১)  নির্জনতাকে সঙ্গী করে আজ আমি বসে আছি
     সুখ বিহীন এক গৃহকোনে।
    আমার সামনে পাহাড় সমান অপেক্ষমান হতাশা,
    সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ঘিরে থাকে অসংখ্য ব্যথা।
     রাত্রির কাল আকাশ, আকাশ থেকে সমুদ্র পর্যন্ত
    ভেসে বেড়ায় আমার কষ্টের না বলা কতো কথা।
     হৃদয়ের ক্ষত থেকে ঝরা রক্ত রাঙিয়ে তুলে আমাকে-  
     প্রতিনিয়ত। দিনের আলোয় রাঙিয়ে তোমরা যতটা
     হও উজ্জল, আমি আঁধারের রঙে মিশে ততটা ধূসর।  

২)  সুখের বিপরীতে যে দুঃখ থাকে, তাই সাহস করে  
     কোনদিন সুখের খোঁজ করিনি।
     তবুও আজ বুকের ভিতরে জমাট বেঁধেছে দুঃখ কষ্ট।  
     আমি দুর্বল বলে আমার জীবনে কখনও স্বপ্নের-
     বসত গড়ি নি, শুধু আপন জনদের ভালবাসা ছাড়া।
     অসহায় বলে বুঝি কিছুই জুটল না কপালে মোর
     দুঃখ কষ্ট ছাড়া।  

৩) আমার জীবনে নিবিড়ভাবে মিশে আছে কষ্ট,
    এ যেন শুধুই আমার একার।
    আজ আমি যদি কাঁদি তবুও নেই কেউ দেখার,
    মাঝে মাঝে আমি ভাবি মৃত্যুর আগেই  
    তোমাদের মাঝে আমি মরেগেছি।
    তবে কে নিবে আমার এদেহের শেষ দায়িত্ব ভার?
    অযথাই সময় নষ্ট করে আমার নিঃসঙ্গতা দূর করবে,
    এত দয়া মোর লাগিয়া আছে কার?
    এত কিছুর পরও তোমরা বসত কর
    আমার মনের গভীর মূলে।
    সব হারিয়েও আজ আমি ভালবাসি
    তোমাদেরকে- ভুলে।

৪) চারিদিকে যখন উৎসব মুখর পরিবেশ বহে
    তোমরা যখন স্বজনদের সঙ্গ লাভকরে
    আনন্দে হও আত্মহারা, মিটাও মনের চাওয়া পাওয়া,
    আমি কেবল চোখের জল ধরে রেখে ছটফট করি,
    সইতে না পেরে সে ব্যথা- মৃত্যুর সাথে করি দেখা।  
     ভিক্ষুকের মত দু'হাত পেতে থাকি
    নতুন এক জীবন দিয়ে পূর্ণ কর মোরে।

৫) মনেহয় আর  বাঁচবনা বেশি দিন,
    মিটিয়ে দিতে চাই তোমাদের ঋণ।
    আমি যদি কোন দিন তোমাদের বুক থেকে মুছে যাই,
    আমি যেদিন তোমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাব,
    একটু স্মরণ করো আমায়, কান পেতে শুনো  
    ডাকছি তোমায়-তোমাদের।
    পাগলামি করেছি ভালবেসে, আমি অনেকটাই আলাদা
    বরাবরই নিজের ভিতরে অসহায়।  
    আমি দুর্বল ভাঙেনি আদৌ আমার ঘুমের ঘোর,
    আমায় তোমরা না বুঝে, ভুল বুঝে, অবহেলা করে
    ঠেলে দিলে? আস্থা হারিয়ে চলে গেলাম
    ব্যথাভরা মনে, যে পথে আসা সে পথ ধরে আপন ঘরে।      

(বইঃ মুক্ত পথের পথিক।)