অসহায় তানপুরাটি
চৌধুরী রেজাউল হায়দার

অরুণোদয়ের অগ্নিশিখায় কোমলমতি মনে
শিশির সিক্ত চুম্বনে এক সুখানুভূতি জাগে,
খরার তৃষ্ণায় বক্ষেতে চৌচির রয় ফাটল
হৃদে কাম্য বসন্তের  স্থায়িত্ব হোক আমরণ।

হৃদয়ের চৌদিক খেলে যায় স্ফূর্তি আত্মহারায়
মিললো বুঝি এক তন্বীতনু অপরূপা দৈব দয়ায়,
নীড়ে ফেরার বেলা বাঁধন হারা কতেক পাখি
আড় চোখে মুগ্ধতায় ছোঁড়ে আদর মাখা দৃষ্টি।

গোধূলি লীলায়িত ক্ষণে ক্ষণে সায়মনে ব্যাকুলা
ঈশারায় ঈশারা বাড়িয়ে দেয় আবেগময়ী ললনা,
কথায় কথায় সকাল বিকাল কথার ফুলঝুড়ি
স্বপ্নময়ী ছবি আঁকায় ভালবাসার রস-গল্প বলি।

ভাবনার পাড়া আঁখি বাড়ায় এক আগ্রহ অধীর
মিলন চায় পেতে শুধু কামনারই পাহাড়ী শরীর,
মুহুর্তে রজনীগন্ধার স্নিগ্ধ শোভন নন্দন নড়িচড়ি
তৃপ্ততা আসে প্রাণে রাত্রিযাবে করে আলাপচারী ।

চলার পথে করি অপেক্ষা জীবনে বুঝতে সুখোমর্ম
ছিলনা প্রস্তুতিটা একরত্তিও; মিলবে যাতনা দূর্বিসহ,  
ছায়াবৎ জীবনে শুধু হয় লালন প্রত্যাশাদের প্রাপ্তি
ফুলেরা নিরালায় করে স্তব, পাখিরা গায় যে স্থুতি।

মেঘে মেঘে ভেসে গেছে মন মাতানো খেলার ভেলা
চোখের পলকে পুরায় নির্দয়ী সুন্দরী এক প্রিয়তমা,
বাহারি বন্যফুলে বুঝামিলা নয় ভার কিসুবা তাররচা
সময়ে মিলায় মুলতঃ সে মরূদ্ধ্যানের পরগাছা চারা।

বিরহের অন্তর তলে জ্বলে লোভনীয় সবল পেছন
মায়ার স্তরে স্তরে ছিল প্রেয়সীর বহুল উর্বর রূপন,
যুগ-যুগান্তর রয়েছি প্রবাসী তারই হৃদাঙ্গিনায়  
হারিয়ে কাটিয়ে গেলো কতটা সময় ছন্নছাড়া।

সুন্দর কাঠামো গড়ার তরে সম্মুখে খুঁজে হরেক ছবক
ছলনায় রেখে ললনা লুপেনিল একাই সুখের স্তবক,
হারানো স্মৃতিরা কেবল ডাকে দিয়ে হাতছানি
উঠায়না সুর ধূলোয় মলিন তারগুলিও কেবলি
রয় অসহায় তানপুরাটি।
০৮-০৬-২০০৮

-হায়দার
প্যারিস,ফ্রাঞ্চ
০১-০৫-২০১০