বিয়েবাড়ি,হাসি-ঠাট্টা কোলাহলে রমরমা,
ভিড় ঠেলে এগোচ্ছি
অনুসন্ধানী চোখ পরিচিত মানুষ খুঁজছে
এক বাল্যবন্ধুর দেখা পেয়ে স্বস্তি পেলাম,
কেমন আছিস বল ?
অপ্রয়োজনীয় কথার ভিড়ে তলিয়ে গেলাম।
এক সময় আমার হাতে চিমটি কেটে বলল
তোর পিছনে ডানদিকে দেখ,
ঘুরে দেখি,
সুমিতা স্বামীর সাথে দাঁড়িয়ে,
আমায় দেখেনি
চল্লিশ বছর বয়সেও বুক ঢিপ-ঢিপ হতে পারে
ধারণা ছিল না !
সাক্ষাৎ সুন্দরী,
বিবাহিত রমণীর শ্রেষ্ঠ নমুনা
রক্তাভ ঠোঁটে সুখের প্রলেপ,
সেই সুখ তার চোখে দেখলাম না।
সুমিতার স্বামী মস্ত নেতা
সিন্ডিকেট সামলায়,
তোষামুদেদের ভিড়ে আবিষ্ট
রাজনৈতিক আলোচনা;
চারিদিকে শব্দনদী বইছে
চুরি,কঙ্কন-বালার ঝন্ ঝন্
সাউন্ড সিস্টেমে মৃদু গান ভেসে আসছে-
"পুরোনো সেই দিনের কথা
ভুলবি কিরে হায়....."
গানটি আমায় পুরো বেসামাল করে দিল।
সন্তর্পনে সুমিতার কাছে গিয়ে
মিতা,
কেমন আছো ?
সুমিতা চমকে উঠল,
ফ্যাকাসে দৃষ্টিতে, ভাবলেশহীন চোখাচুখি
ভালো আছি।
নিজের হৃদস্পন্দনের শব্দ নিজেই শুনতে পাওয়া যায়,
আগে অনুভব করেছি কয়েকবার,
আজ আবার করলাম।
কিছুক্ষন বাদে বুঝলাম আমি একা দাঁড়িয়ে
ওরা চলে গেছে।
সারা বিয়েবাড়ি খুঁজে বাইরে ছুটে এলাম
সালোকসংশ্লেষ করার জন্য পাতা যেমন আলো খোঁজে।
ফ্যাল ফ্যাল করে আমায় দেখতে দেখতে
সুমিতা গাড়িতে উঠে গেল।
বুকে শূন্যতা
ফুসফুসে কেউ পা'চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমার মনে সেই গানের চরণগুলি গুনগুন করে উঠলো..
"আয় আরেকটি বার আয়রে সখা
প্রানের মাঝে আয়
মোরা,সুখের দুঃখের কথা কব
প্রাণ জুড়াবে তায়".....
কতক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলাম জানিনা।