তোমাকে বার বার মিথ্যে লিখি ভালো আছি।
তোমাকে ছাড়া ভালো কতটুকু থাকায় যায়?
ভালো থাকার অভিনয়ে আমি বড় ক্লান্ত।
বুকের ভেতর যে কালো বেড়াল তুমি অতটুকু রেখে গিয়ে ছিলে।
ও, একটু একটু করে অনেক বড় হয়েছে।
তোমাকে বেশ বুঝতে শিখেছে।
জানো? বেড়ালটা না ইদানীং
খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে একেবারে।
সারা দিন "মিও মিও মিও "তোমাকে খোঁজে।
তুমি বেড়ালের বুকের লোম গুলো নেড়ে আদর করতে।
জানিনা কি এক অজ্ঞাতনামা রোগে ঝরে যাচ্ছে,
আজকাল বেড়ালটা দেখি ঝিমোয় ।
কাঁদতে পারেনা, নিজে নিজের বুক গুতোয়।
জানিনা বুকে এমন কি যন্ত্রণা ওর।
বোধয় আর বেশী আয়ুকাল নেই।
ইচ্ছে হয় তো শেষ দেখা, দেখে যেও।
আমি জানি তোমার অনেক ব্যস্ততা, অনেক কাজ।
তোমার প্রিয় বেড়ালকে মনে করতে একটু সময় পাওনা।
তার জন্য কোন মায়া নেই তোমার?
স্বামী, সংসার,ছাড়া সব ভুলে থাকতে পারো,
জীবনের পেছনের লাইন গুলো তোমার মনে নেই আর।
আমি কী করে ভুলে থাকতে পারি সাদা বেড়ালটাকে, বলো?
সে বার বর্ষায় ডুবতে ডুবতে তলিয়ে গেলো,
আর তো জেগে উঠেনি।
এখনও দিঘীর জলে যখন পূবালী হাওয়ায় ঢেউ,
মনে হয় এই বুঝি লাফিয়ে আমার গলা জড়িয়ে ধরলো।
কিন্তু সবই আঁধারহীন চোখের দৃষ্টিভ্রম।
জানি না সাদা বেড়াল আমাকে ভাবে কিনা স্বর্গে বসে?
আমি কিন্তু ভাবি, ভালোবাসার ভীষম অভাব -অনাটনের সংসারে। তুমি আমি সংসারটা খুব তুমি অভাবী।
মিথ্যে স্বপ্ন আর মিথ্যে আশা।
অন্ধকার ওর চোখ দুটো এখনও জ্বল জ্বল দেখি।
জোছনার আলোতে কেমন বিদ্যুৎ খেলে শরীরে।
কেন আমি সাদা বেড়ালটাকে ভুলতে পারিনা বলো তো?
তোমার মতো।তুমি যে ভাবে কালো বিড়ালটা ভুলে থাকো।
আচ্ছা।যদি তোমার কালো বেড়াল মরে গেলে,
কষ্ট পাবে?তুমি কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে যাবে আমার মতো?
আচ্ছা। কালো বেড়ালটা যদি মরে যায়।
সাদা বেড়ালের কাছে যাবে?
ওদের সাথে দেখা হবে?
আমার না সারা দিন ভাবনা হয়।
কালো বেড়াল মরে যাক,ভালোই হবে।
আমার সাদা বেড়াল মরে গেলো,
তোমার কালো বেড়াল বাঁচিয়ে রেখে কি লাভ?
তার পরও তোমার মায়ায় কালো বেড়ালকে ডাক্তার কাছে নিয়ে গিয়ে ছিলাম।সে তো যাবেই না।
তোমার জন্য বাঁচিয়ে রাখতে টেনে-ছেঁচড়ে নিতে হয়েছে ওকে।
ওর শরীরের দুর্দশা দেখে ডাক্তার বাবু আমাকে ছাড় দেয়নি।
প্যাথলজি রিপোর্ট দেখে বললো, "হাতে সময় নেই বেশী।"
ডাক্তার বাবুকে বল্লাম, ঈশ্বরকে বল্লাম,
"এ বসন্ত টুকু বাঁচিয়ে রেখো।"
কিন্তু কেউ আমার কথা শুনেনি।
যদি পারবো কালো বেড়ালের শেষ ইচ্ছে, দেখা দিও।
দেখে যেও, ভালো থেকো।