উৎসর্গ মৃত্যু বড় কুলসুমকে,,,,,, আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করুন আমিন।।
কুলসুমের সুখ পাখি
হাসান মাহমুদ
আকাশ লাল সন্ধ্যা এলো ঘনিয়ে
সূর্যটা আজ যাচ্ছে নিবে তলিয়ে,
সন্ধ্যা আকাশে শকুন উড়ছে উঁচিয়ে
গৃহ বধু তাড়াহুড়ায় ফিরছে নিরালয়।
নিস্তব্ধ বধির বোবা কান্না পাড়ায়
কে আছো?কোথায় আয় আয়!
সখের পুতুল আমার গেলে নিরালায়
ঘুমিয়ে গেলো তলিয়ে গেলো কোথায়?
স্নায়ুকোষে রক্তে লালে লাল
হৈ-হুল্লোড় বাড়ি উঠোন গাছ তল,
ডাক্তার কবিরাজ অতিথি দল
ছুটিয়া ছুটিল বহু কান্নার রোল।
রাতটা পেরিয়ে গভীরে মোরগের ডাক
মসজিদের মাইকে আল্লাহু আকবার হাক,
চিৎকার চিৎকারে মাটি হয় ফাঁক
হৈচৈ গোলবাঁধে কেউ হয় রাগ।
সকালটা বুঝি ফেব্রুয়ারী একুশ
কান্নার কোলাহলে নিরুত্তর হুঁশ
ডাক্তার নাড়ি চাপে হৃদয় বেহুঁশ
বলে দেয় ডেকে দেয় ক্লান্ত শ্বাস।
ফুটফুটে এলো বুঝি রহমত
সাদা সাদা গুঁড়ি গুঁড়ি বরকত,
আত্মীয় সকলেই পরে কান্নার মোহরত
নেই নেই আর নেই শ্বাসঘাত।
নিরব নিস্তব্ধতায় থেমে যায়
দেহ খানি শীত বরফ বলে যায়
রক্তিম হয়ে যায় ঘরটা সেথায়
থেমে যায় চিৎকার ইহকাল ধরায়।
পাগল মাতা থেকে থেকে বলে
আমার কুলসুম গেলো বুঝি চলে
ভাই বোন কাঁদে কি গেলি বলে
হৃদয় হাহাকার সমুদ্র ঢেউ খেলে।
স্বামী বেচারা ঠুকরে কাঁদে কোণে
বসে বসে ইচ্ছে পূরণটা গুণে
কত শত ইচ্ছে গেছি মোরা বুনে
কি গেলা কহিয়া মোরে প্রাণে।
কতটা ভালোবাসি হয়নি বলা
হয়নি এখনো শুরু শেষ চলা
তুমি তো আমারি সরল মন ভোলা
হৃদয়ে আমায় বান্ধি চলে গেলা একেলা।
পিরিতের বাহুডোরে বান্ধি তবে
চেয়েছি আপন করে এই ভবে
সুখকি থাকে আর সুখের ভবে
সুখটা পুড়ে যায় করুণার তাপে।
আত্মীয় কাঁদে,কাঁদে প্রতিবেশী
কত ভালো ছিলো আসমানের শশি
ধার্মিক মেয়ে,কথা বলিত হাসি
কালাম পড়িত সকাল সন্ধ্যা বসি।
এমন সোনা হয় না ঘরে দশজন
ছিলো পরিপাটি অস্পষ্ট মন
কথা তটা বলতো একটু কম
যাহা বলতো পুরোটাই কমন।
মোল্লা আসিলো কালাম পড়িতে
শুনা যায় কুরআনের বানিতে
বাড়ি ঘর মুখরিত লোক সারিতে
গোসল দিবে গরম জল পাটিতে।
ফুটফুটে ছেলে খানা কাঁদে
বরই পাতায় পাতিলে জল রাঁধে
সায়মানা টানিতে কেহ বাঁধে
মসজিদের পালকিটা কারো কাঁধে।
গোর খানা প্রস্তুত দেহের মাপে
কুলসুম সব দেখে ধাপে ধাপে
মসজিদের পাশে গোরটায় সপে
দোয়া খানা পড়ে হাত খানা কাপে।
এভাবেই সুখ পাখি উড়ে গেলো
কুলসুম ডানা ভেঙে পড়ে গেলো
মরে গেলো সকল সুখের আলো
সুখ পাখি চলে গেলো কালো।।।