তুষার আবেশ
-চৌধুরি রেজাউল হায়দার
ঘুমিয়ে পড়েছে সৃষ্টির উল্লাস
নিস্তেজ বনেছে প্রাচীত প্রতীচী
নৈঋতে বহে উল্কাছেঁড়া কষ্টপাত
খরস্রোতা হারায় ঊর্মিল তটিনী ।
রয় অশেষ প্রতীক্ষার প্রখর নেশা
হতে হবে সাহসী কান্ডারি বজ্রতরীর
দিয়ে হাঁক নেবে হাল দীঘল খেয়ার।
প্রহরে প্রহর পুষি আশা পোরার স্বপ্ন
সজাগ দৃষ্টি অনাদি অনন্ত কাল
মনোরমা দিগ্বিজয়ী বীরচেতা বেশে
মহিমাময়ী চষিবে অচল ভূতল
সান্ত সৌম্য রবে গ্রহ চন্দ্র রবি।
কোমল মোতি মনস্বিনী
প্রহরী তুমি রাতজাগা পাখি
পূর্ণিঘেরা চাদরে সেজেছ অক্লান্ত।
ধরেছ অবিকল আকুল বৃষ্টিঝরা আনন্দগান
সুস্মিত তন্বী মেলেছ সুখপুলকিত মুক্ত পাখা
পোড়ো রোদ্দুরের তাড়াবে হতাশাগুচ্ছ
দূরে পালাবে দুষ্ট নক্ষত্ররাজী ।
সহজ সতেজ মৃণাল আবরণ
গেথেছ নৈঃশব্দের সপথ মালা
জাগিয়ে মন অপ্রতিরোদ্ধ পাহাড়সম
রামধনুকের চিত্র এঁকে যাবে করে দম্ভোক্তি ।
সকলে তাকি মহুল নয়ন
সূর্যকর করে এনেছ নন্দন কীর্তন
রবে ঠাই সকল হৃদয় চূড়ায়।
একডালী আশাতীত ভাবনা
ঊষাকাল সুন্দরের আরাধনা অর্চনা
সহায়ক হবে ফলাতে সুফল।
নিঃশব্দে বিচরণ কামনাবাগ
চিত্তে একাগ্রতা প্রস্ফুটিত হবার
বিরল ঘাত প্রতিঘাত দিবে ভুলায়ে।
পূর্বাপর ভরাবে খণ্ড খণ্ড সহস্র মন
ভরা রবে পৃথ্বীতল ফাগুন চিত্তে
ছুঁড়িবে বিকশিত শোভা পুষ্পকাঞ্চনে।
যত আসুক জীবনে বাঁধা
ফেল উগরিয়ে গ্লানিরকর আশ্রু ধারা
স্বপ্নমোড়ক তন্দ্রা রুখে যাও
জ্বলে ক্ষয়ে রয় অঙ্গার যাহা
তাম্রতাপিত আত্মায় তাজই তাহা।
তুলে ধর উদাসীর বাঁশি সুর
নাহি পৌঁছুক স্বার্থান্ধ কারো কর্ণকুহোরে
বিছুটি ছায়ায় কভু হইওনা নিথর
চিত্তভরে রেখো আশ্রয় আলোআনন্দ।
বাদলা দিনের মেঘলা আকাশ
ঘনিয়ে যতই আসুক
আঁকতে যেওনা বিরহ আলপনা।
কল্পনার রাজ্যে জন্মাও ধৈর্য চারা
উৎফুল্ল্যতায় বাড়াও সুশান্ত হৃদয় চৌকি
হিতোপদেশ ভাণ্ডারের উঠাও ঢাকনা।
নির্মল মনগহিনে মেল স্বপ্নিল দৃষ্টি
স্বার্থউর্ধ্বে যাক খুলে প্রশান্তির ভাগ্যাকাশ
দাও ভুলিয়ে আহাজারি আর্তি ধারা।
পরশ পরম স্নিগ্ধতা ছোঁয়া
স্থির লালনে মুখরিত ঐ পুর্নিমা
তথা হতে আনবে কেড়ে স্বপ্ন সাহস
মনোরমা রেখো জাগ্রত নিরেট বাসনা
দক্ষিনা বাতায়ন বিকোবে শান্তির সুবাস।
ডরে ভয়ে যেওনা ক্ষয়ে
দেখো চেয়ে সোনা হয় খাঁটি
যখন পুড়বে তা আগুনে ।
অথৈ দরিয়া দিতে হবে পারি
দুই বেণীতে নাচিয়ে করবে সমীকরণ
হবে যে নিবৃত্ত দূরান্তে পৌঁছুতে।
মর্তলীলায় দেখিতে পাবে তোমায়
সারল্য লালনে পৌঁচেছ সহর্ষে ত্রিবেণীতে
অকুতোভয়ে কাটিয়ে যাবে সঙ্কুল বিপদে
কহিবে প্রত্যেকজনা অনন্য তোমাকে।
সোঁদাসোঁদা সেঁজুতির সোঁতা আভা
উহ্য হবে সুখ বিলাস
ছুঁড়লাম মসৃণ তুষার আবেশ
তোমায় দিলাম সৃজনী আশীর্বাদ ।
(১১/০৯/২০১৫)
-হায়দার ।
প্যারিস,ফ্রান্স।
১৬/০৯/২০১৫
বি দ্রঃ *লেখাটা আয়েশা আল-যুবরাকে তার জন্মদিনে উৎসর্গ করা হল।
এবং লেখাটা “এক যাযাবর পায় নয়া ঠিকানা” এর ষষ্ঠ পর্ব
** লেখাটায় আরো কিছু সংশোধনী রয়েছে!