সুশ্রোণি বাংলা

-চৌধুরী রেজাউল হায়দার

বাংলা আদিগন্ত উষ্ণ-আদ্রতায় এক ষড় ঋতুর ফল
সুজলা সুফলায় ভরিয়ে তুলিতে রয়েছে অবিচল,
যেথায় আঁচল বিছিয়ে থাকিছে আকাশের ঘননীল
সৃষ্টির শুরু থেকে অনাবিল সুখময়তায় অপরূপ সুশীল।

চিরহরিৎ,চির সবুজ নিবিড় শান্ত রয়েছে এই জমীন
সুর্য কিরণে মাছরাঙ্গার জলছায়া,বনদোয়েলের কূজন  
কাকাতুয়ার নেচে বেড়ানো কিংবা ময়ূরের পেখমমেলা
নতুবা সজারুর কাঁটা ছড়ানো ছিটানোর শব্দ বাহারে
যেন তারে নমি নিলাচল ধমিন।

প্রতিকুল উষ্ণ শীতল পরিবেশেও তৃষ্ণিত বেদনায়  
তরু লতারাজি নাড়িয়ে বেনীতে জড়ায়ে মালতীর বল্লরী
যেন হাসিতে বনদেবীরা আনায়ন করে শান্তির অন্বেষণ।

চৌরঙ্গীর জলে,সবুজ সমারোহে
পত্র বীথিকায় মধূগুঞ্জন আর পানকৌরির হাঁক ডাকে  
বাংলা যেন সাজিয়ে দাঁড়ায় নন্দন কানন

প্রশান্তির সুর তুলে শরৎ কিংবা হেমন্তের মন মাতানো মৌ মৌ গন্ধরা
অনাহুত হতাশা বিষন্নতা ত্যাগিয়ে বৃষ্টিঝরা বেলায়
নিষ্পাপী সূর্য কিরণটাই বার্তা বহে উৎসাহ আলোড়নে
সম্মুখ পানে এগিয়ে জাবার,মনকে ভুলিয়ে রাখে দূরে সরিয়ে
প্রক্রিতির বিচিত্র কর্মে ভরা আঁকা বাকা মেঠো পথেরা,
যদিও নয়নে ক্লান্তি ভরা থাকে হাজারে হাজার।

গেওয়া,কেওড়া,গড়ানের ছানিতে দেয় আরামদায়ক বসতি
সবুজ সমারোহ অভিরাম বাংলাকে শোভায় এক রূপসী,
শাঁওতাল,মারমা,তরঙ্গরা চলে বহিয়ে হাজারো স্বপ্ন বুনি
বাঁধভাঙ্গা দুঃখ প্লাবনেও উজারে রহে নকশী কাঁথার নকশা ধুনি।
এই যেন সৃষ্টি কর্তার ইশারায়
দাঁড়িয়ে হাজির হলে সুশ্রোণি বাংলা হয়ে।
২৩-১২-২০০৯



-হায়দার
প্যারিস,ফ্রান্স
০৫-০৬-২০১০