কিশোর বেলায় দেখব বলে গিয়েছি সুন্দরবন
সঙ্গে ছিল আমার বয়সী আমার বন্ধু ক'জন
চারিদিকে সবুজ শ্যামল গাছগাছালি ভরা
গা ছুঁয়েছে আলতো করে প্রেম-পিয়াসি ওরা
মাঝেমধ্যে ডাকছে ওরা হালুম হালুম করে
চঞ্চল মনে বাঘগুলোর ডাক শুনেছি মন ভরে
কিশোর ছিলাম ছিল না ভয় একটুও মনের মাঝে
দুরন্তপনায় মন ছুটে ওই বাঘগুলোর কাছে
মিষ্টি সুরে নানান পাখি আপন মনে ডাকে
বানরগুলো লাফায় যেন ডালের ফাঁকে ফাঁকে
আঃ কি সুন্দর চিতাহরিণ লাফ দিয়ে যায় ছুটে
রূপবতী চিতাহরিণ মনটা নিল লুটে
বনের ভেতর এঁকে-বেঁকে আছে সাতটি জেলা
দেশ দু'টিকে জড়িয়ে রয় এ-বদ্বীপের খেলা
জলের ধারা বয়ে চলে বনের ভেতর ভেতর
নৌকায় ওঠে ঘুরি যখন শরীর কাঁপে থরথর
এই বুঝি নেয় কুমির এসে টেনে ছিঁড়ে আমায়
দেখাই সাহস ভেতর ভিতু ভয় চড়েছে মাথায়
শুশুক যখন লাফ দিয়েছে জলের স্রোতধারায়
মন ছুঁয়েছে নাও দুলেছে সুখের পাগলপারায়
বনের ভেতর ঢুকে বাউয়াল মধু খোঁজে যখন
মধুর আশায় আমরা ছুটি বাউয়ালের পিছ তখন
এখন শুনি আগের মতো নেইকো আর সুন্দরবন
রূপ হারিয়ে বাড়ছে বনে বসতবাড়ি লোকজন
কাটছে গাছ সুন্দরীর কমছে সবুজ শাড়ি
শেওলার বাড়ি করছে ভরাট নাকি দুষ্টচারী।