ছোট্ট ছোট্ট পদবিক্ষেপে চলেছিলাম
নরম মাটির সুমসৃন পথে ;
তারপর, যখন শক্ত মাটিতে পা ফেললাম---
কখনো ছোট ছোট নুড়ি পাথরে ,
কখনো কঠিন পাথরের চাঁইয়ে হোঁচট খেয়েছি ,
আবার হাবুডুবু খেয়েছি নয়নজুলিতেও ;
মৌসুমী বাতাস হয়ে কল্যাণ করতে চেয়ে
কঠিন পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে
অঝোর ধারায় ঝরে পড়েছি বারবার ।

টাইটানিক কখনো হতে পারিনি , চাইওনি ,
আটলান্টিক পারি দেওয়ার দুঃসাহসও দেখাইনি ,
তাই হিমবাহের অর্ধমগ্ন বিশাল বরফের পাহাড়ে
ধাক্কা খেয়ে সলিল সমাধি ঘটেনি কখনো।

চলার পথের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে
দেখা হয়েছে ধূর্ত প্রবঞ্চক-প্রতারকের সাথে ,
নতুন নতুন পথে তারা আমায় বঞ্চনা করে
আত্মসাৎ করেছে,পাঁঠা বহনকারী ব্রাহ্মণের মতো।

কুবেরের ধন নয়, ঝিনুকে যা ছিল পুরোটাই
হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছি বহুবার ; ঠগের প্রতারণায়
শিক্ষা নিতে পারিনি কখনো ; বারবার ঠকেছি ।
'মানুষকে অবিশ্বাস করা পাপ'---
কবিগুরুর এই নীতিবাক্যকে সম্মান দিয়েছি ;
মানুষকে অবিশ্বাস করে বিবেক যন্ত্রণায়
বিধ্বস্ত হতে চাইনি কখনো........
এই সুযোগ নিয়েছে ওরা সবাই ।

বিশ্বাসের মর্যাদা কেউ রাখেনি !
সবাই হয়তো পেশাদার ছিলো না ,
অথচ আমি প্রতারিত হয়েছি ;
জনসমক্ষে নির্বোধ সেজেছি ।
অন্যের দুঃখে সমব্যথি হয়ে ঠকেছি ,
মানুষের কল‍্যাণকল্পে সৎপথ আঁকড়ে ধরেও
ওদের কাছ থেকে খেয়েছি বিষাক্ত ছোবল!

সেদিনের সেই সকালের সোনালী রোদ থেকে
আজ পড়ন্ত বিকেলে উপনীত,শিক্ষা এখনো হয়নি!
তবে অনাবিল মানসিক প্রশান্তির খোঁজ পেয়েছি ;
আর জীবনের শেষ প্রান্তে এসে
এটুকু শিক্ষা লাভ করেছি-------
যারা প্রবঞ্চক, চিরকাল প্রবঞ্চনা করে যায়;
আর যারা প্রবঞ্চিত,তারা সারা জীবন শুধু
বিশ্বাস করে প্রবঞ্চনার শিকার হয়ে থাকে ।

প্রবঞ্চক আর প্রবঞ্চিত বোধহয় দুটো শ্রেনী ,
এরা যে-যার সহজাত গুণে বিভূষিত ।

          =====সমাপ্ত=====