চঞ্চলা চপলা নাকে নথ কিশোরী,
বয়সে ষোড়শী কালো কেশি হরিণী।
মনেতে উড়– উড়– ধুকু ধুকু করে,
কবে আসিবে মোর সেই ক্ষণ ঘনিয়ে।
কুলাতে প্রদীপ জ্বলে ধান ধুবলা সবে,
গতরে হলুদ ছোঁয়া, কাঁচা সোনা হাসে।
সানায়ের সুর বাজে ক্ষণ বুঝি ঘনিয়ে,
পালকি চড়ে যাব আজি শশুর বাড়িতে।

পাড়া পড়শী এলো সবে সন্ধ্যার লগনে,
লুচি দই সাত শত বিয়ে বাড়ী হৈ চৈ।
গগনে তারা ফোটে বর বুঝি আসে,
এই বুঝি সেই ক্ষণ ঘনিয়ে এলো।
চাঁদের আলোতে বিয়ে সাত পাঁকে বাধা,
আঁচলে, আঁচলে গিঁট, শক্ত বাঁধনে বাধা।
সানায়ের সুর তোলে ক্ষণ এলো ঘনিয়ে,
পালকি চড়ে যাব আজি শশুর বাড়িতে।

ভাটির গাঁয়ের কন্যাদি, উজান গাঁয়ে বিয়ে,
নাওর নিতে উজান গাঁয়ে সারেং বাড়ীর ঘাটে।
পাল তোলা নাও এলো নাওর নিতে ঘাটে,
ভাটির গাঁয়ে ফিরলো নাওর, মাস ছয় পরে।
মুড়ি মুড়কি তালের বড়া নাওর নিয়ে সাথে,
উজান গাঁয়ে ফিরবে নাওর দিন পনের পরে।
তাইতো মাঝি ভাটির নাও,বেধে রাখছে ঘাটে,
নাওয়ের রসি পালে বাধে, আজি শশুর বাড়িতে।

কাল সকালে আসবে সবে দেওয়ান বাড়ীর ঘাটে,
পুকুর পাড়ে গল্প বলা শোলক বলা সুরে।
কেশের বেণী ফিতায় বাধে ফুলের গিটে গিটে,
সখী সকল পিঁড়িতে বসে শিকল ফিকা পুকুর পাড়ে।
ফোঁড়ে ফোঁড়ে উকুন তোলে নখের কারুকাজে,
হাসি ঠাট্টা নেই পেটে আর সূর্য ডোবে পাটে।
কাল সকালে নাওর যাবে উজান তরী গাঁয়ে,
নাওয়ের রসি পালে বাধে, আজি শশুর বাড়িতে।
==========================
গ্রামঃ টুপিপাড়া, থানাঃ শ্রীপুর,
জেলাঃ মাগুরা, বাংলাদেশ।