জহরা, আজ অনেক কিছু লিখতে বসেছি-
দোষ, গুণ, পরিমাণ তোমার- আমার শিরা
উপশিরায়, সমস্ত শরীরে।
এতদিন পরে
তুমি এইখানে এখনও বেঁচে আছো কি করে!
প্রকৃতিকে মেনে তুমি পাথরের বুকে
ফুল হয়ে ফুটলে না;
তবুও তুমি বারবার এখানে ফিরে আসো কেন?
আমি ভাবি, ভাবতে গিয়ে
কূলহারা হয়ে
অতল গভীরে ডুবে যাই!
তোমার হৃদয়ের কাছাকাছি কোনোদিন যেতে চাইনি আসলে;
তবুও কেমন এক ছলে
তোমার হৃদয়ের পাড়ে চলে
গিয়ে আমি অমৃত খুঁজেছি,
ছেঁড়া আকাশের নিচে তার নীল রক্তের স্রোতে ভেসে গিয়ে
মাঠে-ঘাটে-পথের বাঁকে
রেখেছিলাম তোমার জন্য ভালোবাসা, সময়, লুকিয়ে থাকা;
এইসব তুমি নিশ্চয়ই বুঝেছিলে;
বল: এই ধাবমান পৃথিবীর অন্তরালে
তুমি কি আমাকে এক মুহূর্তও ভালোবাসো নি?
অন্যমনে কখনোই জাগেনি আমার বিম্ব
তোমার মস্তিষ্কে?
আমি অনেক গল্পে পড়েছি
প্রেমিকের ভাঙা বুক, শুনেছি
প্রেমিকার দুখের সুখ;
এমন পঙক্তি লিখিনি আমি আমাদের গানে।
ধীরে ধীরে জাগন্ত সবুজ বনে
তবুও চকিতে লেগে গেছে আগুন!
এই দৃশ্য আমি কখনও ভাবতে পারিনি;
জহরা, তুমি কখনও আমায় ভালোবাসো নি কেন?
এত নির্দয় ছিলে কেন?
আজ অনেক কথা লিখবো বলে
বসেও আমি আর ভাবতে পারছিনা।
আমি আর তোমাকে ভালোবাসি না
জহরা; তবুও- আমি কি এখনও তোমাকে ভালোবাসি?
দেয়ালের নির্মম বিদ্রুপ গলে
জানা অজানা জানলার গ্রিলে গ্রিলে
চোখ রেখে গেছি অনেক-
যদি তুমি উঁকি দাও ভেবে;
অসংলগ্ন, যুক্তিহীন, অসহ্য কলরবে
আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম তবু
হায়া সোফিয়ার মত- তুমি হেঁটে যাবে বলে।
আসোনি কখনও, তবু অন্য কোথায় গিয়েছ চলে
আমার অন্তরালে,
অথবা বহু আগে থেকে ডুবে আছো কোনো সমুদ্র জলে!
আমি বুঝতে পারিনি বলে
ভালোবেসেছি তোমায়;
তবুও
তপ্ত মরুতে তোমার কখনও আমাকে বৃষ্টির ফোঁটার মত মনে হয়নি?
প্রথমদিকে তবে তোমার উচ্চ আকাশে উড়তে চাইনি আসলে;
কি এক ছলে পড়ে উড়তে গিয়ে
হৃদয়ঙ্গম করি একজোড়া কাল্পনিক ডানার শব্দ
মরীচিকা পথের রহস্য ভেদ করে উৎপাত করে শুধু;
পিছু হটে গিয়ে
তারপর-
এতদিন গেল চলে; কিন্তু
জহরা, এখনও কি আমি ভালোবাসি তোমাকে?