দারিদ্র্যের নির্মম কষাঘাতে
                            তুমি ছিলে দীর্ণা-দুখিনী !
তমসাময় রাতে ময়লা আর শতছিন্ন বসনে
তুমি যখন দাঁড়িয়েছিলে আমার পথের প্রান্তে ,
আমার আকাশে সেদিন রজনীশের হয়নি উদয়ন ;
ছড়ায়নি সেদিন এতটুকু জোছনার আলো ,
তাই তোমার কাব্যিক রূপ দেখতে পাইনি সেদিন ।

তারপর আকাশে যেদিন উঁকি দিয়েছিল
শুক্লা চাঁদের দ্বিতীয়ার অমলিন কলা,
মানস-সরোবরের বিস্তীর্ণ অববাহিকার
বিবর্ণ অধরে দেখা দিয়েছিল এক চিলতে হাসি।

তারপর------ নিঃঝুম এক নিশীথ রাতে
নিঃসঙ্গ চলার পথে উঁকি দিয়েছিলে
ঘাটে বাঁধা তরণীর অনুজ্জ্বল আলোক শিখায়
ঘুমন্ত মাল্লার আটপৌরে বিছানার ছিন্ন প্রান্ত থেকে----
সেদিনও তোমায় দেখেছিলাম
                           দুঃখিনী এক কিশোরীর বেশে।

তারপর তোমায় দেখেছি আবার বালুকা বেলায়--
বালিয়ারির বালুকাস্তুপে রাশিরাশি বালুকণা
জড়ো করে রচনা করেছো তুমি মানস দেবতা ,
নিবেদিতা ছিলে তুমি তোমার রচিত সেই
                                                 দেবতা সম্মুখে ;
সেদিন প্রভাতের নরম আলোয় দেখেছি তোমায়,
ঠিক তখন-সেই মুহূর্তে---তুমিই হয়েছো আমার
প্রথম প্রণয়ের কিশোরী নায়িকা।

তারপর একদিন দেখা হলো---
পাহাড়ের ঝর্ণাধারার স্বচ্ছ সলিলে
                               অবগাহনে রতা ছিলে তুমি ,
পূর্ণিমার পূর্ণ আলোয় দেখেছি সেদিন তোমায়---
এলায়িত এক সুবিন‍্যস্ত কুন্তল বিলাসিনী রূপে
শুভ্র-বসনে স্বর্গীয় জ্যোতির্ময়ী তাপসীর বেশে ।
সেদিন আমার কাছে উদ্ভাসিত হলে
                  অষ্টাদশী তন্বী এক প্রণয়িনী বেশে ।
        
            ====সমাপ্ত====