আছি আর কেউ বুঝি তোমার আমার মাঝে
ঘটাবে প্রণয় তোমাকে ব্যতীত সেকথা আমার বাজে।
অথচ মনের আলাপনে আজ ছুটি
হৃদয় আমার গিয়েছে স্মরণে টুটি।
বিদায়ের সুর কখনো বাজেনি কানে
আমার নিজের প্রাণে;
তোমার আগম হয়েছে রমণী
কেঁপেছে আমার আপন ধমনী
উৎসাহে আমি ছুটেছি তোমার কাছে;
আপনার ধন মেলে রাখি আমি পাছে।
খেই হারিয়েছি জাহাজের মতো করে
আমার কণ্ঠে রাগিণী জাগেনা স্বরে।
কোথা সেই সুর তোমার আমার মাঝে
এমন মধুর নিগূঢ় আগম সাঁঝে;
কোথা তুমি আজ রাজো
কোথা তুমি আজ নিজের রাগিণী ভাজো
হারিয়েছি নিজ খেই
আজ আর তুমি নেই
হয়েছ পরের বাসনা
আমার নিজের কামনা
ভুলেছি আমার আপনার ধন হারিয়েছি আমি ভুখে;
তবু প্রার্থনা রয়ে আছে মনে থাকো তুমি ওগো সুখে।
ফাল্গুনের এই বিদায়ে আমার
চোখের কোলেতে ভেঙেছে পাথার;
আদরের ধন হারিয়েছি আমি বেগে
তখন আমার ঘুম টুটে গেছে উঠেছি আজকে জেগে।
তোমার জগত আনন্দের এ গান
রচিত হয়েছে, হয়েছি যে হয়রান;
যাপিত কালের গানগুলো তাই নৃত্য করেছে আজ
দেখেছি কেবল নিজ চোখে কারুকাজ।
হারাতে তোমায় পেয়েছি পাথার পারি
জগতে নারীরা সহজে পেয়েছে পুরুষের ঝরে বারি
সেই ভাবনার দাবদাহে আজ পুড়ি;
হয়েছি তোমার হাতের নাটাই ঘুড়ি।
এমন গোমট বাতাসের কোলে
স্বেদ আসে শুধু শরীরের বোলে;
আবার হারাই তোরে;
পড়েছি ভীষণ ঘোরে;
চাঁদনী রাতের অবগাহনের সুরে
তুমি ছুটে যাও জানি আজ বহুদূরে।
তাই আজ নিজ বাসনার ধন ছেড়ে;
আমি ছুটে যাই তেড়ে;
কিসের অভাবে তোমার আর্তি এতো;
আমারে করেছে ক্ষত।
আপনার ধন হারিয়ে ফিরেছি মনে;
সেথায় তোমার আছে বসবাস ঘনে,
এমন রজনী শরীরের স্বেদে বিভ্রম দেখালো চণ্ড;
চাঁদের আলোকে লাগছে আমার ভণ্ড,
শুধু মনে হয় চাতা মুছে আমি ডুবি;
জাঁদরেল রবি দিয়ে যায় ধার খুবি।
আজ বুঝেছি যে ছিলেনা তুমি আমার;
পরের আলয়ে তোমার বিরাজ দেখি অকূলপাথার।