মা নেই বাড়িতে কাজে গেছে শহরে।
কি করে তোমার মা?
জানিনা বাবু ক্লান্ত শরীরে ফেরে মধ্যরাতে।
আপনি আসেন সুবেহ্ ছাদিকে দেখা হবে মায়ের সাথে।
করো কি তুমি?
লেখাপড়া করি বাবু পাশের গাঁয়েতে।
মা ফিরল মধ্যরাতে আমার ঘরে এলো,
কপালে চুমু কেটে নলকূপে গেল।
সকালবেলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে আমার মা,
হতাশাগ্রস্ত হয়ে আমি জিজ্ঞাস করলাম কি হয়েছে তোমার মা?
বলল তুই থাকিস বাড়িতে,
আমি থাকি কাজের জন্য শহরে,
এটাই ভাবছি খোকারে।
প্রশ্ন করলাম মাকে করো কি তুমি শহরে?
অস্বস্তিতে বিব্রত কন্ঠে বলল লেখাপড়ায় মন দে।
মা আমার আব্বা কোথায়?
বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে বলল তিনি অনেক দূরে।
বাবু এলো মায়ের কাছে সকালে,
বলল আমার মাকে তোমার কুকর্ম ছড়িয়ে গেছে গ্রামে।
মায়ের মুখে চেয়ে দেখি জল টলমল চোখে
বাবুর সাথে কথা বলছে মাথা নিচু করে।
বললো বাবু সালিশি সভা থেকে প্রস্তাব
গ্রাম ছাড়তে হবে তোমাকে।
আমার বয়স ছিল ৮
বুঝিনি তখন মায়ের কর্ম,
প্রশ্ন করা না পাওয়া উত্তর,
বাবুদের মুখে কুকর্মের সন্ধান।
এখন আমি মধ্যবয়সি নব যুবক,
কুকর্মে লিপ্ত থাকা মায়ের সন্তান।
সভ্য সমাজের চোখে আমি বর্বর,
পিতৃহীন মায়ের হীরের টুকরো।
এখন আমি মানে এবং অন্য মানে জেনেছি,
এই সমাজের বুকে একা মহিলা বাচ্চা মানুষ করার
যে অসহায়তা,দারিদ্রতা,অর্থমূল্য কতটা
তা আমার মত পিতৃহীন ছেলে জানবে বুঝবে।
আজ আমি কুকর্মে লিপ্ত থাকা মায়ের
সমাধিস্থলে দাঁড়িয়ে দোয়া করি,
এই সভ্য সমাজের অর্থবান,বিত্তবান
মানুষের ভাবনা চিন্তা বাড়িয়ে উদারতা দিন।
তাহলে সভ্য সমাজে অর্থ মূল্যায়নে
অসহায় নারী কেউ পিতৃবিয়োগ-কেউ স্বামী বিয়োগ
তারা অন্তত সভ্য সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচবে।
সুদীর্ঘ ১৫ বছর মাতৃবিয়োগ
এখন আমি সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
এই সভ্য সমাজের পথ শিশুদের ভাই ও বন্ধু,
বৃদ্ধাশ্রম গুলির মায়েদের ছেলে।
******** ********