টাঙ্গুয়ার হাওড়
------মোহাম্মদ হাসানুর রহমান
তাহেরপুরের ঘাটে নৌকা সারে সারে,
সেই নাও’য়ে যাত্রীরা সব হাওড় পানে ছুটে,
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় জল দানবের তোড়
তার তলাতেই বয়ে চলে টাঙ্গুয়ার হাওড়।
স্বচ্ছ জলে আকাশ হারায়, দূরের পাহাড়-বন
নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল, রামসার হাওড়।
বর্ষা এলেই পাহাড় যেন জীয়নকাঠির বলে
অন্তরিত পাহাড় বেয়ে ঝর্ণাধারা নামে,
ভিনদেশের ঐ পাহাড় যেন অন্তরিক্ষে মোড়া
মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি- মেঘমল্লার দেয় পাহারা,
কান্নার জল পাহাড় বেয়ে হারায় জলাবনে
বর্ষা শীতে ভিন্ন রূপে হাওড় সাজে আপন মনে।
আঁকাবাঁকা মিঠা জলে শাপলা শালুক হেলেঞ্চা শাক
দেখা মেলে পাখপাখালি, নেউল কাছিম ব্যাঙ ও সাপ
দু’পাশে ছেচল্লিশ গাঁও, মাঝে মাঝে জলটুঙ্গীর ঘর
সে’খানেতে শাঙা, ঝিঁয়ে থাকে জীবনভর।
গলা জলে দাঁড়িয়ে নিচুল হিজল বরুণ করচ
তিয়াস মেটায় অপরূপা, নন্দিনী এ হাওড়,
বিজন রাতে ফোটে পুষ্প হিজলের শাখে
প্রভাতেই ঝরে পড়ে ভেসে যায় স্রোতে,
পাড়ে ফোটে বুনো গোলাপ, ঝর্ণা, চাঁদমালা
পৌষ ফুলের সুগন্ধ, মনে লাগে দোলা।
সোমেশ্বরী, সুরমা, কংস, নদী যাদুকাটা
পাটলাই তাঁর মেয়ে, শীতে পড়ে ভাটা।