রাজু, জিজ্ঞেস করব ? কেমন আছিস?
শরীরের হোক বা মনের ,এর উত্তর শুধু 'ভালো' ।
দিন দিন ফুরিয়ে আসছে আমার চোখের আলো ।
জানি বলবি রোজই তো যোগাযোগ , আবার চিঠি কেন !
যোগ আর যোগ বড় কঠিন বাবা ,বয়স বাড়লে শুধুই বিয়োগ ।
বিয়োগের খাতায় গেছে রাতঘুম , মেজদিদি, একে একে অনেক...
সবাই বলে তুই বিজ্ঞানী হচ্ছিস ... বিজ্ঞানী কিকরে হয় , এবার এলে একটু বুঝিয়ে বলিস তো ...।
জানিস, এখন কেউ আমায় 'রাজুর মা' ডাকলে বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে ... তুই প্রথমবার গেলি যখন , অনেকটা এমন হত ..
কাল সন্ধ্যেই ফোনটা তুলতেই যখন বললি ' সুপিয়া কেমন আছো?'
কি গভীর এক শান্তি হয়েছিল , শোলাপুকুরের জলের মতন ।
অনেকগুলো দিন পর মনে পড়ল
আমার একটা নাম ছিল , আছে ।
মা এখনো সুপিয়া ডাকে , আব্বা থাকলে ডাকত ঐ নামেই ।
আমার সামনে তোর মা , তোর মায়ের মা, তার মায়ের মা
ছিঁড়ে ছিঁড়ে গেছে সবার নাম
তোর দিদিকে ওরা 'অপুর মা' বলে হাঁক পাড়ে ...
বুকটা হু হু করে ওঠে
একটুকরো নাম তুই নিয়ে নিলি
এক টুকরো তোর ভাই,
একটুকরো নাম তোর আব্বার কাছে জমা
একটুকরো অতলে ভেসে যায় ...
একটুকরো নাম মায়ের ঠোঁটের কোনে লেগে আছে
বাপের ভাগের টুকরো পরে আছে হেলায় ...
ইচ্ছে হয় বলি তোকে , লিখে দে কবিতায় ।
এখন তোর দিদিকে একা আমি নাম ধরে ডাকি ...
জানি আমি
আমিই জানি কতটুকু নাম আর আছে বাকি ...!