অনন্য আমার মাতৃতীর্থ,স্মৃতির বাসরে আছে সে!
হারিয়ে গেল চিরদিন তরে জীবনের বাঁকে এসে।

গাঁয়ের অদূরে জমিদার বাড়ি , তারই ছত্রছায়--
দুই দিকে তার খোলা প্রান্তর,ছোট নদী কিনারায় ;
খানিকটা দূরে দুটো হাট বসে সপ্তাহে চারদিন ,
শরত ও শীতের হাটের মজা লাগতো বড্ড রঙিন !

শৈশব কালের পাঠশালা-দেউল ছিল বড় মধুময় ,
তার কথা আজ মনে পড়ে খুব,শুধুই তা স্মৃতিময় !
পাঠশালা হতো মজলিশ গৃহ দুপুরে ও সন্ধ্যায়--
গ্রামখানি যেন জড়ো হতো এসে
                                          পাঠশালা-আঙিনায় ।

অবারিত তার সবুজ বনানী কাদামাটি জলে সিক্ত ,
পরতে পরতে হৃদয়ে সবার ছিল সে যে সম্পৃক্ত ;
মাঠে মাঠে তার গবাদির পাল চরতো ফসল শেষে ,
বৈশাখে সেথা নতুন জোয়ার হাসতো নতুন বেশে ।

আম জাম আর হিজল বকুলে বেষ্টিত ছিল মাঠ ,
শীতল মলয় চামর দোলাতো,পাশেই পুকুর-ঘাট ;
নতুন জোয়ারে জলকেলি হতো,উল্লাসে হাসাহাসি,
ভুলতে পারিনা সেই গ্রামখানি,
                                   আজো তাকে ভালোবাসি !

নববর্ষ আর বিজয়াকে ঘিরে হৃদ্যতা ভেসে যেত,
নবান্ন ঘিরে বিগলিত ধারা অনুকূল হাওয়া পেত ,
এ' দুই পরবে মৎস ধরার চলতো মহোৎসব ,
গ্রামখানি তাতে উঠতো জেগে,
                                      আজও শুনি কলরব।

বর্ষাকালে ভরা কোটালে ডুবে যেত গ্রামখানি ,
ডিঙি নায়ে চড়ে ঘুরে বেড়ানো নতুন মাত্রা আনি'
ভরে দিত মন কিশোর বেলায় মাঠ-ঘাট একাকার !
পাড়াময় ঘুরে সুখের দুখের রাখতাম সমাচার।

তছনছ সব করে দিলো এসে পশ্চিমা এক ঝড়---
মাতৃতীর্থ হয়ে গেল আজ বিদেশ-বিভুঁই পর !

                ====সমাপ্ত====