আমাকে চিনিস্ না পাগলী? নাকি না চেনার ভান!
আমি তোর মেয়েবেলার না বলা কথা;--লজ্জায়,
আমি তোর রাতজাগা বাতায়নে পিছলে পড়া জোছনা,
আমি তোর শীতের রাতে কবোষ্ণ সুখ রক্ত-মজ্জায়।
আমাকে চিনিস্ না পাগলী? নাকি না চেনার ভান!
আমি তোর লুকিয়ে লেখা প্রেমের প্রথম চিরকুট,
আমি তোর অভিসারের পথে প্রথম কদম ফুল,
আমি তোর ওষ্ঠ ছুঁয়ে শিউরে ওঠা স্বপ্নেতে দলছুট।
আমাকে চিনিস্ না পাগলী? নাকি না চেনার ভান!
আমি তোর লাল রেশমের ওড়না;-- মেখে দেহের ঘ্রান,
আমি তোর আলুথালু কেশে লুকিয়ে থাকা অমানিশা,
আমি তোর আচমকা গেয়ে ওঠা রবি ঠাকুরের গান।
আমাকে চিনিস্ না পাগলী? নাকি না চেনার ভান!
আমি তোর কলেজপথে মনোহারি দোকানে চোখটানা সীতাহার,
আমি তোর বটের নীচে হালুইকরের রঙিন খুশীর জিলিপি,
আমি তোর অমোঘ টান;--উচ্ছলিত অবুঝ যৌবন তোলপাড় ।
আমাকে চিনিস্ না পাগলী? নাকি না চেনার ভান!
আমি তোর বোধের শিকড় মরুর দেশে মাটির গভীরে,
আমি তোর বাঁধভাঙা চকমকি উচ্ছ্বাসের ঢেউ,
আমি তোর ডাগর চোখের চোরা চাউনি প্রেমিকের বুক চিরে।
আমাকে চিনিস্ না পাগলী? নাকি না চেনার ভান!
সব গাছে সেদিন ফুটেছিল ফুল অদৃশ্য আবডালে
আমিও ফুটেছিলাম তোর উৎসুক ডালে;--কচি পাতার আড়ালে
বুঝিস্নি পাগলী, একগুচ্ছ বিষাক্ত হুল বাতাসে ভাসে--তোর চারপাশে
কলেজ ফিরতি পথে রচিত ছিল শয্যা;-- তোকে বিঁধবে ইটভাটায় ,
আমি শেষ অসহায় নোনা স্রোত চিবুক বেয়ে তোর;-- অশেষ ঘৃণা-যন্ত্রণায় ।
আমাকে সত্যিই চেনার-বোঝার সময় পেলি না রে তুই, পাগলী...
আমি তোর নিথর শরীরে লেপ্টে থাকা দলিত রক্তগোলাপ
কাঁচা রক্তের ঘ্রানে বিপ্লব হবো কোনোদিন; নয়তো অভিশাপ......