প্রথম দেখায় দল বৃন্ত মেলা সুবাসি উন্মীলন প্রবাহ মিলে তোমার
কণ্ঠে ধারণ জাহ্নবীর তান সদ্যফোটা নিষ্কলঙ্ক রক্তকরবীর পাপড়ি
হাসনা মালতী ডালিম শাখে ফিঙে নাচন বাহার
শ্রীবৃদ্ধির বিকাশ বিকায়  ।

উদাসী আঁখিতে যেন তুমি মৌরি পুষ্প দেখেছি কিংখাফের আবডালে তোমায়
স্মিতহাসি আলতো চলন পরশ হাওয়া দোলাত কাশের গুচ্ছ ঐ রেশ্মি কেশে
লাজে রঞ্জিত হয় প্রকৃতির বৈচিত্র চিত্রন আত্মবিনাশ উড়ন্ত মেঘমালার
ক্লান্ত পথিকেরা খুশীতে ভরাতো মনমোহনা ।

খোশ রই আবেগ আগ্রহে ডানাকাটা পরীর সুবাসিত যশ মাতিয়ে চলিবে প্রিয়ভাষী
ঊষাকালে সন্ধান পেয়েছি মুখরিত পাখি ডাকা বাগান
অন্তরাত্মায় উন্মেষ বন্ধনধরার ।

মায়ের অথৈ মমতা বাপের প্রতিশ্রুত যত্ন লালন মিলেছিল উজ্জল্য সুখের মুখ
দেখেছিলো সুনীতির দুর্জয় ভরসা ভাইবোন যায় এগিয়ে অবিরাম সাধনায়
এলোমেলো চৈতন্যে তোমায় সমেত মিলবে আনন্দনিকেতন
দূরান্তে বাড়িয়েছিল কদম দুরন্ত ।

পুড়ে রোদে ভিজে ঝড়ে বাবার কাঁধেই চেয়েছিল আগলিয়ে রাখিতে
অকৃত্তিম আদরে চিরনিবিড় সুখ মায়ের আঁচল ছায়া
আশ্রয় মিলেছিল শান্তির আলিঙ্গন  ।

ইয়ত্তা হীন তিলে তিলে বুনেছিল আকাঙ্ক্ষিত সংসারের  প্রবাহ সঞ্চার
প্রানভরে শৈল্পিক জীবন রঙ পারতে তুমি অসীম ভেজাতে
তাদেরই গড়া মোমের আলোর জ্যোৎস্নায় ।

দেখনি আশপাশ তোমার তরে দাঁড়িয়ে ছিল এক পায়ে এ ধারার মেলা
প্রভাতের সূর্যদেব সন্ধ্যায় চন্দ্রের স্নিগ্ধতা ছড়িয়েছিল নবগগনের স্বপ্ন
চাইতে যদি সেবা হিরক মাণিক্য লুপেনিতে পারতে তাহা ।
জমেছিল ঐ দূরের নীলতিথি প্রতীক সুপ্ত চাঁদ চিরন্তন
সবই বসেছিল হরেক রকম আনন্দাশ্রমের হাট
শুধুই তা সোহাগীর আদর যতনে ।

মা বাবার আশীর্বাদে জাফরাণী আর একসাজি হেনায় যদি সাজতে
মানাতো ভালোই একদিন কারো ঘরের ঘরণী হয়ে থাকতে
ভাইবোন সবই আত্মহারা নাড়ীরটানে দিত ভরে আনন্দ  
মহুয়া ঘেরা আতর পরশ আর চন্দনের পালঙ্ক
সুভাশীষ জানাত ঝিলি মিলি চাঁদনী ।

একদার বুনা গল্পকথা আসবে ফাল্গুন ফুটবে পলাশ টগর
খুশীতে দেব তাকে উজাড় করে টিকলি তিলক তাজ
বহিবে উদাত্ত মাতন লগণ ।

জোনাকীরঙে সহন দিলে সকলের মনোপ্রান সবাই ছিল সহায়
গোছাতে তোমার মনের স্বপ্নবাসর বহেছিল উচ্ছ্বাস উল্লাস
মৌমৌ গুঞ্জরনে একাকার চৌদিক ।

আলো আঁধারের অভাব দেয়নি বুঝাতে কোলে পিঠে বয়ে বেড়িয়ে
ছুটেছিল দিগ্বিদিক কতশত দেখিয়েছিল আলোর প্রলেফ
সেই কথা ভুলে পদদলে মাড়িয়ে গেলে তুমি চলে
নিজ মুকুরে বুঝনি সুর্মার সৌরভ ।

বাড়িয়ে দিয়েছ করাতচেরা জ্বালা বিরহ জাগিয়ে দিলে বিষাদের মোড়ক
করি সবে বিমূর্ত হাহাকারের মাতম ।

ছিলে অন্তরের দুলালী দুলিয়ে যুগলবেণী করেছিলে ছুটোছুটি
মনে পড়লে সেই স্মৃতি আজো নয়নে গড়ায় জল
হুহু করে গুমরে কেঁদে উঠে অন্তর আত্মা
হতাশা গ্রাস করে মনের ধবল আকাশ।

ভোলানো দায় মনে পরে যখন শ্রুতি আওড়ানো কথন
তোমার রচন ব্যাথা যেন পথ্যেও কুলোবেনা সারা
জানিনা ছিল কি অপরাধ কি ছিল ভুল ।


শুকিয়ে দিয়েছ অনন্ত পুস্পিত মন কেড়েনিলে সাথে স্বর্গ সুখের আশা
হারিয়েছে স্পন্দন ফুটন্ত নিষুতির দাঁড়িয়েছি ঠাই দূরের তিমিরে
এলোমেলো চৈতন্যে এই মন কাঁদে চিৎকারে
যেন ফিরে পাবো মোদেরই আঙ্গিনায় ।

মালকোষ চিত্রে কথা হয়েছিল অপুরন্ত কর্ণকুহোরে যায়না মুছা বিন্দুবিসর্গ
হাওয়ায় ভাসে স্মৃতিদোলা কথন আজও রয়েছ হয়ে জীবন্ত
যখনই যাব খাবার ঘরে নচেত পড়ার টেবিলে পড়বে মনে
তুলবে স্মৃতি তরঙ্গ তখনই জ্বলে ক্ষয়ে হয় বদন অঙ্গার
ভাবলে এখনও বুক ফেটে কান্না আসে ।

দুঃখে কেঁদে ভাসে বুকের ভেতর হৃৎপিণ্ডে বাড়ে ধুকধুকানি এমনি নিয়তি
কখনো হবে কষ্ট ক্ষত চিহ্ন এই বিরহ আসবে ঘনিয়ে করিনি কামনা
সুখের সাওন নিমিষেই গেল হারিয়ে ।

কিসের দিকভ্রান্তি কী ছিল তা অন্তর তলে লুকানো কেউ বুঝিতে পারিনি  
হেসে মেতে গেলে  মরন পথ হৃদবৃন্ত ছিঁড়ে আজো ঝরে কষ্টক্ষরণ
কান্নাকষ্টে অসান্ত বারিরাশি মূর্ছা যাই বারেবার ।

কাতর কণ্ঠের আহাজারি  কি সুখ সন্ধানে গেলে চলে হায়া মায়া ত্যাগী
ব্যাথা যায়না দেখানো কারো পারিনা কইতে তা লাজে মরি
বেঘোরে বহিয়া চলি কষ্টতরী।

ভাবনা পাড়ায় কড়া নাড়ে দুয়ার মেলিলেই সে স্মৃতি লয়
কেউ হারায় জ্ঞান ক্ষণে ক্ষণ যখনি মনে পড়ে তোমায়
হৃদয় হাহাকারি আজ পায়না গন্তব্য দৌড়গোড়
গেলে কেন পায়ে দলে মাড়িয়ে সুখের পথ ।

গিয়ে মিলেছ যেথায় দেখিবেনা কভু উত্থান সমাধাননের সন্ধান তথায়
জন্মিবেনা  সুহৃদ  রথ  বিরহে খান খান চির সুন্দরের মনন
ভেঙ্গে গেছে হৃদয় পিঞ্জর হারিয়েছে সূর্যালোকের ভরসা
স্থিমিত হয় সম্মুখপানে এগিয়ে যাবার ।

বোবা কান্নায় ভারী হয় আকাশ বাতাস শ্বাস প্রশ্বাস আসে বাঁধা
জ্বলজ্বল করছে আঁখি সামনে যেন তৈরি চিতা ।

হাওয়ায় দোলায় কাশ ফুল চলারপথ হবে দৃষ্টি নন্দন উদ্যান
তোমার আলত পরশ লাজে হারাত উরন্ত মেঘমালা
ক্লান্ত পথিকেরা খুশিতে ভরাত মন।

ধাবমান এক পাখি  ডানা ভেঙ্গে পড়েছ বাজ নামালে সকল হৃদয় আকাশে  
গিয়েছ সরে সবাইকে মাড়িয়ে বেদনায় ভুমিমরু বানালে ধরাতলে
কেন গেলে চলে  অভিমানে কোকিলের থেমেছে কুহু কুহু ডাক
চোহদ্দি মনসরসী হারায় গতি ধারা।

ছিলাম উদ্যোগী দিব বলে উপহার স্বপ্ন বুনেছিলাম চিত্রার্পিত জীবন কুঠির
ঘুরঘুর করেছিলাম মালি হয়ে গৃহস্থের আশপাশ  দিন রজনী
চেয়েছিলাম নিজেরি মতন  স্বপ্নালু বাগান বানাতে ।

দুশ্চিন্তা কাড়ে মনের সতেজতা চাপা ব্যাথায় হৃৎপিণ্ডে চিনচিন শুলায়
ছেঁড়া বুকে শোণিতাক্ত মনে ইচ্ছে হয় সুন্দর ভুবন ধুনা ধুনি
দিশেহারায় খুঁড়ে করি নিজের কবর।

জনম কাটিবে সুখের সমুদ্রে পড়েলোভে বাড়িয়েছ পথ কোন ফাঁদে
পারনি বুঝিতে মায়ার বাদন করেছ ছিন্ন দিয়েছ ডুব
আটক হলে না ফেরানো পাতা জালে ।

বুঝনি ঘুরেছিলে মিছেমি আবেগ লালনে ভেবেছিলে পাবে সখের বাহুডোর
হেঁটেছিলে যে পথ ধরে অবুঝ পাখি হয়ে দিলে উড়াল মনের কি ভুলে  
হবেনা তা এই জনমে নিজের সুখকর সত্যের খাঁচার খুলে দাঁড়িয়েছ  
দেখিতে চেয়েছ মরন দশা অন্য সকলের।

সুখের তন্দ্রায় বানালে দুঃখের বালুচর এমনি কাটাতে হবে পরবর্তী দিনগুলি
কষ্টের চারা জন্মে ভাবনার ভবে কান্নায় দুচোখে হয়ে আসে ঝাপসা
চৌকস হারায় পুর্নিরাত্রীর তারা দেখিনা সম্মুখের কিনারা কূল
খুঁজে মিলাতে চাই তোমার মুখশ্রী
পদযাত্রা হয় ভারী ।

বৈশাখী ঝড় নিল কেড়ে দখিনা মাতাল বাতাস জলোচ্ছাস ঠাই হল দুই চোখে
কণ্ঠেনলে স্বরের স্তব্দতা বাড়ায় দীর্ঘশ্বাস তৃষ্ণার্তের হৃদয়ে
তরঙ্গিনী করল কাহিনী অমর সর্বনাশ ।

প্রতিধ্বনি  পূর্বাভাসবীণ শুনি  রাত পোহালেই নামবে বিভীষিকার কষ্টঝড়
হারিয়ে তলে আনন্দ ভোর ভাবিনি কস্মিন হারাতে হবে তোমায়
ভাইয়ের নিরব দীর্ঘশ্বাস বোনের অস্রু বিসর্জন
বাবার ফেল ফেলিয়ে করুন চেয়ে থাকা
আর মায়ের বুকফাটা বিলাপ
রেখেছ তাহাই করে সম্পদ।

তবু মনের অজান্তেই শান্তনা লই ফের শুনতে পাবো  তোমার আগমনবার্তা  
আসবে সপ্নালু প্রদীপ নিয়ে জপি জল্পনা কল্পনা স্বপ্নময় দুনিয়া দেখার
স্বহস্তে স্বপ্ন সত্যের রাখিবে শিখা শান্তি আলো বিতরণ করার
দূর পালাবে সকলের হৃদয় হাহাকার আহাজারি
আলোকিত করবে বাগানের লুকানো ছায়া ।
(২১/০৯/২০১৫)

-হায়দার ।
প্যারিস,ফ্রান্স।
২৫/০৯/২০১৫

লেখায় ত্রুটি ভ্রম থাকাটা অস্বাভাবিক নয় !
পাঠক পাঠিকার নিকট মার্জনা দৃষ্টিতে দেখার জন্য প্রার্থনা করলাম!এখনো কিছু শব্দ,কিছু বাক্য পরিবর্তন যোগ্য বলে মনে করছি।তা ছাড়া লেখার বিষয়বস্তু একেবারেই জীবন্ত এবং বাস্তব সত্য।ফলে আবেগের ঘনঘটা কিংবা শব্দ ব্যাঞ্জনা দ্বিরুক্ত হচ্ছে।দুঃখিত আমি।