অনন্ত নক্ষত্র- তারপর মৃত্যু, স্থিরতা-
ফসলের কোলে মাথা রেখে ঘুমায়েছে রাত; ঢের ব্যাকুলতা
ঢেলে দিলে তুমি এইটুকু গেলাসে! তবু এক চাঁদ জাগে,
আরেকটি ঘুমায়-নক্ষত্রবিমুখ হয়ে-তুমি হে নারী; এক দুর্বিষহ প্লেগে
ভুগিতেছে কতগুলো কীট-আলো মুছে দিয়াছ বিধায়-তোমারে ঘিরে
এখন; বাদামের গাছে বাদুরের ডানা কত শতকের কলঙ্ক ছড়াতেছে অন্ধকারে
থেকে থেকে শুধু; কাদের উঠানে হেমন্তের লেজ
আনিয়াছে জীবনের শেষ ট্রেন, শেষ সতেজ
মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা; প্রবল মদ
গিলে ব্যথিত সময়; তবু- এতটুকু সুখ তুমি রেখেছিলে বুঝি কোকোনদ-
নবজাত ধানের গন্ধে, মাঠের 'পরে জমা গোধূলীর স্বাধীন পালকে
আর; সেই সুখ ধরে তাই চলে যেতে হয় কোনো দূর দেশে এখন- যেইখানে লোকে
যেতে পারে নাই, পথ পাবে না বুঝি সেইখানে আগাবার- তুমি নীরব
রয়ে গেছ বলে তাদের ভ্রান্ত মনে; তবুও সব
মন মনে হয় তোমারে চেয়েছিল একবার সমস্ত সময়ের থেকে-
সমস্ত পৃথিবীর থেকে; শুধু তোমারে ডেকে ডেকে
কূল থেকে কূলে নিঃস্ব হয়ে গেছে
তারা- নিঃস্ব হয়ে গেছে!
শিশিরের গন্ধ আসিতেছে এখন; ছায়াপথ থেকে ছুঁড়ে ফেলে
আমায় ঘুমাতেছ তুমি নির্মল চাঁদ- চারিদিকে ব্যাপক আঁধার জ্বেলে;
তবু তুমি একবার শীতের সাথে রেখেছিলে হাত আমার হাতে-
এমনই এক নিস্তব্ধ রাতে:
ক্লান্ত করিয়াছ- ক্লান্ত খুব পৌষের সূর্যের ধরন;
তুমি কেমন- পৃথিবীর থেকে দূরে যেন আরেক অন্য মন!
তবু- একদিন এসেছিলে তুমি-
বিমূঢ় মৃত্যুর বুকের উপর ধূসর আলোর ঘ্রাণ
নিয়ে; তোমারে ভালোবেসে আমি:
নৃলোকের সমস্ত নিরীহ পথের 'পরে উজ্জ্বল পুরাণ-
রেখার মতো হাঁটিতেছি শুধু-
কেবল তোমারে ভালোবেসে-হে নারী-হে ঘুমন্ত বিধু।