এতদিনের চেনা পৃথিবীটা
তার খোলস পাল্টাতে পাল্টাতে
ধীরে ধীরে অনেকটা সংকোচিত
অথচ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে উঠেছে ;
তাই আজ সব যেন সুস্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি-----
কেউ ছিল আপন জনের মুখোশ পরে ,
কেউ কেউ স্বার্থের নামাবলি গায় জড়িয়ে
পরিধির ঘেরাটোপে সংবৃত ছিল এতদিন ;
দুঃসময়ের ঝঞ্জাবাতে কারো মুখোশটা খুলে গেল ,
নামাবলীর উড়ানিটা ডানায় ভর করে উড়ে গেল ,
মুখ লুকাতে লুকাতে তারা বৃত্তের বাইরে চলে গেল ।
ইলাস্টিকের পরিধিটা স্বয়ংক্রিয়তার নিয়মে
সংকোচিত হয়ে অনেকটা কাছে চলে এসেছে ;
দৃষ্টি-সুখের নিজস্ব ছন্দে ফিরে এসেছে ।
ঝাপসা-দৃষ্টি নান্দনিকতায় আজ অনেকটা স্পষ্ট ।
স্তাবকতার জ্যাকেটের আড়ালে
যাদের সুমসৃন কলেবর সুখ বিলাসে মগ্ন ছিল
প্রাপ্তির তৃপ্তিতে ভাত ঘুমের তন্দ্রালুতার অবকাশে,
তাদের অন্তর্নিহিত মুখোশটাও আজ উন্মুক্ত ।
পরিধিটা এবার আরও সংকোচিত হয়ে
বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দুর একেবারে কাছে চলে এসেছে ।
এবার আরও সব স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি----
যাঁরা আমার চোখে আলোর দ্যুতি ফুটিয়েছেন ,
পরিচ্ছন্নভাবে কেন্দ্রবিন্দুটা এঁকে দিয়েছেন ,
যাঁদের স্বীয় সত্তার অনুতে গঠিত এ হৃদয়ের
প্রতিটি স্তর , সংবেদনশীলতার প্রতিটা কণিকা ;
সেই ঐকান্তিক আপনজন যাঁরা আমার দ্বৈত-ঈশ্বর ,
একে একে অন্তর্হিত হওয়ার পরে, যে সহযোদ্ধা
পূর্ণাঙ্গ হৃদ্যতার মাধ্যমে উত্তাল তরঙ্গায়িত
ঝঞ্জা-বিক্ষুব্ধ সমুদ্র পেরিয়ে আসতে
তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে ,
সুখে-দুখে যে উজাড় করে দিয়েছে
তার অন্তর সত্তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু-পরমাণু ,
সে-ই আমার বৃত্তের কেন্দ্রস্হিত আপনজন ;
আর আমাদের মিলিত সত্তার প্রোটন ও ইলেক্ট্রন নিয়ে
যে উত্তর সত্তা আবির্ভূত,সেও আমার আপনজনের
অবিশ্লেষ্য অনন্য অংশীদার।
বাকিরা সব বসন্তের দূত।
====সমাপ্ত====