প্রাতঃ যোগে যোগারূঢ় সাধু মহাজন ,
সপুত্র জনৈক চাষী করে আগমন ,
নিবেদিতে বাঞ্ছা তার প্রতীক্ষায় রত ,
যোগ সেরে জিজ্ঞাসেন—‘কী জন্য আগত ?
কী কাজে লাগিতে পারি , করো হে প্রকাশ ,
পূরণ করিতে রাজি তব অভিলাষ । ’
চাষী কহে , ‘পুত্র মোর মিষ্টান্নে ব্যাকুল ,
খরচ পোষাণো মোর সাধ্য-প্রতিকূল ।
সর্বস্ব খরচ হয় মিষ্টান্ন যোগাতে ,
প্রতিকার দিন এর যদি থাকে হাতে ।’
নিমীলিয়া আঁখি তিনি ক্ষণকাল পরে
বলিলেন , ‘আসিও তুমি আমার গোচরে
পক্ষকাল পার হলে , আসিও সপুত্র ,
খুঁজে দেখি পাই কি না এর কোন সূত্র ।’
এক পক্ষ পরে পুনঃ সময় নিলেন ,
এ ভাবেই কতবার ফিরিয়ে দিলেন ।
অবশেষে একদিন শিরে রেখে হাত—
বলিলেন, ‘মিষ্টি নয় , খাবে শাক-ভাত ,
যখন যা জোটাইবে তাই খাবে সুখে ,
কাতর না হও আর কোনো ব্যথা-দুখে ।’
সাহসে করিয়া ভর কৃষক জিজ্ঞাসে—
‘মনেতে বাসনা জাগে তোমার সকাশে—
কেন মোরে ফিরালেন এতদিন ধরে ,
ক্ষমতা রয়েছে এত আপনার করে !’
স্মিত হেসে সাধু ক’ন—‘মিঠাই পূজারী—
আমিও ছিলাম অতি , সে অভ্যাস ছাড়ি’
স্বাভাবিক হতে মোর এতটা সময়—
লেগে গেল , বুঝিলে তো , কারণ নিশ্চয় ,
বিশুদ্ধ না হয়ে নিজে কী ভাবে অপরে —
শোধন করিব বলো এই চরাচরে !’
*****************